ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টেবিলে নয়, রাজপথেই সঙ্কটের সমাধান ॥ তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৮ জানুয়ারি ২০১৫

টেবিলে নয়, রাজপথেই সঙ্কটের সমাধান ॥ তথ্যমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দেশে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধান টেবিলে নয়, রাজপথেই এর সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, যাঁরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের কথা বলেন তাঁরা আগে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনা করেন। তাঁকে সন্ত্রাসী কর্মকা-, জঙ্গীবাদ ও জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করতে বলেন। আগে মানুষ বাঁচান, দেশ বাঁচান। তারপর সরকারের কাছে আসেন। তিনি বলেন, বেগম জিয়া নাশকতা, অশান্তি ও সন্ত্রাসের রানী। উনি রাজনীতির শনি। তিনি যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামীর মিত্র। ওনার ভাষায় দোস্ত। উনি রাজনীতির মহাজঞ্জাল। বেগম জিয়া নিজেই নিজেকে মাইনাস করেছেন। গণতন্ত্রের ক্লাবের বাইরে চলে গেছেন। আমরা বলছি, নাশকতা ত্যাগ করে গণতন্ত্রের ক্লাবে প্রবেশ করেন। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের আয়োজনে সচিবালয়ের গণমাধ্যম মিলনায়তনে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ইনু বলেন, ‘চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির অবসানে আগে নাশকতা দমন করি, তারপর সংলাপের কথা ভাবা হবে। আগে দেশের মানুষ ও দেশকে বাঁচাতে হবে। নাশকতা দমনে যত কঠোর হওয়া দরকার তাই হবে আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী বাহিনী। সংলাপে সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তিনি খালেদা জিয়াকে সন্ত্রাসের রানী, নাশকতার রানী, বাংলাদেশের রাজনীতির শনি হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, হুকুমের আসামি হিসেবে খালেদার স্থান হবে কারাগারে। তাহলে কি রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধের কারণে সৃষ্ট চলমান সঙ্কট নিরসনে কোন সমাধান হবে না? এ প্রশ্নে হাসানুল হক ইনু বলেন, দেশে নাশকতা, সন্ত্রাসের কারণে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে তা নিরসনে টেবিলে বসে সমাধান আসবে না। এ সঙ্কটের সমাধান হবে রাজপথে। সংলাপ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার জনগণের জানমাল রক্ষা করছে। যারা নাশকতা করছে, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হচ্ছে। এর জন্য যত কঠোর হওয়ার দরকার ততই কঠোর হবে সরকার। যারা এই নাশকতার সঙ্গে যুক্ত তাদের আসামি করা হচ্ছে। আগে আসামি দমন করি তারপর সংলাপ। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর থেকে দেশের পরিস্থিতি শান্ত ছিল। তারেক রহমান লন্ডন থেকে ফতোয়া জারি করার পর থেকে দেশে জ্বালাও, পোড়াও হত্যা কর্মকা- শুরু হলো। বেগম জিয়াও এতে সমর্থন দিলেন। তারা এমন গুজব ছড়ালেন ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে দেশে সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়ল। মিলাদুন্নবী, এজতেমা, জেএসসি পরীক্ষা, সরস্বতী পুজো, সরকারী ছুটির দিন কোন কিছুই তারা তোয়াক্কা না করে আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মেরে চলেছে। বেগম জিয়া এত অস্বস্তিতে কেন? নিজে প্রশ্নে করে আবার নিজেই জবাবে বলেন, এই অস্বস্তির কারণ যুদ্ধারপাধীর বিচার থেকে তিনি সাকা-নিজামীদের রক্ষা করতে পারছেন না। অল্পদিনের মধ্যে তাদের বিচার শেষ হয়ে যাবে। তার ছেলের মামলা, এতিমদের টাকা চুরির মামলা শেষ পর্যায়ে। এছাড়া ১০ ট্রাক অস্ত্রের মামলা, বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলা মামলার তদন্ত প্রায় চূড়ান্ত। এতে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসবে মনে করে তিনি এত অস্বস্তিতে থেকে একের পর এক মানুষ পুড়িয়ে মারছেন। তিনি বলেন, বেগম জিয়া কী চান এ কথাটাও তিনি পরিষ্কার করে বলতে পারেন না। আগে তিনি নির্বাচন কমিশনের সংস্কার চেয়েছিলেন। কিন্তু কি সংস্কার চান তা তিনি বলতে পারেন না। বিগত ছয় বছরেও তিনি এ সংক্রান্ত সুর্নিদিষ্ট কোন প্রস্তাব দিতে পারেননি। