ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ফকিরাপুলে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে দুই মহিলা পুলিশ নিহত

প্রকাশিত: ০৫:০২, ১২ জানুয়ারি ২০১৫

ফকিরাপুলে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে দুই মহিলা পুলিশ নিহত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির টানা অবরোধের মধ্যে রাজধানীর ফকিরাপুলে ট্রাকের সঙ্গে নারী পুলিশ বহনকারী একটি বাসের সংঘর্ষে পুলিশের দুই নারী সদস্য নিহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশের ২৭ নারী সদস্য আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ৯জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিহতরা হচ্ছেন-কনস্টেবল আকলিমা বেগম (২৪) ও মামুনি খাতুন (২২)। নিহত আকলিমার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়। আর মামুনি খাতুনের গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফকিরাপুলে দুর্ঘটনায় দুই নারী কনস্টেবলের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। ঘটনার পরপরই নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, স্বরাষ্ট্র সচিব মোজাম্মেল হক খান, পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোঃ আসাদুজ্জামান মিয়াসহ উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তারা ঢাকা মেডিক্যালে যান। হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সকাল সোয়া নয়টায় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় আইজি শহীদুল হক জানান, দুর্ঘটনার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি আহতদের সুচিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া নিহতদের পরিবার ও আহতদের আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, এ দুর্ঘটনায় দুই নারী পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৭ জন। সহকারী পুলিশ কমিশনার (কল্যাণ) সৈয়দ মামুন মোস্তফা জানান, ভোর ৬টার দিকে ফকিরাপুল এলাকায় ট্রাকের সঙ্গে নারী পুলিশ বহনকারী একটি বাসের সংঘর্ষে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি জানান, ওই বাসে ২৯ নারী পুলিশ সদস্য ছিলেন। তাদের সবাই কমবেশি আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতদের মধ্যে কনস্টেবল ফরিদা, লিলি, জেসমিন, সীমা, আলফা, শাহনাজ, লিজা, সোহাগা ও সালমাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্য ১৮ জনকে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার মোঃ ওয়াইশ কুরুনী জানান। আহতরা হচ্ছেনÑকনস্টেবল লাইলী আক্তার, নাজনীন আক্তার, মনিকা, শিল্পী, সালমা, আফরিন, মাহফুজা আক্তার, জেসমিন, মিতালী, নীলিমা, ববিতা, ঝুমা রানী, কাবেরী নন্দী, রহিমা, রুনা আক্তার, আলপনা, দ্বীপ্তি ম-ল, ফাতেমা ও আঁখি। মতিঝিল থানার এসআই স্বপন সরকার জানান, টানা অবরোধের দিনে রাজধানীর বিভিন্নস্থানে দায়িত্ব পালনের জন্য রবিবার ভোরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস থেকে নারী পুলিশ সদস্যদের নিয়ে একটি বাস বের হয়। বাসটি ফকিরাপুল মোড়ে এলেই মতিঝিল থেকে কাকরাইলের দিকে চলন্ত একটি ট্রাক নারী পুলিশ বহনকারী ওই বাসটিকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই পুলিশ সদস্য আকলিমার মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত নারী পুলিশ সদস্যদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনিকে মৃত ঘোষণা করেন বলে ঢাকা মেডিক্যাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই সেন্টু দাস জানান। হাসপাতালে আহত ফরিদা বেগম জানান, ভোরের দিকে তাদের বাসটি ফকিরাপুল মোড়ে যাওয়া মাত্র নাইটিঙ্গেলের দিক থেকে আসা একটি মালবাহী ট্রাক তাদের বাসের পেছনের অংশে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে তাদের বাসটি উল্টে যায়। বাসের পেছনে বসা আকলিমা ও মামুনি গুরুতর আহত হয়। ঘটনাস্থলে আকলিমার মৃত্যু হয়। আর মামুনিকে ঢামেক হাসপাতালে নিলে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার মোঃ ওয়াইশ কুরুনী জানান, এখানে ১৯ জনকে চিকিৎসা দিচ্ছি। তবে ইতোমধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৫ জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। যাত্রাবাড়ীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত কিশোরী ॥ রবিবার সকালে যাত্রাবাড়ী থানাধীন সায়েদাবাদ রেললাইন সংলগ্ন রাস্তায় বাসের ধাক্কায় মুন্নি আক্তার (১৮) নামে এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত মুন্নির বাবার নাম বেলায়েত ফকির। গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর থানার বাটামোড়ে। তিনি মিরপুর-শেওড়াপাড়া এলাকায় স্বামী শরিফুল ইসলামের সঙ্গে বসবাস করতেন। নিহতের স্বামী শরিফুল ইসলাম জানান, রবিবার সকাল ৭টার দিকে শ্বশুরবাড়ি পিরোজপুরে যাওয়ার উদ্দেশে মুন্নি আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে সায়েদাবাদ রেললাইন সংলগ্ন রাস্তা পার হচ্ছিলাম। এ সময় একটি বাস স্ত্রী মুন্নিকে ধাক্কা দেয়। পরে মুন্নিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
×