ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

তিস্তা ব্যারাজের কার্যক্রম অর্ধেকে নেমে এসেছে

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ২৭ জানুয়ারি ২০১৫

তিস্তা ব্যারাজের কার্যক্রম অর্ধেকে নেমে এসেছে

তাহমিন হক ববি, তিস্তা ব্যারাজ থেকে ॥ তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি থমকে রয়েছে। এ অবস্থায় স্বল্প পানির প্রবাহের উপর ভর করে চলতি রবি ও খরিপ-১ মৌসুমে তিস্তা ব্যারাজের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। তবে এবার সেচ প্রদানে রংপুর ও দিনাজপুর জেলার কমান্ড এলাকাকে সেচ সুবিধা থেকে বাদ রেখে সেচ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী সেচ নির্ভর বোরো আবাদে পানি দিতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। ফলে সেচের জন্য তিস্তা ব্যারাজের কমান্ড এলাকার কৃষকরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। গত কয়েকদিন আগেও নদীর পানি প্রবাহ প্রায় আড়াই হাজার কিউসেক থাকলেও তা সোমবার মাত্র ৯শ’ কিউসেকে নেমে এসেছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে, সম্ভাবনা জাগিয়েও বারবার থেমে থাকছে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি। চুক্তি না থাকায় বিগত সময়ের ন্যায় এবারো চলতি মৌসুমে নদীর পানি হ্রাস পেয়ে চলেছে। ফলে তিস্তা নদী ধুধু বালুচরে পরিণত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন গত বছর এই মৌসুমে নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার ৬৫ হাজার হেক্টরে সেচ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু এবার তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ দিন দিন কমতে থাকায় গত বছরের চেয়ে এবারের চলতি রবি ও খরিপ-১ মৌসুমে সেচ প্রদানে জমির পরিমাণ ৩৭ হাজার ৫শ’ হেক্টর কমিয়ে আনা হয়েছে। এতে দিনাজপুর ও রংপুরের কমান্ড এলাকা সেচ কার্যক্রম থেকে বাদ দিয়ে শুধু নীলফামারী জেলার ডিমলা, জলঢাকা, নীলফামারী সদর ও কিশোরীগঞ্জ উপজেলার ২৮ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত ২১ জানুয়ারি থেকে তিস্তা সেচ ক্যানেলে পানি সরবরাহ শুরু করা হয়। কিন্তু চাহিদা মতো এসব এলাকার কৃষকরা পানি পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন। এই সমস্যার পাশাপাশি আবার দিনাজপুর, রংপুর কমান্ড এলাকার সেচ সুবিধাভোগী কৃষকরা সেচের জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। ফলে দোটায় পড়ে সংশ্লিষ্ট সেচ প্রদানে বাধ্য হয়ে রেশনিং পদ্ধতি চালু করেছে। তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী জনকণ্ঠকে জানান, চলতি রবি ও খরিপ-১ মৌসুমে তিস্তা ব্যারাজ থেকে গত ২১ জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেচ প্রদান শুরু করা হয়। কিন্তু উজানের প্রবাহ দিন দিন কমে আসায় তিস্তা নদীর পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে তিস্তা ব্যারাজের কমান্ড এলাকায় সম্পুরক সেচ কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। বর্তমানে তিস্তার পানি প্রবাহ বিষয়ে সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে তিস্তা নদীতে পানির প্রবাহ প্রায় আড়াই হাজার কিউসেক থাকলেও সোমবার তা কমে ৯শ’ কিউসেকে এসে দাঁড়ালেও উজানের পানি প্রবাহ কমছেই। বর্তমানে সে পরিমাণ পানি পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হবে কিনা তাও অনিশ্চিয়তায় মধ্যে রয়েছে। বোরো আবাদে কমান্ড এলাকায় কৃষকদের সেচ চাহিদা বেড়েছে। এ অবস্থায় রেশনিং পদ্ধতিতে কৃষকদের সেচ দিতে হচ্ছে। তাও চাহিদা অনুযায়ী সম্ভব হচ্ছে না।
×