ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের প্রাপ্য ইমেজ সঙ্কট আর কারখানা পরিদর্শনে নেতিবাচক প্রভাব

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রফতানি ৫ শতাংশ কমেছে

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ১৭ জানুয়ারি ২০১৫

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রফতানি ৫ শতাংশ কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি ৫ শতাংশ কমেছে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে। একই ধরনের চিত্র ছিল ২০১৩-১৪ অর্থবছরেও। বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ইমেজ সঙ্কট আর কারখানা পরিদর্শনের কারণে এমন নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন এ খাতের সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, ২০১৪ সালের জুলাই-ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রফতানি থেকে আয় করে ২ দশমিক ৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০১৩ সালের একই সময়ে ছিল ২ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন। তুলনামূলকভাবে যা ৫ শতাংশেরও বেশি কমেছে। শুধু ওভেন পোশাক রফতানি কমেছে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ, যা এই সময়ে রফতানি হয়েছে ১ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার। এর আগের বছর রফতানি হয়েছে ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। তবে ২০১৪ সালের জুলাই-ডিসেম্বর মাসে তুলনামূলভাবে ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে নিট পোশাক রফতানি। যা রফতানি হয় ৬২৩ মিলিয়ন ডলার। আগের বছরের একই সময়ে রফতানি হয়েছিল ৬১৭ মিলিয়ন। কানাডার বাজারে তৈরি পোশাক রফতানির ক্ষেত্রেও একই ধরনের নেতিবাচক চিত্র দেখা যায়। এই বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি কমেছে ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে সেখানে রফতানি হয় ৪২৬ মিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরে রফতানি হয় ৪৯৮ মিলিয়ন ডলার। বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মোঃ শহীদুল্লাহ আজিম জনকণ্ঠকে বলেন, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর বায়াররা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছিল আর অপেক্ষা করছিল বিল্ডিং ও ফায়ার সেফটি বিষয়ক কারাখানা পরিদর্শন প্রতিবেদনের জন্য, যা আমাদের রফতানির ওপর খানিকটা প্রভাব ফেলেছে। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর তারা আবার রফতানি আদেশ দিতে শুরু করেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে বায়াররা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেন। তারা বাংলাদেশে আসতে যেমন আগ্রহী হচ্ছেন না, একই ভাবে রফতানি আদেশ কমিয়ে দিয়েছেন। তবে কেউ কেউ রফতানি আদেশ দিতে আগ্রহী হলেও রফতানিকারক বা তার প্রতিনিধিকে দেশের বাইরে তৃতীয় কোন স্থানে যেতে বলছে। সেখানে গিয়েও কাক্সিক্ষত অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে না। বায়াররা অর্ডারের পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছেন, যা আমাদের জন্য বড় ধরনের উদ্বেগের বিষয়। তিনি বলেন, রফতানি আয় বাড়াতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশ এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েনের (ইএবি) সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী জনকণ্ঠকে বলেন, এ্যাকর্ড ও এ্যালায়েন্সের কারখানা পরিদর্শন প্রতিবেদনের পর আমাদের দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে রফতানি খাতকে। এখনকার সময়টা আমাদের জন্য ‘ট্রান্সফরমেশন পিরিয়ড’। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে কারখানা স্থানান্তর ও রিমেডিয়েশনের সুফল পেতে শুরু করব। এ সময়ে আমাদের রফতানি প্রবৃদ্ধি কয়েকগুণ বেড়ে যাবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
×