ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আদালতে খালেদার আইনজীবীদের ফের হট্টগোল

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১৬ জানুয়ারি ২০১৫

আদালতে খালেদার আইনজীবীদের ফের হট্টগোল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা দুই দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সময়ের আবেদন নাকচ করে দেয়ায় নতুন বিচারকের প্রতিও অনাস্থা জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবীরা। বৃহস্পতিবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় শুনানির জন্য নির্ধারিত দিন থাকলেও আদালতে না এসে আইনজীবীর মাধ্যমে সময় আবেদন করেন খালেদা জিয়া। পরে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার খালেদা জিয়াকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিলেও সাক্ষ্য পেছানোর আবেদন নাকচ করেন। এ সময় বিষয়টি নিয়ে খালেদার আইনজীবীরা হৈ চৈ শুরু করেন। এরপর বিএনপি চেয়ারপার্সনের আইনজীবীরা লিখিতিভাবে বিচারকের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেন। এর আগে এই দুই দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনকারী বিচারক বাসুদেব রায়ের প্রতিও কয়েক দফা অনাস্থা জানিয়েছিল তারা। তার নিয়োগ এবং অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার আবেদন উচ্চ আদালতেও নাকচ হয়ে যায়। নতুন বিচারক আবু আহমেদ জমাদার বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো এ মামলার শুনানি গ্রহণ করেন। অনাস্থার আবেদনের পর তিনি খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের হাইকোর্ট থেকে আদেশ নিয়ে আসতে বলেন। পরে মামলার বাদী দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর রশিদের বাকি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২৯ জানুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য করেন। গুলশানের কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ’ থাকায় খালেদা জিয়া আদালতে যেতে পারেননিÑ কারণ দেখিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে খালেদাকে অব্যাহতির আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। ওই আবেদনে মঞ্জুর করলেও খালেদার সাক্ষ্য পেছানোর আবেদন নামঞ্জুর করে বিচারক মামলার বাদী দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর রশিদের জবানবন্দী শোনা শুরু করেন। এ সময় আদালতে হৈ চৈ করেন খালেদার আইনজীবীরা। পরিস্থিতি শান্ত হলে আবার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে বাদানুবাদের মধ্যে চলতে থাকে বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ। এক পর্যায়ে বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে ফের হট্টগোল শুরু করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। পরে সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি করে পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন বিচারক। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে অর্থ আত্মসাতের মামলায় খালেদার ছেলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও আসামি। মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক আমলা ড. কামালউদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ এবং জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান এই মামলার আসামি। সালিমুল ও শরফুদ্দিন জামিনে রয়েছেন। কামাল সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এই মামলা করে দুদক। দুদকের সহকারী পরিচালক হারুন-অর-রশীদ এই মামলায় খালেদা, তারেকসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ৫ অগাস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। খালেদাসহ চারজনের বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলারও বাদী হারুন-অর-রশিদ। এ মামলায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন খালেদার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। এদের মধ্যে হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু হতেই পলাতক। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও রয়েছে।
×