ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র উৎসব ‘ছবিমেলা’ শুরু আজ

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ২৩ জানুয়ারি ২০১৫

আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র উৎসব ‘ছবিমেলা’ শুরু আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেড় দশক আগের কথা। ১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করেছিল আলোকচিত্রের আন্তর্জাতিক আসর ছবি মেলা। বর্তমানে এটি পরিণত হয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম আলোকচিত্র উৎসবে। আজ শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে আলোকচিত্রের এই মহোৎসব। মেলার এবারের বিষয় অন্তরঙ্গ বা ইন্টিমেসি। এ বিষয়ের ওপর ২২ দেশের ৩০ আলোকচিত্রীর নির্বাচিত ছবি প্রদর্শিত হবে রাজধানীর ১১টি গ্যালারিতে। এছাড়া রিক্সা-ভ্যানে করে ঢাকার আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়াবে ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনী। এবারের ছবি মেলায় আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন বাংলাদেশের বিখ্যাত আলোকচিত্রী আনোয়ার হোসেন। বরাবরের মতো দৃক পিকচার লাইব্রেরী ও আলোকচিত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাঠশালার আয়োজনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে অষ্টম আয়োজনটি। আজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে দুই সপ্তাহব্যাপী এ দ্বিবার্ষিক মেলার উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত থাকবেনÑ সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, লেন্স ব্লগেগ-এর সহ-সম্পাদক এবং নিউইয়র্ক টাইমসের জ্যেষ্ঠ আলোকচিত্রী জেমস এস্ট্রিন ও জিও ম্যাগাজিনের পরিচালক রুথ এইকর্ন। ছবি মেলার বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে বৃহস্পতিবার ধানম-ির দৃক গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হয় সংবাদ সম্মেলন। আয়োজকরা জানান, ছবি মেলা চলাকালীন ১০টির মতো গুরুত্বপূর্ণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেনÑ মেলার উৎসব পরিচালক শহিদুল আলম, কিউরেটর এএসএম রেজাউর রহমান, মুনেম ওয়াসিফ, তানজিম ওয়াহাব, অতিথি কিউরেটর সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং স্প্যানিশ আলোকচিত্রী ক্রিস্টিনা নুনেজ, মার্কিন আলোকচিত্রী কেভিন বুব্রিস্কি প্রমুখ। উৎসব পরিচালক শহিদুল আলম বলেন, ছবি মেলার অষ্টম আয়োজনটি বাংলাদেশের শিল্পকে নতুন স্তরে নিয়ে যাচ্ছে। এবারের কাজগুলোর মান ও বিস্তৃতি সত্যিই অসাধারণ। এর ভিন্নতা এবং ব্যাপ্তিও চমকপ্রদ। কিউরেটরদের কাজের ধারায় এটা একটি নতুন মোড় এবং দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কাজগুলো নতুন মাত্রা সৃষ্টি করবে। তিনি আরও বলেন, আলোকচিত্রকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে আসা এ উৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই উৎসব শুধু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আলোকচিত্রীদের অসাধারণ কাজ উপভোগের উপলক্ষ নয়; আলোকচিত্রসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ও উৎসবে গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপিত হবে। এছাড়াও থাকবে আলোকচিত্রবিষয়ক সেমিনার ও কর্মশালা। ছবি মেলার এবারের কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছেÑ ৩৩টি প্রদর্শনী, ১২টি কর্মশালা, দুই দিনব্যাপী পোর্টফোলিও রিভিউ এবং বেশকিছু আর্টিস্ট টক, লেকচার ও প্রেজেন্টেশন। মোটামুটি গোটা শহরেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ উৎসব। ছবি মেলার ভেন্যু