ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মন্তব্য

টেন্ডারবাজদের মুখে বঙ্গবন্ধুর নাম শোভা পায় না

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ৪ জানুয়ারি ২০১৫

টেন্ডারবাজদের মুখে বঙ্গবন্ধুর নাম শোভা পায় না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অনেকেই এখন বঙ্গবন্ধুর নামে টেন্ডারবাজি করছে। এসব টেন্ডারবাজদের মুখে বঙ্গবন্ধুর নাম শোভা পায় না। প্রকৃত অর্থে বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করতে হলে তাঁর পথ অনুসরণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের অভিযাত্রা শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেছেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমার ভাবনা শীর্ষক প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার এ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাবনা বিষয়ক প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার আয়োজনটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। যেসব শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতায় অংশ নিল বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তাদের শিক্ষা এখন আর নির্দিষ্ট পরিম-লে থেমে থাকবে না। তাঁর আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করে পুরো বিষয়টি উপলব্ধি করার চেষ্টা করবে। স্বপ্নমাখা সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সে লক্ষ্য আজও অর্জিত হয়নি। তবে রয়ে গেছে জাতির জনকের সেই আদর্শিক ভাবনা। আর সে আদর্শ তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বৃত্তান্ত ’৭১ ফাউন্ডেশন। নেয়া হয়েছে মুক্তির অভিযাত্রা শিরোনামের কর্মসূচী। এর অংশ হিসেবে গত বছর ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমার ভাবনা’ শীর্ষক প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ক, খ ও গ এই তিন বিভাগে স্কুল-কলেজ এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিযোগিতা। শনিবার সকালে শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা প্লাজায় এ প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান করা হয়। সেরা দশজন প্রতিযোগীকে ল্যাপটপ ও স্মারক প্রদান করা হয়। একইসঙ্গে প্রতিযোগিতার বাছাইকৃত ৭১টি প্রবন্ধ নিয়ে স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করা হয়। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদ। পথে এবার নামো সাথী পথেই হবে পথ চেতনা গানের সুরে সুরে একটি ছবি এঁকের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন তিনি। এর আগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল ও অধ্যাপক আবদুল মান্নান। আলোচনা করেন প্রবন্ধ নির্বাচক কমিটির সদস্য নাট্যকার কামালউদ্দীন কবির ও যুবলীগের প্রকাশনা সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলু। শাহাবুদ্দিন আহমেদের বক্তব্যে উঠে আসে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তাঁর মূল্যায়ন এবং মুক্তিযুদ্ধে আত্মতৎপরতার নানা কথা। তিনি বলেন, অনেকগুলো বিষয় দিয়েই বঙ্গবন্ধুকে বোঝা যায়। তিনি সোনার বাংলাকে জাতীয় সঙ্গীত করেছেন। একাত্তরসহ পূর্ববর্তী আন্দোলন সংগ্রামে জাতির পক্ষে প্রবলভাবে রুখে দাঁড়িয়েছেন শত্রুর বিরুদ্ধে। বাঙালী হয়ে ওঠার বোধটিও তিনি জাগ্রত করেছেন। পিলারের মতো মজবুত ভিত্তি দিয়ে গেছেন এই দেশটাকে। শেষ পর্যন্ত নিজের রক্তটুকুও ঢেলে দিয়েছেন। তাঁর আরেক বৈশিষ্ট্য ছিল জীবনে কারও কাছে মাথানত করেননি। প্রতিযোগীদের উদ্দেশে বলেন, নতুন প্রজন্মের সন্তানরা এখন অনেক মেধাবী। এ কারণেই মনে হয় আমাদের আর কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। নিজের মুক্তিযোদ্ধা জীবনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, মেলাঘরের সেই দিনগুলো এখনও মনে পড়ে। সকালে শুধু এক চাপ, দুপুরের চায়ের সঙ্গে রুটি আর রাতে ছিল পোকাভর্তি ভাতের সঙ্গে শুঁটকির তরকারি। এভাবেই কেটেছে দিনের পর। খুব সকালে ঘুম থেকে উঠতে কষ্ট হতো। তবে ওই সকালে বাজিয়ে দেয়া হতো ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ। আর সেই ভাষণটি শুনে সব জড়তা কাটিয়ে নতুন উদ্দীপনায় বিছানা ছেড়ে উঠে যেতাম।
×