ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চৌদ্দ দল নেতাকর্মীরা সরব ॥ রাজপথ হরতালবিরোধী মিছিলে উত্তাল

নাশকতা মোকাবেলায় সিরাজগঞ্জবাসী এককাট্টা

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ১৯ জানুয়ারি ২০১৫

নাশকতা মোকাবেলায় সিরাজগঞ্জবাসী এককাট্টা

বাবু ইসলাম, সিরাজগঞ্জ ॥ সিরাজগঞ্জে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতাল-অবরোধের কোন প্রভাব পড়েনি। বিএনপি অফিসের সামনে পাঁচটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ছাড়া হরতাল-অবরোধ সমর্থকদের কোন নেতাকর্মীকে মাঠে দেখা যায়নি। সকাল দশটায় সিরাজগঞ্জ-কাজীপুর আঞ্চলিক সড়কের রহমতগঞ্জ কাঠেরপুলে যানজট দেখা গেছে। দূরপাল্লার যানবাহন ছাড়া আঞ্চলিক সকল রুটে ট্রাক-বাস চলাচল করেছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ সড়কের সিরাজগঞ্জ-হাটিকুমরুল এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছিল। এদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা হরতালবিরোধী মিছিল করেছে। বিএনপি-জামায়াত জোটের হরতাল-অবরোধের নামে দেশব্যাপী সন্ত্রাস, নাশকতা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকা- প্রতিরোধে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় সিরাজগঞ্জে আওয়ামী লীগ এখন অনেক সংগঠিত ও শক্তিশালী। রাজপথে তাদের সরব উপস্থিতি তারই প্রমাণ। রাজনৈতিক কর্মসূচীর নামে রাজপথে যে কোন নাশকতা মোকাবেলায় দলীয় নেতাকর্মীরা একযোগে মাঠে থাকছে। শুধু জেলা সদর নয়, কাজীপুর, বেলকুচি, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর ও তাড়াশসহ দলের ১২ সাংগঠনিক থানার নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। রবিবার সকালে সিরাজগঞ্জ সদর আসনের এমপি অধ্যাপক ডাঃ হাবিবে মিলাত মুন্নার নেতত্বে শহরজুড়ে হরতাল-অবরোধ বিরোধী ম্যারাথন মিছিল হয়েছে। মিছিলকারীরা শহরের ইলিয়ট ব্রিজ থেকে চৌরাস্তা হয়ে বাহিরগোলা, শহীদগঞ্জ, রহমতগঞ্জ কাঠেরপুল, সমাজকল্যান মোড়, কাজীপুর সড়কের মোড় হয়ে বাজার স্টেশন পর্যন্ত মিছিল এবং স্থানে স্থানে পথসভা করেছে। জেলায় ১৪ দলীয় জোটও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। যে কারণে ১৫ দিনের হরতাল-অবরোধে বিচ্ছিন্ন দু’একটি ঘটনা ছাড়া বড় কোন ঘটনা ঘটেনি। যেমনটি ঘটেছিল ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন পর্যন্ত। সে সময় সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চ-িদাসগাতি, বেলকুচি ও উল্লাপাড়ায় মোট সাতজন নিহত হয়েছিল। বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল আন্দোলনকারীরা। নিত্যদিন হামলা-ভাংচুরের ঘটনায় সাধারণ মানুষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও হামলার শিকার হয়েছিল। এদিকে কর্মসূচী ঘোষণা করে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা মাঠে না থাকায় দুর্বৃত্তায়ন শুরু“হয়েছে। বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা, গাড়িতে ঢিল ছোড়া, গুপ্ত হামলাসহ নানা নাশকতায় মানুষ বিরোধী দলের কর্মসূচীর প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করছে। শান্তিপ্রিয় মানুষের শান্তি বিনষ্টের জন্য জনগণ বিরোধীদল বিএনপি- জামায়াতের আন্দোলন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে। বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা, গাড়িতে ঢিল ছোড়া, ট্রাক পোড়ানো, গুপ্ত হামলা কোন রাজনৈতিক কর্মসূচীর আওতায় পড়ে না বলে মনে করছে সাধারণ মানুষ। ইতোমধ্যেই জনগণের সহায়তায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নাশকতা চালানোর সময় বিএনপি-জামায়াতের তিন কর্মীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। গত ১৪ দিনে পুলিশ জেলার বিভিন্নস্থান থেকে দেশী-বিদেশী অস্ত্রসহ বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের শতাধিক কর্মীকে গ্রেফতার করেছে বলে পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে জানা গেছে। রবিবার বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ সড়কের কোনাগাঁতী থেকে পাঁচটি পেট্রোলবোমা উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ। পুলিশ জানায়, মহাসড়ক ও সংযোগ সড়কে চলাচলরত গাড়িতে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপের জন্য স্থানীয় শিবিরকর্মীরা প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে কাউকে আটক করা যায়নি।
×