হিসেবে থাকছেÑ দৃক গ্যালারি, পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, আলিয়ঁস ফ্রসেজ, চারুকলার বকুলতলা, বিউটি বোর্ডিং, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি, বৃত্ত আর্টস ট্রাস্ট, ডেইলি স্টার বেঙ্গল আর্টস প্রিসঙ্কট ও নর্থব্রুক হল। এছাড়াও ঢাকা শহরের প্রধান সড়কে থাকবে ভ্রাম্যমাণ আয়োজন। ১০টি রিকশাভ্যানে করে বিশেষ ব্যবস্থায় এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। দুই সপ্তাহের আয়োজনটি শেষ হবে ৫ ফেব্রুয়ারি। ছবি মেলায় বাংলাদেশসহ মোট ২২টি দেশ যোগ দিচ্ছে। এসব দেশের মধ্যে রয়েছেÑ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, ইউক্রেন, স্পেন, সিঙ্গাপুর, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, ইতালি, ইরান, তুরস্ক, নাইজিরিয়া, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, মিসর, এস্তোনিয়া ও গুয়াতেমালা। অষ্টম ছবি মেলার অন্যতম আকর্ষণ বিশ্ববিখ্যাত আলোকচিত্রীদের উপস্থিতি। আয়োজকরা জানান, এবার মেলায় যোগ দিচ্ছেন ম্যাগনাম ফটোগ্রাফার ল্যারি টাওয়েল, নিউইয়র্ক টাইমস লেন্স ব্লগের সম্পাদক জেমস এস্ট্রিন, বাংলাদেশের বিখ্যাত আলোকচিত্রী আনোয়ার হোসেন, ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো পুরস্কার বিজয়ী ডেনিস ডাইলাক্স এবং স্প্যানিশ আলোকচিত্রী ক্রিস্টিনা নুনেজ। মেলা চলাকালীন বরেণ্য আলোকচিত্রীরা নিজ নিজ কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন। আর্টিস্ট টক, পোর্টফোলিও রিভিউ পর্বে অংশ নেবেন তাঁরা। এছাড়াও বিভিন্ন কর্মশালার সঞ্চালনা করবেন। ছবি মেলার এবারের প্রদর্শনীর কিউরেটর হিসেবে কাজ করছেন মুনেম ওয়াসিফ, এএসএম রেজাউর রহমান ও তানজিম ওয়াহাব। অতিথি কিউরেটর হিসেবে আছেন শিল্পী সালাহউদ্দিন আহমেদ ও মাহবুবুর রহমান। কাল থেকে আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব ‘ফ্রেমে ফ্রেমে আগামী স্বপ্ন’ সেøাগানে কাল শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব বাংলাদেশ । চিলড্রেনস ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশ আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী উৎসবটি একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে। শিশুদের নিবেদিত এ উৎসবের অষ্টম আয়োজনে ১০টি ভেন্যুতে প্রদর্শিত হবে ৪৬টি দেশের দুই শতাধিক শিশুতোষ চলচ্চিত্র। শনিবার বিকেল ৪টায় সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে অথর্মন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এবারের উৎসব উদ্বোধন করবেন। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বৃহস্পতিবার সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেনÑ উৎসবের উপদেষ্টা চেয়ারম্যান চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার, উৎসব পরিচালক রায়ীদ মোরশেদ প্রমুখ। এবারও উৎসবের অন্যতম আকর্ষণীয় বিভাগ হিসেবে থাকছে বাংলাদেশী শিশুদের নির্মিত প্রতিযোগিতা বিভাগটি। এই বিভাগে এবার ৮০টি চলচ্চিত্র জমা পড়েছিল, যার মধ্যে নির্বাচিত ৩০টি ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে। এই ৩০টি ছবির মধ্যে পাঁচটি ছবিকে পুরস্কার দেয়া হবে। পুরস্কারের জন্য গঠিত পাঁচ সদস্যের জুরি বোর্ডের সবাই শিশু-কিশোর অর্থাৎ ছোটরাই বাছাই করবে শিশুদের নির্মিত শ্রেষ্ঠ ছবিগুলো। উৎসবের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হবে ৩০ জানুয়ারি বিকেল ৫টায় জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতা বিভাগে অংশ নেয়া চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে পুরস্কারপ্রাপ্তদের পুরস্কার দেয়া হবে।
×