ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অবরোধ হরতালে পর্যটন খাতে ব্যাপক ক্ষতি

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১৭ জানুয়ারি ২০১৫

অবরোধ হরতালে পর্যটন খাতে ব্যাপক ক্ষতি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ টানা অবরোধ ও হরতালে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে দেশের পর্যটন খাত। এভাবে চলতে থাকলে চলতি মৌসুমে শত কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাঁরা বলেছেন, বছরের শুরুতেই রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ অগ্রিম বুকিং বাতিল হয়েছে। এ জন্য পর্যটন শিল্পকে অবরোধ ও হরতালের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানানা তাঁরা। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডে এক সংবাদ সম্মেলনে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিজেদের উদ্বেগ জানান ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন টোয়াব। ট্যুর অপারেটরস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) পরিচালক তৌফিক রহমান বলেন, অবরোধ-হরতালের কারণে টুরিস্টরা বাংলাদেশে ভ্রমণ করতে আসছেন না। বছরের শুরুতেই রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ অগ্রিম বুকিং বাতিল হয়েছে। আমরা ধারণা করছি মার্চ পর্যন্ত এটি ৭৫ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াবে। এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোন হিসাব করেননি জানালেও তার ধারণা ক্ষতির পরিমাণ ৮০-১০০ কোটির টাকার কম হবে না। শুধু স্বল্প মেয়াদে নয়, এ ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার জন্য দীর্ঘমেয়াদেও বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে ভুগতে হবে বলে মনে করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে বিদেশি পর্যটক বহনকারী গাড়ি রাজনৈতিক কর্মসূচীর আওতামুক্ত রাখার দাবি তোলেন ট্যুরিস্ট গাইড এ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সৈয়দ মাহবুবুল ইসলাম বুলু। তিনি বলেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। প্লিজ, আমাদের বাচ্চাদের পেটে লাথি মারবেন না। ট্যুরিজমকে নোংরা রাজনীতি থেকে দূরে রাখুন। পর্যটন খাত থেকে শতভাগ বৈদিশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে উল্লেখ করে টোয়াব সদস্য ফরিদুল হক বলেন, এর ওপর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার আঘাত এলে ব্যক্তি ও দেশ উভয়ই ক্ষতির সম্মুখীন হবে। আমরাতো রাজনীতি করি না, কোন অন্যায়ও করিনি, তাহলে আমাদের কেন আর্থিক ক্ষতিতে পড়তে হবে। অবরোধ ও হরতালে দেশের ওপর চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, চলতি মৌসুমে বাংলাদেশে ট্যুরিস্টদের আসতে নিষেধ করে অনেক দেশই ওয়েবসাইটে জানিয়ে দিচ্ছে। পর্যটন খাতে এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদী হবে। এর ফলে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা পথে বসতে বাধ্য হবেন। বক্তারা বলেন, যেকোন সময়ে পেট্রোল বোমা ছুড়ে মানুষ হত্যা ও গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। চাপা আতঙ্ক নিয়ে সময় পার করতে হয়। সারাবিশ্বের মানুষ বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারছেন। ফলে কেউ আর এ দেশে ভ্রমণ করতে রাজি হচ্ছেন না। রাজনৈতিক অস্থিরতার শিকার আমরা কেন হব! বক্তারা আরও বলেন, বিদেশীরা বাংলাদেশে ছুটি কাটাতে এসে আতঙ্কের মধ্য থাকেন। আতঙ্ক নিয়ে টাকা খরচ করে কেউ কোনদিন দেশের বাইরে ঘুরতে আসবেন না। আমরা যদি রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পর্যটক হারাতে বসি তাহলে ব্যক্তি ও দেশ উভয়ই প্রচুর আর্থিক ক্ষতিতে পড়বে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অনেক সময় বাধ্য হয়ে এ্যাম্বুলেন্সে পর্যটকদের আনা-নেয়া করতে হচ্ছে। এতে দেশের ও আমাদের প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। সবাই প্রশ্ন করেন, অবরোধ আর হরতালের বলি তারা কেন হবেন! গতবছরেও একই রকম সঙ্কট হয়েছিল উল্লেখ করে বক্তারা দেশের এ সম্ভাবনাময় শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
×