ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বন্ধের আশঙ্কা আমদানি-রফতানি

হরতাল-অবরোধে বেনাপোল বন্দরে পণ্য জট

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ৩১ জানুয়ারি ২০১৫

হরতাল-অবরোধে বেনাপোল বন্দরে  পণ্য জট

স্টাফ রিপোর্টার, বেনাপোল ॥ ২০ দলীয় জোটের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধের কারণে পণ্য জটের কবলে পড়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল। এতে বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ আমদানি পণ্য খালাস (ডেলিভারি) কম হওয়ায় প্রতিদিন বন্দরের গুদামগুলোতে পণ্য রাখার স্থান সঙ্কুলান কমে আসছে। ফলে পেট্রাপোল থেকে বেনাপোলে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক ঢোকানো বন্ধ রাখতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে রাজস্ব আদায়ে চলমান বিরূপ প্রভাব আরও তীব্র হতেও পারে। এই বিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকে রক্ষার উপায় হিসাবে দ্রুত পণ্য খালাসের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য আরও জোরদার পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন বলে অভিজ্ঞমহল মনে করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল স্থলবন্দরে মোট পণ্য রাখার ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার মেঃ টন। কিন্তু বন্দরের শেড বা ইয়ার্ডগুলোতে বর্তমানে পণ্য রয়েছে প্রায় ৫৫ হাজার মেঃ টন। এছাড়া বন্দর সংলগ্ন এলাকায় দাঁড়িয়ে আছে আরও কয়েকশ’ ভারতীয় কার্গো ট্রাক। যে সব ট্রাকে রয়েছে প্রায় কয়েক হাজার মেঃ টন পণ্য। বন্দর কর্মকর্তারা বলছেন গুদাম থেকে পণ্য ডেলিভারি না হওয়ার কারণে মালামাল আনলোড করা সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতে ব্যবসায়ীরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে পণ্য ডেলিভারি তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। বেনাপোল বন্দরের দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা গেছে, এই বন্দর থেকে প্রতিদিন ৫ শতাধিক ট্রাক পণ্য খালাস হয়। কিন্তু হরতাল আর অবরোধের কারণে খালাস হচ্ছে মাত্র ১ থেকে দেড়শ ট্রাক পণ্য। আর এ কারণেই বন্দরে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ পণ্যজট। বেনাপোল কাস্টমস কার্গো শাখা সূত্রে জানা গেছে, হরতাল আর অবরোধের মধ্যেও ভারত থেকে পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ অব্যাহত আছে। অবরোধের ফলে ভারত থেকে পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ বন্ধ হয়নি। তবে বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি কম হওয়ার কারণে পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ অনেক কমে গেছে। এক হিসাবে দেখা গেছে হরতাল আর অবরোধের কারণে প্রতিদিন যেখানে ৩শ’ থেকে ৪শ’ ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করত বর্তমানে তা এসে দাঁড়িয়েছে ১ থেকে দেড়শ ট্রাকে। এর একমাত্র কারণ বন্দরে পণ্য রাখার জায়গা ক্রমাগত কমে যাচ্ছে। তবে যে সকল পণ্য ডেলিভারি হচ্ছে তার নিরাপত্তা বেনাপোল থেকে যশোর পর্যন্ত পুরোপুরি দিচ্ছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। এই নিরাপত্তা আরও জোরদার করার দাবি রয়েছে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে। পণ্য খালাসের এই বিরূপ অবস্থার মধ্যেও কাস্টমস এর হয়রানি বন্ধ হয়নি। এমনও জানা যায় অতিরিক্ত টাকা আদায়ের জন্য মাসাধিক কাল ধরেও আমদানি পণ্যের চালান আটকে রাখা হচ্ছে এবং এ ব্যাপারে কমিশনার মাহাবুবুজ্জামানের কাছে অভিযোগ জানালেও কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন। বন্দর ব্যবহারকারীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে পণ্য খালাসের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ গ্রহণ করার। এ জন্যে রাস্তায় পণ্যবাহী যানের আরও নিরাপত্তা প্রয়োজন। পশাপাশি কাস্টমসের হয়রানি বন্ধ করাও দরকার। এ ব্যপারে ব্যবসায়ীরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
×