ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রেসক্লাবেই থেকে গেলেন ফখরুল

প্রকাশিত: ০৭:৩৭, ৬ জানুয়ারি ২০১৫

প্রেসক্লাবেই থেকে গেলেন ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় প্রেসক্লাবের ভেতরেই অবস্থান করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গ্রেফতার এড়াতে তিনি বের হচ্ছেন না বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখানে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত সাংবাদিকরা তার দেখভাল করছেন। সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি রাতের খাবার শেষ করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবেই তিনি রাত যাপন করবেন বলে ভেতরে থাকা একটি বিশ্বস্থ সূত্র জানিয়েছে। রাত ১টার দিকে এই রিপোর্ট লেখা সময় তিনি সেখানে ঘুমাচ্ছিলেন। এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, এটি মির্জা ফখরুল ইসলামের নাটক। তাকে গ্রেফতার করা হবে না। নাশকতার আশঙ্কায় প্রেসক্লাবের বাইরে আইনশৃঙ্খা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে পেশাজীবী পরিষদের কর্মসূচীর পর স্বাধীনতাবিরোধীরা ‘জিয়ার সৈনিক’ সেøাগান দিয়ে প্রেসক্লাবের মূল ভবনের প্রবেশপথে শহীদ সাংবাদিকদের নাম-সংবলিত ফলক ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ করেন বিএফইউজের সাবেক সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। এ সময় হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তির দাবিও জানান তিনি। সোমবার রাতে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি। জানা গেছে, সোমবার রাত ৮টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের মূল ফটকসহ আশপাশে ডিবি পুলিশ অবস্থান করছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে কয়েকটি সাদা মাইক্রোবাস। এ সময় প্রেসক্লাবের তিন গেটে তিন ভাগে ডিবি পুলিশের তিনটি টিম অবস্থান নেয়। প্রতি টিমে ১০ থেকে ১২ জন করে ডিবি পুলিশের সদস্যরা প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান করছেন। এছাড়া প্রেসক্লাবের সামনের গেটে ফুটওভার ব্রিজের নিচে একটি সাদা মাইক্রোবাস রাখা হয়েছে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ও সহকারী পুলিশ কমিশনার প্রেসক্লাবের সামনে এসে পুলিশের অবস্থান সম্পর্ক খোঁজখবর নেন। পরে ১২টার দিকে তারা ফিরে যান। পুলিশের বিভিন্ন সূত্র জানাচ্ছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রেসক্লাবের ভেতর থেকে বের হলে তাকে আটক করা হবে। তবে এ তথ্যের বিষয়ে ডিবি পুলিশ থেকে আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের বিএনপিপন্থী পেশাজীবীদের সংগঠনের কর্মসূচীতে অংশ নিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেসক্লাবে যান এবং তারপর থেকে তিনি ভবনের ভেতরেই অবস্থান করছেন। সেখানে সন্ধ্যায় তার সংবাদ সম্মেলন করার কথা থাকলেও তা আর করেননি তিনি। অপরদিকে বিকেলে আওয়ামী লীগপন্থী সাংবাদিকদের একটি কর্মসূচীতে অংশ নিতে সেখানে প্রধানমন্ত্রী তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী এবং সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল সেখানে যান। এ সময় ইকবাল সোবহান চৌধুরী জাতীয় প্রেসক্লাবের ভেতরে অবস্থানরত বহিরাগতদের বের করে দিতে প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানান। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, সাংবাদিকদের কর্মসূচী চলাকালে সেখানে বহিরাগতরা হামলা চালিয়েছে। তারা প্রেসক্লাবের ভেতরে অবস্থান করছেন। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, বহিরাগতদের বের করে না দেয়া পর্যন্ত তারা জাতীয় প্রেসক্লাবে অবস্থান করবেন। ইকবাল সোবহান জানান, পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচী হিসেবে সাংবাদিকদের স্বার্থরক্ষায় সোমবার সকাল থেকে আমাদের সমাবেশ চলছিল। এটি কোন রাজনৈতিক কর্মসূচী নয়। বরং সাংবাদিকদের স্বার্থরক্ষার সমাবেশ। অপরদিকে পেশাজীবীদের নামে রাজনৈতিক কর্মসূচী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব যোগ দেন। তিনি আরও জানান, পেশাজীবীদের কর্মসূচীর পর স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটূক্তিমূলক সেøাগান দেয়। আমাদের সমাবেশের ওপর হামলার চেষ্টা করে। প্রেসক্লাবকে রাজনৈতিক দলের কর্মসূচী পালনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করার দাবিও জানান সোবহান চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে বিএফইউজের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে বলেন, শহীদদের নাম-সংবলিত ফলকে হামলাকারীদের দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করা, ক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কক্ষকে বিশেষ দলের চেম্বার হিসেবে ব্যবহার না করা। পেশাজীবী সাংবাদিকদের দ্রুত সদস্যপদ দেয়ার দাবি জানান। প্রেসক্লাবকে কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হলে বিএফইউজে ও ডিইউজে তাৎক্ষণিক কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি করেন বুলবুল। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান মিলন প্রমুখ।
×