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করেছিলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন সম্ভব নয়। তবে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলের অংশগ্রহণের সর্বদলীয় একটি সরকার গঠন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে বেগম জিয়া কোন কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব চান তাও দিতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তাতেও তিনি খুশি হতে পারেননি। বর্তমানে তাঁর পাঁচ দফা তলিয়ে গেছে। আসলে বিচার মানি তাল গাছটা আমারÑ এ অবস্থা বেগম জিয়ার। ৯৬ সালে নির্বাচনে হারার পর বেগম জিয়া বলেন, কারচুপি হয়েছে। ২০০৮ এর নির্বাচনের পরও তিনি একই কথা বলেন। প্রতিটি নির্বাচনে নাকি সেনা বাহিনী কারচুপি করেছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য তিনি রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় ইয়াজউদ্দিনকে প্রধান উপদেষ্টা করেছিলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া কী একবারের জন্য সমাধান চান, না কি স্থায়ী সমাধান চান? যদি একবারের জন্য সমাধান চান তা হলে ২০২৪ সালে নির্বাচনের সময় আবারও কী সংঘাত আশা করেন তিনি? বেগম জিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, অস্বাভাবিক কোন প্রস্তাব দিতে পারেন না। এসব জ্বালাও পোড়াও বন্ধ করলে তিনি মিটিং-মিছিল করার অধিকার পাবেন। কিন্তু নাশকতার দায়ে হুকুমের আসামি হওয়া থেকে রেহাই পাবেন না। বর্তমান সরকার সামরিক শাসক এরশাদকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করছে, তা কোন যুক্তিতে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচারের এ প্রশ্নটি অনেক পুরনো। তিনি সন্ত্রাস ও যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে তার অবস্থান পরিষ্কার করার পরই আমাদের সঙ্গে তার ঐক্য হয়েছে। তিনি আমাদের সাময়িক মিত্র।’ এ সময় এরশাদের জেল খাটার প্রসঙ্গ তুলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তিনি ৫ বছর জেল খেটেছেন, খালেদা জিয়াও না হয় ৫ বছর জেল খেটে আসুক। নাশকতা ওু সন্ত্রাসকে ডেঙ্গুর সঙ্গে তুলনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দিনক্ষণ নির্ধারণ করে সন্ত্রাস, নাশকতা দমন করা সম্ভব না। এগুলো ডেঙ্গুর মতো। তবে এ থেকে আমরা বের হয়ে আসব। এর ব্যবস্থা রয়েছে। ৭ দিনের মধ্যে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, মন্ত্রীদের এ মন্তব্য সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমেরিকা-লন্ডনের মতো স্থানেও সময় লাগে। মাত্র অল্প কয়েকটি জেলায় নাশকতা চলছে। নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্যারিসের চেয়ে আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভাল। সেখানে একটি পত্রিকা অফিসে ঢুকে গুলি করে মানুষ খুন করা হয়েছে। আর আমাদের দেশে চলছে চোরাগোপ্তা হামলা। খালেদা জিয়াকে ‘নাশকতার রানী’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া হুকুমের আসামি হিসেবে দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারবেন না। তার জায়গা হবে কারাগারে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, অগণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে গণতান্ত্রিক শক্তির সংলাপ হয় না। জঙ্গীবাদের সঙ্গে সমঝোতা বা আপোসের কোন সুযোগ নেই। এটা গণতন্ত্র বনাম সাম্প্রদায়িতকা ও জঙ্গীবাদের সমস্যা। এই মুহূর্তে নাশকতা-অন্তর্ঘাত বন্ধ করা প্রয়োজন। ড. কামাল হোসেনসহ যারা সরকারকে সংলাপের জন্য বলছেন, তাদের উদ্দেশে বলব, আগে খালেদা জিয়াকে নাশকতা-অন্তর্ঘাত বন্ধ করতে বলুন। আগে দেশটাকে বাঁচান, মানুষ বাঁচান। যারা সরকারের দিকে আঙ্গুল তুলছেন, তাদের বলব, আগে খালেদা জিয়াকে বলুন, জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ করতে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া ঘোষণা দিয়েছেন অবরোধ চালিয়ে যাবেন। কিন্তু অস্থিরতা কেন? আমরা জানি, তার কোথাও তাগাদা আছে। কারণ, তার মিত্র যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, সাকার মামলার রায় যে কোন দিন ফাঁসি আদেশ হবে, তার ছেলের বিচারও