ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মুজাহিদের আপীল শুনানি শুরু আজ

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ১৪ জানুয়ারি ২০১৫

মুজাহিদের আপীল শুনানি শুরু আজ

আরাফাত মুন্না ॥ একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আলবদর নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আপীল আবেদনের শুনানি শুরু হচ্ছে আজ বুধবার। যুদ্ধাপরাধের দায়ে পাওয়া মৃত্যুদ- থেকে খালাস চেয়ে সুপ্রীমকোর্টে আপীল করেছিলেন মুজাহিদ। সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপীল বেঞ্চের বুধবারের কার্যতালিকায় আপীলটি শুনানির জন্য রয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুপ্রীমকোর্টের ওয়েবসাইটে থাকা বুধবারের কার্যতালিকায় দেখা গেছে মুজাহিদের আপীলটি কার্যতালিকার চার নম্বরে রয়েছে। এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপীল বিভাগের ৫ বিচারপতির বেঞ্চ শুনানির এই দিন ঠিক করেছিলেন। বিচারপতি এসকে সিনহা ছাড়াও এ বেঞ্চে রয়েছেন, বিচারপতি মোঃ আব্দুল ওয়াহ্্হাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। এই চার বিচারপতির বেঞ্চেই কামারুজ্জামানের মামলার শুনানি হয়েছিল। সংখ্যাগরিষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে কামারুজ্জমানকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদ-ই বহাল রেখেছিলেন আপীল বিভাগের এই বেঞ্চটি। কামারুজ্জামানের মামলাটি বর্তমানে আপীল বিভাগের চূড়ান্ত রায় প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। আপীল বিভাগে নিষ্পত্তি হওয়া সাঈদীর মামলায় এই চার বিচারকের সঙ্গে বর্তমান প্রধান বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেনও ছিলেন। তিনি আগামী ১৬ জানুয়ারি অবসরে যাচ্ছেন। তার স্থলে ১৭ জানুয়ারি থেকে যোগ দিচ্ছেন বিচারপতি এসকে সিনহা। আপীল বিভাগের প্রথম যুদ্ধাপরাধ মামলা কাদের মোল্লার মামলায় বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ছিলেন। এই মামলায় তার পরিবর্তে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আসেন। আপীল দায়েরের ক্রম অনুসারে মুজাহিদের আগেই গোলাম আযম ও বিএনপি নেতা আব্দুল আলিমের মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তবে তাদের মৃত্যুর কারণে ওই মামলা দুটি অকার্যকর হওয়ায় এগিয়ে এসেছে মুজাহিদের মামলা। গত বছরের ১৭ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ মুজাহিদকে মৃত্যুদ- দিয়েছিলেন। পরে ওই বছরের ১১ আগস্ট মৃত্যুদ- থেকে খালাস চেয়ে সুপ্রীমকোর্টে আপীল করেন মুজাহিদ। তবে রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলার কোন আপীল আবেদন করেনি। আপীল না করলেও শুনানিতে অংশ নিয়ে দ- বহাল রাখাতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। চার দশক আগে বাঙালীর স্বাধীনতার পথ রুদ্ধ করতে সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং সাম্প্রদায়িক হত্যা-নির্যাতনের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেলকে মৃত্যুদ- দেয় ট্রাইব্যুনাল। অপহরণ, নির্যাতন, হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি ঘটনায় মুজাহিদের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- কার্যকর করার আদেশ দেয়া হয় ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল-২ এর প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান রায়ে বলেন, এ আসামির মৃত্যুদ- দেয়া হলে ন্যায়বিচার হবে না। মুজাহিদ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনীকে সহযোগিতা করতে গঠিত আলবদর বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন এবং ওই বাহিনীর ওপর তার ‘কার্যকর নিয়ন্ত্রণ’ ছিল বলেও উঠে আসে ওই রায়ে। মুজাহিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হয়।
×