ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কাল মন্ত্রিসভায় উঠছে আইসিটি আইন

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৮ জানুয়ারি ২০১৫

কাল মন্ত্রিসভায় উঠছে আইসিটি আইন

তপন বিশ্বাস ॥ রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার বিধান রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) আইন সংশোধন করতে যাচ্ছে সরকার। আইনটির ৪, ১০ ও ২০ ধারার সংশোধন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে কোন ব্যক্তি বা সংগঠন দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের নিষিদ্ধ করা যাবে। নিষিদ্ধ ব্যক্তি বা সংগঠন নামে-বেনামে কোন কার্যক্রম চালাতে পারবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আইসিটি আইনের সংশোধনীর খসড়া চূড়ান্ত করে মন্ত্রিসভায় উত্থাপনের জন্য আইন মন্ত্রণালয় ইতোপূর্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে। আগামীকাল সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এটি উত্থাপন হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর আগামী সংসদ অধিবেশনে এটি উত্থাপিত হতে পারে। সূত্র জানায়, বিদ্যমান আইনে আইসিটি এ্যাক্ট অনুযায়ী জামায়াত বা কোন রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার কোন বিধান নেই। শুধুমাত্র দলটিকে দোষী সাব্যস্থ করার বিধান রয়েছে। সে ক্ষেত্রে যে কোন প্রকার শাস্তির বিধান রয়েছে। এই বিধানের অবশ্য অনেকে অনেক রকমের ব্যাখ্যা করেন। কেউ কেউ বলেন, যে কোন প্রকার শাস্তির মধ্যে দলকে নিষিদ্ধ করাও পড়ে। খসড়ায় শাস্তির বিধানটি স্পষ্ট করা হয়েছে। এতে কোন ব্যক্তি বা সংগঠন দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের নিষিদ্ধ করার বিধান রাখা হয়েছে। এমনকি দোষী সাব্যস্থ হওয়া ব্যক্তি বা সংগঠন নামে-বেনামে কোন প্রকার কার্যক্রম চালাতে পারবে না। অনেকে বলছেন, এই আইনে দোষী সাব্যস্ত হলে ব্যক্তি বা সংগঠনের সহায়সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াফত করা প্রয়োজন। আদালতের রায়ের পরও রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। খোদ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ইতোপূর্বে বলেছেন, আইসিটি এ্যাক্ট অনুযায়ী এটি বাতিল করার কোন বিধান নেই। আবার অন্যরা বলছেন, সংশোধনের পর এই আইনেই জামায়তকে নিষিদ্ধ করার সুযোগ রয়েছে। এ নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্যের পর এর সমাধান খুঁজতে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আইনটি সংশোধনের খসড়া ইতোপূর্বে চূড়ান্ত করে আইন মন্ত্রণালয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে। আদালতের রায়ের পর জামায়াতকে বাতিল করা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জনকণ্ঠকে বলেছিলেন, আইসিটি এ্যাক্ট অনুযায়ী কোন রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার সুযোগ নেই। ২০১২ সালের ডিসেম্বরের সংশোধনী অনুযায়ী কোন রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, কেউ যদি বলে থাকে নিষিদ্ধ করা যাবে তা হলে আইনটির কোথায় বলা আছে কোন রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা যাবে, তা তারা দেখিয়ে দিক। আইমন্ত্রীর এই বক্তেব্যে তখন তীব্র ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি ও লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেন, আমি আইনমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। তিনি বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে ট্রাইব্যুনালে এ্যাক্টটি সংশোধন করা হয়েছে। এর আলোকে তদন্ত সংস্থাকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। তদন্তও শেষ করেছে। এখন আইনমন্ত্রীর এই জাতীয় বক্তব্য দেয়া কোনভাবে সমীচীন নয়। তিনি বলেন, দলের বিচার না করে ব্যক্তির বিচার করা হচ্ছে। ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালে ২১ জনের বিচার করা হয়েছিল। দলকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। আইনমন্ত্রীর বক্তব্য সম্পর্কে শাহরিয়ার কবির বলেন, তার এই বক্তব্য দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর কাছে ভুল সংকেত পৌঁছে দেবে। আইনের বিবেচনায় হোক বা রাজনৈতিক বিবেচনায় হোক কোনভাবেই এটি গ্রহণযোগ্য নয়।
×