ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৯ জানুয়ারি ২০১৫

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান ॥ শেষ হয়ে এসেছে পৌষ। শীতের প্রথম মাসটি আর কয়েকদিন পর বিদায় নেবে। পৌষের বিদায় মানেই পৌষ সংক্রান্তির আনুষ্ঠানিকতা। এক সময় অসাম্প্রদায়িক এ উৎসবে মাততো বাংলার অধিকাংশ গ্রাম। শহরেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। এখনও ছিটেফোঁটা চোখে পড়ে। কিছুদিন আগে রমনাবটমূলে অনুষ্ঠিত হয়েছে পৌষমেলা। গ্রামীণ ঐতিহ্যের এই মেলায় বাংলার লোকায়ত সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়। সঙ্গীত, নৃত্য, কবিতার ভাষায় পৌষ বন্দনা ছিল দারুণ উপভোগ্য। সেইসঙ্গে স্টলগুলোতে চলে পিঠেপুলির আয়োজন। তবে সেটা ছিল শুরু। পৌষের শেষ দিন অনুষ্ঠিত হবে পৌষসংক্রান্তি। বর্তমানে চলছে সেই প্রস্তুতি। গত কয়েকদিন পুরনো ঢাকায় গিয়ে এমন অনেক কিছুই দেখা গেল। পৌষ সংক্রান্তির হরেক উৎসব অনুষ্ঠানের মধ্যে ঘুড়ি ওড়ানো অন্যতম। চলছে সেই ঘুড়ি তৈরির কাজ। বিভিন্ন দোকানে ঘুড়ি ওঠে গেছে। পাশেই হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে নাটাই। ঘুড়ির বিখ্যাত কারিগর হাজারিবাগের সোনা মিয়া। জনকণ্ঠকে তিনি জানান, এক সময় চৈত্রসংক্রান্তির দিন ব্যাপক আয়োজনে ঘুড়ি ওড়ানো হতো। পুরনো ঢাকার ছেলে বুড়ো বাসার ছাদে ওঠে মনের আনন্দে ঘুড়ি ওড়াতেন। এখন অতো নেই। তবে ঐতিহ্যটা হারিয়ে যায়নি। পৌষসংক্রান্তি সামনে রেখে ঘুড়ি বানানো ও বিক্রির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে বলে জানান তিনি। পৌষের যেখানে শেষ, মাঘের শুরু। কথায় আছে মাঘের শীতে এমনকি বাঘ পালায়। মানুষ তো নস্যি। তীব্র সেই শীতের দিন এখন আসি আসি করছে। বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলির শহর ঢাকায় মাঘের আগমনী বার্তা স্পষ্ট। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঠিক এই মুহূর্তে শীতের প্রকোপ সামান্য কমলেও মাঘে তা বেড়ে কয়েকগুণ হবে। ঢাকাবাসীকে সেভাবে প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। অবশ্য সব সময়ই মূল ভোগান্তিতে পড়ে হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ। এই মানুষগুলোর জন্য মাঘ মানে অনেক বড় আতঙ্কের কাল। রাজনীতিও বেশ আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এখন। পুরনো চেহারায় ফিরেছে বাংলাদেশের রাজনীতি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই একটা ছুতোর খোঁজ করা হচ্ছিল। পেলেই হরতাল অবরোধ। আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো। এবং অতঃপর সেই ছুতো পাওয়া গেছে। এখন মাঠে বিএনপি জামায়াত। চলছে অবরোধের কর্মসূচী। রাজধানী ঢাকায় এর তেমন প্রভাব চোখে পড়ছে না। তবে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা লক্ষণীয়। সুযোগ বুঝে আজ এখানে তো কাল ওখানে গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটছে। অথচ আজ শুক্রবার থেকে তুরাগ তীরে শুরু হচ্ছে বিশ্ব এজতেমা। বিশ্ব মুসলিমের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই জমায়েতে সারা দেশের মুসল্লিরা যোগ দেবেন। আসবেন বিদেশীরাও এবং কী আশ্চর্য, এই অবস্থায়ও অবরোধ প্রত্যাহারের কোন ঘোষণা আসেনি ইসলামের নামে রাজনীতি করা দলগুলোর জোট থেকে।
×