ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপির আন্দোলনে জনসমর্থন নেই ॥ রওশন

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৬ জানুয়ারি ২০১৫

বিএনপির আন্দোলনে জনসমর্থন নেই ॥ রওশন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এই মুহূর্তে মধ্যবর্তী নির্বাচন দেয়ার মতো কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। দেশের মানুষও নির্বাচন চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ। তিনি বলেন, শীঘ্রই মন্ত্রিপরিষদ থেকে জাতীয় পার্টির সদস্যদের ফিরিয়ে আনা হবে। তাছাড়া বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টি প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এদিকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে জাপা নেতাদের পদত্যাগ করার প্রসঙ্গে এরশাদ বলেছেন, এ বিষয়ে দলীয় কোন সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। রওশনের বক্তব্য দলীয় বক্তব্য নয়। সোমবার জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে নির্বাচনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মধ্যবর্তী নির্বাচন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রওশন বলেন, জনগণ চাইলে নির্বাচন হবে। আর নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন। কখন নির্বাচন হবে, না হবে এটা তাদের সিদ্ধান্ত। তবে নির্বাচনের জন্য বিএনপি যে আন্দোলন করছে তাতে জনসমর্থন নেই। তিনি বলেন, আমরা দেশে রাজনৈতিক শান্তি চাই। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সংলাপ প্রয়োজন। এজন্য দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার আহ্বান জানাব। রওশন এরশাদ বলেন, বিএনপি নেত্রী অবরুদ্ধ নন, তার নিরাপত্তার জন্যই সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। তিনি বলেন, এখনও মধ্যবর্তী নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। দেশ ও দেশের মানুষ শান্তিতে আছে। দশম জাতীয় সংসদে নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে রওশন বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সংঘাতময় পরিস্থিতি থেকে দেশকে মুক্ত করতে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে সারাদেশে সংঘাত-হানাহানি চলছিল। এমন পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে নির্বাচনের প্রয়োজন। সেজন্যই জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেয়। রওশন এরশাদ বলেন, দশম সংসদ নির্বাচনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আমরা আজ এখানে এসেছি। আপনারা জানেন, ২০১৩ সালে কি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। যদি ঠিকমতো নির্বাচন না হতো তাহলে অসাংবিধানিক কেউ ক্ষমতায় আসত। তাতে দেশের জন্য ভাল হতো না। নির্বাচনের পর দেশে শান্তি ফিরে এসেছে একথা উল্লেখ করে রওশন বলেন, দেশ উন্নতির দিকে যাচ্ছে। মানুষের জীবনে স্বস্তি এসেছে। উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। দেশে এখন শান্তি ও স্থিতিশিলতা ফিরে এসেছে। সংবাদ সম্মেলনে বিরোধীদলীয় নেতা আরও বলেন, আমরা চেয়েছিলাম সব রাজনৈতিক দল মিলে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে। কিন্তু কতিপয় রাজনৈতিক দল সে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। যদি অংশগ্রহণ করত তাহলে হয়তবা তারাই ভাল ফল বয়ে আনতে পারত। তিনি আরও বলেন, আমরা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা চাই না, দেশের উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চাই। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের চেয়ে খারাপ। আর দেশে এখন স্থিতিশীলতা বিরাজের ফলেই অর্থনীতি, সামাজিক সূচক প্রভৃতি ক্ষেত্রে দেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। দেশকে অস্থিতিশীল করা হলে বিদেশী বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে যাবে। চীন, জাপান বাংলাদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে, তারাও পিছিয়ে যাবে। এতে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিরোধীদলীয় চীফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, কাজী ফিরোজ রশিদ এমপি, নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরী এমপি, ফখরুল ইমাম এমপি, সালাহউদ্দিন আহম্মেদ মুক্তি এমপি, রওশন আরা মান্নান এমপি, বিরোধীদলীয় নেতার রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ প্রমুখ। মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত হয়নি ॥ মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এমপি। সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে শীঘ্রই জাতীয় পার্টি মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করবে এমন ঘোষণা দেন পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ। রওশন এরশাদের বক্তব্য প্রসঙ্গে দলের অবস্থান জানতে চাওয়া হলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ এ মন্তব্য করেন। এরশাদ বলেন, মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়ার অথরিটি হচ্ছে পার্টির চেয়ারম্যান। আর পার্টির চেয়ারম্যানকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে প্রেসিডিয়ামের সভা। প্রেসিডিয়ামের সভায় মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আলোচনা হয়েছে বলে জানান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘টিভিতে বিরোধী দল নেতা রওশন এরশাদের বরাত দিয়ে যে বক্তব্য প্রচারিত হচ্ছে তা দলীয় ফোরামের সিদ্ধান্ত নয়। আমাদের আলোচনার প্রতিফলন হয়নি। রওশনের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এরশাদ তাঁর অবস্থান পরিষ্কার করলেও সম্প্রতি তিনি একাধিকবার মন্ত্রিপরিষদ থেকে দলের নেতাদের বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছিলেন, দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদ থেকে জাপা নেতাদের পদত্যাগের বিষয়টি চূড়ান্ত।
×