ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

আজ বিএনপি জোটের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১৫ জানুয়ারি ২০১৫

আজ বিএনপি জোটের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশব্যাপী চলমান অবরোধ কর্মসূচীর মধ্যেই আজ বৃহস্পতিবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমানের ওপর হামলার প্রতিবাদে এই হরতালের ডাক দিয়েছে তারা। উল্লেখ্য, রিয়াজ রহমানের ওপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাতেই এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সারাদেশে আজ সকাল ৬টা থেকে টানা ২৪ ঘণ্টা হরতালের ঘোষণা দেয় বিএনপি। তবে বুধবার দুপুরে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আজ সকাল ৬টা থেকে ১২ ঘণ্টাব্যাপী হরতাল পালনের কথা জানানো হয়। যা মঙ্গলবার রাতে ঘোষিত সময়ের চেয়ে ১২ ঘণ্টা কম। তবে কী কারণে হরতালের সময় কমানো হয়েছে তা জানানো হয়নি। এদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আজ সারাদেশে হরতাল পালন করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বলে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত শেষে মহিলা দলের নেতারা জানিয়েছেন। গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের জন্য ২০ দলীয় জোটের ডাকা হরতাল এবং চলমান অবরোধ কর্মসূচী স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালনের জন্য দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে। গুলশান কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার ১২ দিন ॥ গুলশান কার্যালয় থেকে বাসা কিংবা অন্য কোথাও যেতে এখনও ইচ্ছা প্রকাশ করেননি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। ৩ জানুয়ারি রাত ৮টা ২০ মিনিটে বাসা ছেড়ে আসার পর ১২ দিন পর্যন্ত তিনি এখানেই আছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে বলা হলেও প্রতিদিনই তিনি কারও না কারও সঙ্গে সাক্ষাত দিচ্ছেন এবং রাজনৈতিক বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করছেন। আর আত্মীয়-স্বজনের বাসা থেকে আনা খাবার খাচ্ছেন। বুধবার দুপুরে মহিলা দলের সহসভাপতি ডাঃ নুরজাহান মাহবুবের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল গুলশান কার্যালয়ে সাক্ষাত করতে গেলে খালেদা জিয়া চলমান অবরোধ কর্মসূচীর পাশাপাশি আজ বৃহস্পতিবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচী সফল করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত শেষে বাইরে এসে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন নুর জাহান মাহবুব। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বলেছেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে। বর্তমান সরকার বিদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন-সংগ্রাম চলবে বলে তিনি জানিয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আগের চেয়ে সুস্থ আছেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করতে যাওয়া মহিলা দলের প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন মনি বেগম, শামসুন্নাহর, শিরিন জাহান, রোকেয়া সুলতানা, সাজেদা আলী প্রমুখ। তাঁরা খালেদা জিয়া ও তাঁর সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীদের জন্য কিছু শুকনো খাবার নিয়ে গুলশান কার্যালয়ে যান। মহিলা দলের নেতারা চলে যাওয়ার পর দুপুর সোয়া ১টায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করতে গুলশান কার্যালয়ে যান বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মেহেরুন নেছা হক, সুরাইয়া বেগম, আসমা আফরিন, হোসনেয়ারা চৌধুরী ও মরিয়ম বেগম সীমা। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যার জন্য গুপ্তঘাতক নামিয়েছে সরকারÑ রিজভী ॥ বুধবার দুপুরে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা ‘অবৈধ’ সরকারবিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা করার জন্য বিভিন্ন পাড়ায়-মহল্লায় গুপ্তঘাতক নামিয়েছে। জনগণের তুমুল আন্দোলনের চাপে দিশেহারা অবৈধ সরকার শেষ বিষাক্ত ছোবল দেয়ার জন্যই মরণঘাতী গুপ্তবাহিনীদের দিয়ে কমিটি গঠন করেছে। এরই নির্মম শিকার হয়েছেন দেশের পেশাদার কূটনীতিক, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রী রিয়াজ রহমান। বিবৃতিতে রিজভী বলেন, বর্তমান সরকার দ্বিতীয় পর্যায়ের বাকশালী দুঃশাসনের চরম সীমায় উপনীত হয়েছে। সকল বিরোধী মত এবং দলকে নিশ্চিহ্ন করে শতকরা ৫ ভাগ ভোট পেয়ে একদলীয় শাসনকে টিকিয়ে রাখার জন্য তারা দেশব্যাপী এখন রক্তগঙ্গা বইয়ে দেয়ার কর্মসূচীতে লিপ্ত হয়েছে। একদলীয় বাকশালী দুঃশাসনের এটি শেষ অন্ধকার। এই অন্ধকার দূরীভূত করার জন্য মৃত্যুকে জয় করার ব্রত নিয়ে ২০ দলীয় জোটসহ আপামর জনসাধারণ এখন দুর্বার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করছে। রিজভী বলেন, শতকরা ৫ ভাগ জনসমর্থনের এই সরকারকে রক্ষার জন্য যারা জনগণের আন্দোলনের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছেন তাঁরা কেউই রেহাই পাবেন না। দেশের জনগণ তাঁদের বিচার নিশ্চিত করবেই। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে তাঁর প্রতি অমানবিক আচরণসহ অশ্লীল কথাবার্তা যাঁরা বলছেন তাঁরাও এদেশের মানুষের ক্রোধ থেকে কখনই রেহাই পাবেন না। চট্টগ্রাম অফিস থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের আহূত আজ বৃহস্পতিবারের হরতালে চট্টগ্রামের ২৩টি পয়েন্টে অবস্থান নেবে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। জনগণের জানমাল রক্ষা ও নিরাপত্তা বিধানে এ অবস্থান বলে জানানো হয় দলের পক্ষ থেকে। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সিটি মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন এক বিবৃতিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায়কে কেন্দ্র করে কোন অরাজগতা সৃষ্টির বিরুদ্ধে নেতা কর্মীদের মাঠে নেমে আসার আহ্বান জানান।
×