ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শৈত্যপ্রবাহ মাঝারিতে রূপ নিয়েছে

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ২১ জানুয়ারি ২০১৫

শৈত্যপ্রবাহ মাঝারিতে রূপ নিয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে মঙ্গলবার। এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রাজশাহীতে রেকর্ড হয় ৬.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এর মধ্য দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। শীতজনিত কারণে মানুষের কষ্টের মাত্রা ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। মঙ্গলবারও মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। এ নিয়ে চলতি মৌসুমে শীতজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা ৭৭ জনে দাঁড়াল। মঙ্গলবার দিনের অধিকাংশ সময় সারাদেশে বিরাজ করে ঘন কুয়াশা, অনুভূত হয় তীব্র শীত। বয়ে যায় ঠাণ্ডা বাতাস। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা হয় ব্যাহত। রাজধানীতে ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা কমাতে পারেনি সূর্যের আলো। আজ সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে দিনের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, উপ-মহাদেশীয় উচ্চ চাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে । আজ বুধবার আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। সীতাকুন্ডু, টাঙ্গাইল, কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলসহ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে জানান, সকাল থেকে কুয়াশাচ্ছন্ন রাজশাহীর আকাশে বেলা ১১টার পর থেকে ঝলমলে রোদের দেখা মিললেও বেড়েছে শীতের তীব্রতা। মঙ্গলবার রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস বলছে, এটিই দেশজুড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী থেকে জানান, শীতের কামড়ে জীবনযাত্রা হারিয়ে ফেলেছে ছন্দ। নীলফামারীসহ উত্তরের আট জেলার জনজীবন, ক্ষেত খামার ও প্রাণীকুলে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে জানান, হাড় কাঁপানো তীব্র শীতে কাঁপছে রংপুর। মঙ্গলবারও সূর্যের দেখা মেলেনি রংপুরের প্রকৃতিতে। ঘন কুয়াশার চাদরেই ঢাকা পড়ে আছে পুরো এলাকা। মঙ্গলবার থেকে নতুন করে যুক্ত হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। জবুথবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ আর পশুপাখি। প্রতিদিন সন্ধ্যার পরপরই কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে প্রকৃতি। থাকছে পরের দিন সকাল ৯টা ১০টা পর্যন্ত। নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা থেকে জানান, গাইবান্ধায় শীতের তীব্রতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বত্র কনকনে ঠা-া বাতাস আর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো ঘন কুয়াশায় জন জীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। সারাদিন সূর্যের আলো দেখা যায়নি। স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর থেকে জানান, উত্তর জনপদ দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলায় তীব্র শীতে জন জীবন বিপর্যস্ত। জরুরী ভিত্তিতে সরকারী-বেসরকারীভাবে শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ১৩টি উপজেলার হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ। স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে জানান, কুড়িগ্রামে তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত তিনদিন থেকে সূর্যের আলোর দেখা মিলছে না। ঘন কুয়াশার আস্তরণে ঢাকা পড়েছে পুরো এলাকা। সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। হাড় কাঁপুনে শীতে শিশুদের অবস্থা জবুথবু হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে শীতজনিত রোগে মিতু (দেড় বছর) নামে মারা গেছে এক শিশু। নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও থেকে জানান, উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে আবারও শুরু হয়েছে মৃদু শৈতপ্রবাহ। এতে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মঙ্গলাবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ঝিরঝিরে বৃষ্টির ন্যায় কুয়াশা ঝড়েছে। ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত ৩ দিন থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে রাতে ঘরের টিনের চালে বৃষ্টির শব্দে কুয়াশা ঝড়ছে। ঘন কুয়াশার ফলে দিনের বেলাতেও রাস্তায় যানবাহন চলাচল করছে হেড লাইট জ্বালিয়ে। নিজস্ব সংবাদদাতা, মাগুরা থেকে জানান, মাগুরায় প্রচ- শীতে তিন শতাধিক শিশু ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৭০ শিশুকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত তিন দিনে এই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। এদের বয়স ১ মাস থেকে ৫ বছর। স্টাফ রিপোর্টার, ঈশ্বরদী থেকে জানান, গত চারদিনের কনকনে শীত ও শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়ে ঈশ্বরদী, লালপুর, আটঘরিয়া, চাটমহর, ভাঙ্গুরা, ভেড়ামারাসহ আশপাশের এলাকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিস ৭ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে।
×