হবে। দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তার মিত্রদের ফাঁসি হবে। এতিমদের অর্থ আত্মসাতের জন্য তার বিরুদ্ধেও রায় হতে পারে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারও চূড়ান্ত পর্যায়ে। যে কারণে তার অস্থিরতা। সংলাপ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালের আগে বেশ কয়েকবার আলোচনার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি বর্জন করেছেন। খালেদা জিয়ার আন্দোলনে জনগণের এজেন্ডা নেই। তার পারিবারিক ও ব্যক্তিগত এজেন্ডা রয়েছে। গণতন্ত্র দৃঢ় করার জন্য নয়, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য খালেদা জিয়া অবস্থান নিয়েছেন মন্তব্য করে ইনু বলেন, আজ পর্যন্ত তিনি কোন সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেননি। নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী করার কথা বলেছেন, কিন্তু কোন ফর্মুলা দেননি। স্থায়ী সমাধান চান না-কি এক বছরের জন্য সমাধান চান- প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, আমরা ৯০ সালে স্থায়ী সমাধান করতে পারিনি। যার ফলে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হচ্ছে। অনলাইন সংবাদ মাধ্যমকে তাৎক্ষণিক তথ্য প্রবাহের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম উল্লেখ করে এতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানালেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জন্য নীতিমালা ও আইন থাকলেও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের জন্য এখনও কোন কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তাই অনলাইনে কিভাবে সংবাদ প্রকাশ করে তা মনিটরিং করতে পারছি না। এ সময় অনলাইন গণমাধ্যমগুলোর কাজ তদারকির জন্য একটি কমিটি গঠনের বিষয় বিবেচনা করে দেখার কথা জানান তথ্যমন্ত্রী। সচিবালয় বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সচিবালয় রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) আয়োজনে সংগঠনের কার্যালয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, গণতন্ত্র ও গণমাধ্যম মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। গণতন্ত্রে সমস্যা থাকলে গণমাধ্যমেও থাকে। গণতন্ত্র যেমন বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যায় গণমাধ্যম একই পন্থায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এগিয়ে যায়। প্রচলিত আইনকে ‘মান্ধাতার আমল’ উল্লেখ করে অবাধ তথ্য প্রবাহের জন্য আইন হালনাগাদ করা হচ্ছে বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার জন্য সম্প্রচার কমিশন ও আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে তা চূড়ান্ত করা হবে। তিনি বলেন, সরকার গণমাধ্যমে হস্তক্ষেপ নীতি গ্রহণ করেনি। এই নীতি গ্রহণ করলে সরকার এত বেসরকারী মিডিয়ার অনুমোদন দিত না। সরকারের ত্রুটি বিচ্যুতি, সম্পাদকীয় প্রকাশের জন্য মিডিয়ার সঙ্গে বাকবিত-া হয়নি। বিরুদ্ধ মতের কারণে কোন মিডিয়া বন্ধ হয়নি। দু’একটি টিভি সাময়িক বন্ধ হয়েছে। একটি পত্রিকার প্রেসে নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা ছাপাচ্ছে না। অন্য প্রেসে তারা ছাপাতে পারে। তারা অনলাইন প্রকাশনা চালিয়ে যাচ্ছে। এটা গণমাধ্যমে হস্তক্ষেপ নয়। সাংবাদিক হত্যা মামলা ও নির্যাতন মামলাগুলোর ধীরগতি দুঃখজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলো আমার এখতিয়ারভুক্ত নয়। বিচার ব্যবস্থা ও তদন্তকারী সংস্থার বিষয়। যা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত। এ ব্যাপারে অগ্রগতি না হওয়ার দায় সাংবাদিক নেতাদের ওপর চাপিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তাদের কাছে আমি মামলাগুলোর ফলোআপ চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা এগুলো আমাকে এখনও দেননি। হুমায়ুন কবীর বালু হত্যা মামলা প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আমি খুলনায় গিয়েছিলাম। সেখানে অনেকে ফুল দিলেন, অনেক কথা বললেন কিন্তু বালু হত্যা মামলা প্রসঙ্গে কোন কথা বললেন না। বিএসআরএফ সভাপতি শ্যামল সরকারের সভাপতিত্বে সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা তছির আহমেদ প্রমুখ।
×