ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপির স্বার্থান্বেষী রাজনীতির কবলে শিক্ষা ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ০৩:১৫, ২১ জানুয়ারি ২০১৫

বিএনপির স্বার্থান্বেষী রাজনীতির কবলে শিক্ষা ব্যবস্থা

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ বিএনপি-জামায়াতের স্বার্থান্বেষী রাজনীতির কবলে পড়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়েছে। বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীরা যেতে পারছে না শিক্ষাঙ্গনে। নির্বিঘেœ চলাচলেও রয়েছে পেট্রোল বোমার আতঙ্ক। অনিয়মের মাধ্যমে ক্ষমতার রাজনীতি করতে গিয়ে বিএনপি-জামায়াত আসন্ন এসএসসি পরীক্ষা বন্ধের পাঁয়তারা করছে। পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য ডিগ্রী পরীক্ষাও পেছাতে বাধ্য করেছে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা রাহাজানির রাজনীতির কবলে পড়ায় শিক্ষার্থীরা চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছে ভবিষ্যত নিয়ে। গত ৫ জানুয়ারি ছিল মহাজোট সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথমবর্ষ পূর্তি। সে দিন থেকে শুরু হয়েছে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অপচেষ্টা। মূলত খালেদা জিয়া নিজেই গুলশান কার্যালয়ে গিয়ে পরিস্থিতি বেসামাল করে দিয়েছেন বলে সাধারণ মানুষের ধারণা। কারণ, মহাজোট সরকারের দ্বিতীয় দফার প্রথম বছরে শিক্ষাঙ্গনে ছিল সুশৃঙ্খল পরিবেশ। পাঠদানে ছিল শিক্ষকদের কর্তব্যপরায়ন সময়। শিক্ষার্থীরাও স্বাভাবিকভাবে শিক্ষা পদ্ধতি গ্রহণে ও নিজেদের ভবিষ্যত গড়ায় ব্যস্ত থাকলেও এক বছর পার না হতেই চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে শিক্ষা সময় বিনষ্ট করতে বাধ্য হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনে নেমে আসছে চরম অন্ধকার। ২০১৩ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডাররা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর দীর্ঘ প্রায় এক বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করলেও গত ৫ জানুয়ারি থেকে আবারও শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে কাটাতে হচ্ছে শিক্ষা জীবন। বছরের শুরুতেই এ ধরনের পরিস্থিতি অভিভাবকরা কাম্য মনে না করলেও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ২০ দলীয় জোট দেশের পরিস্থিতি বেসামাল করে দিয়েছে বলে দাবি করছেন। এমনকি আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে দেশব্যাপী মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা। এদিকে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষাও থমকে গেছে সন্ত্রাসী কর্মকা-ের কারণে। জ্বালাও পোড়াওয়ের কোপানলে পড়ে জানুয়ারি থেকে ডিগ্রী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তাও থমকে গেছে দফায় দফায় হরতাল অবরোধসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের কারণে। আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহে এ পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দেশব্যাপী বর্তমান অরাজক পরিস্থিতির কারণে তাও পিছিয়ে যাওয়ার উপক্রম। এদিকে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সম্প্রতি সম্মান প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। সে অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা তাদের স্ব স্ব কলেজে ভর্তি হওয়ার যোগাযোগ পর্যন্ত করতে পারছে না। গত ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিতব্য ডিগ্রী পরীক্ষা ২০১৪ সালেও অনুষ্ঠিত হতে পারেনি একমাত্র বিএনপি জামায়াতের অপরাজনীতির কারণে। ২০১৩ সালের শেষের দিকে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারেনি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের অসাংবিধানিক দাবি ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ইস্যু নিয়ে রাজনীতির মাঠ চাঙ্গা করার অপতৎপরতায়। একইভাবে ২০১৪ সালের শেষের দিকে এসে আবারও অরাজনৈতিক চর্চা করতে গিয়ে দেশের শিক্ষাঙ্গণে শিক্ষার পরিবেশ ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। ফলে বিঘিœত হয়েছে পরীক্ষা গ্রহণ কার্যক্রম। দেশের সকল কলেজ পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তুতি নিলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। আশাবাদী এসব শিক্ষার্থীরা ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নেয়ার শেষ পর্যায়ে আবারও বিএনপি-জামায়াতের পেট্রোল বোমা বিস্ফোরণ রাজনীতি শুরু করেছে। এ রাজনীতির শিকার হয়ে ফেনী পাইলট স্কুলের দুই শিক্ষার্থী চোখ হারিয়েছে। গত রবিবার ইডেন কলেজের তিন ছাত্রী বোমায় দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। দেশব্যাপী পেট্রোল বোমার ঝলসানো আগুনে শুধু শিক্ষার্থী নয় পেশাজীবীরাও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। রেহাই পাচ্ছে না শিশু থেকে বয়োবৃদ্ধ পর্যন্ত।
×