ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শিক্ষা খাতে বিনিয়োগবান্ধব পরিকল্পনা তৈরির তাগিদ

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ১৫ জানুয়ারি ২০১৫

শিক্ষা খাতে বিনিয়োগবান্ধব পরিকল্পনা তৈরির তাগিদ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় শিক্ষা খাতে বিনিয়োগের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার তাগিদ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে দেশের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির জন্য বিনিয়োগের বিকল্প নেই। বুধবার সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ তাগিদ দেয়া হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। উপস্থিত ছিলেন, পরিকল্পনা সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সুরাইয়া বেগম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য গোলাম ফারুক, শফিকুল আজম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, প্রফেসর মমতাজ উদ্দিন আহমেদসহ অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ। মতবিনিময় সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, গত ৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী ছয়টি আন্তর্জাতিক পদক লাভ করেছেন। এর সবই হচ্ছে মানব উন্নয়ন সূচকে অগ্রগতির জন্যই। আমরা এক সময় ১০ মিলিয়ন টন খাদ্য উৎপাদন করলেও এখন সেটি বেড়ে ৩৬ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে। এটি বড় অর্জন। আমাদের দেশের দারিদ্র্যের হার অনেক বেশি ছিল, এখন সেটি ২৪ শতাংশে নেমে এসেছে। শিক্ষিতের হার ৬৭ শতাংশে এসেছে, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার শতভাগে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। এসবই হচ্ছে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য। আমাদের সক্ষমতার জায়গাগুলো ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। ড. শামসুল আলম বলেন, এ পরিকল্পনাটি হবে বিনিয়োগবান্ধব ও মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার সিঁড়ি। সে লক্ষ্যেই কাজ করা হচ্ছে। পরিকল্পনায় কৃষি খাতের চেয়ে সেবা ও শিল্প খাতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কেননা কৃষি খাতে শ্রম শক্তির একটি বড় অংশ যুক্ত হলেও তা মধ্য আয়ের দেশে যাওয়ার জন্য কাক্সিক্ষত নয়। আমাদের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে আসতে হলে সেবা ও শিল্প খাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। তাছাড়া জনশক্তি ব্যবস্থাপনায় বিশেষ নজর দেয়া হবে। গ্যাস ও বিদ্যুতে ভর্তুকি বাদ দেয়ার সুযোগ নেই। এ দুই খাতে ভর্তুকি দিতেই হবে। আমরা শহরগুলো বিকেন্দ্রীকরণ করার পাশাপাশি পরিকল্পিত নগরায়নের দিকে যাচ্ছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বরাতে হবে। এ খাতটি হচ্ছে বেস্ট ইনভেসমেন্টের জায়গা, তাই এ খাতে বিনিয়োগে বিশেষ নজর দিতে হবে। এসএসসি পর্যন্ত কারিগরি শিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা যাতে তারা এখান থেকেই ভবিষ্যতের একটি লক্ষ্য স্থির করতে পারে। প্রফেসর মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বাড়ছে, কিন্তু সেটি কাক্সিক্ষত হচ্ছে না। এ পর্যায় অবকাঠামো খাত উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়নে বিশেষ পরিকল্পনা নিতে হবে। প্রফেসর শফিকুজ্জামান বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিশেষ নজর দিতে হবে। প্রফেসর নাজমা বেগম বলেন, বর্তমান আমাদের যে সম্পদ রয়েছে তা দিয়েই উন্নয়ন সম্ভব। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, যদি আমরা দুর্নীতি কমাতে পারি তাহলে প্রবৃদ্ধি অবশ্যই বাড়বে।
×