স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাসা কিংবা অন্য কোথাও যেতে কোন বাধা নেই বলে সরকারের তরফ থেকে জানানো হলেও এখনও গুলশান কার্যালয়েই অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। ৩ জানুয়ারি রাতে তিনি বাসা ছেড়ে গুলশান কার্যালয়ে আসেন। সরকার তাঁকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হলেও ১১দিন ধরে প্রতিদিনই তিনি কারও না কারও সঙ্গে সাক্ষাত দিচ্ছেন এবং রাজনৈতিক বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করছেন। আর আত্মীয়-স্বজনের বাসা থেকে আনা খাবার খাচ্ছেন। মঙ্গলবার শুকনো খাবার নিয়ে মহিলা দলের নেতারা সাক্ষাত করলে খালেদা জিয়া গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
মহিলা দলের সহসভাপতি রাবেয়া সিরাজের নেতৃত্বে ৭ জন দুপুর সোয়া ১টার দিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করতে গুলশান কার্যালয়ে পৌঁছেন। প্রায় ১ ঘণ্টা গুলশান কার্যালয়ে অবস্থানের পর বেলা সোয়া ২টার দিকে বের হয়ে রাবেয়া সিরাজ সাংবাদিকদের জানান খালেদা জিয়া গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এখন আগের চেয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তার মনোবল দৃঢ় রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে রাবেয়া সিরাজ বলেন, খালেদা জিয়া দেশের বড় রাজনৈতিক দলের চেয়ারপার্সন। তিনি দলীয় কার্যক্রমে অংশ নেয়ার জন্য বাইরে যেতে চাচ্ছেন কিন্তু সরকার তাঁর কার্যালয়ের চতুর্দিকে পুলিশ ও জলকামান দিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছে।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করতে যাওয়া মহিলা দলের প্রতিনিধি, দলের অন্য সদস্যরা হলেনÑ শামীমা আক্তার সাথী, সেলিনা রউফ, রোকসানা খানম মিতু, রহিমা সিকদার, সাবিনা ইয়াসমিন এবং লাভলী।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেন তার উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী।
সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অবরোধ চলবে-রিজভী ॥ বর্তমান সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত সারাদেশে অবরোধ কর্মসূচী চলবে বলে জানিয়েছেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা জানান। তিনি অবিলম্বে অবরোধ চলাকালে গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মামলা প্রত্যাহার করে মুক্তি দাবি করেন।
রিজভী বলেন, ভয়ঙ্কর দুঃশাসনের কবল থেকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়াই আমাদের চলমান আন্দোলনের উদ্দেশ্য। বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি আমরা আহ্বান জানাব, যে যেখানে যে অবস্থানে আছেন, শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ কর্মসূচী পালন করুন। বিজয় না হওয়া পর্যন্ত সকলকে এ কর্মসূচী চালিয়ে যেতে হবে। উদ্দেশ্য একটাই-জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা।
সারাদেশে নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা নিজেরা নাশকতার ঘটনা ঘটিয়ে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। এভাবে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন স্তব্ধ করা যাবে না।
সোমবার সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভায় মন্ত্রী-নেতারা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুৎসিত ও অশ্রাব্য ভাষায় বক্তব্য রেখেছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, তাঁদের ওইসব নোংরা বক্তব্যের জবাব একদিন এদেশের জনগণ দেবে।