ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অভিযোগ স্কুলশিক্ষক চাচার বিরুদ্ধে

কিশোরগঞ্জে প্রতারণা করে সব সম্পত্তি লিখে নেয়ায় ভাতিজি এখন পাগল

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ৪ জানুয়ারি ২০১৫

কিশোরগঞ্জে প্রতারণা করে সব সম্পত্তি লিখে নেয়ায় ভাতিজি এখন পাগল

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ৩ জানুয়ারি ॥ জেলার করিমগঞ্জের উরদিঘী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রফিকুল ইসলামের নামে প্রতারণা করে আপন ভাতিজি সোমা আক্তারের সকল সম্পত্তি দানপত্র ও হেবা কাওলার মাধ্যমে লিখে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতারণার বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বইছে। আর সহায় সম্বল হারিয়ে এতিম সোমা এখন পাগলপ্রায়। জানা গেছে, উপজেলার গুণধর ইউনিয়নের ইন্দ্রাচুল্লি গ্রামের মৃত বাচ্চু মিয়ার মেয়ে সোমা আক্তারকে সামান্য সম্পত্তি তিন ফুফুকে ওয়ারিশ দেয়ার নামে সম্প্রতি করিমগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে যায় স্কুলশিক্ষক চাচা রফিকুল ইসলাম। সেখানে নিয়ে প্রয়াত পিতার একমাত্র ওয়ারিশসূত্রে পাওয়া ইন্দ্রাচুল্লি মৌজায় তার বাড়ি, পুকুর, নামা ও কান্দার ৫৪ শতক ভূমি ৪৫২৭ নম্বার দলিলে দানপত্র করে নিয়ে যায় দুই চাচা রফিকুল ইসলাম ও চাঁন মিয়া। যার মূল্য ধরা হয়েছে ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা। দলিলে লেখা হয়েছে, ওই সম্পত্তি সোমা তার দুই চাচা রফিকুল ইসলাম ও চাঁন মিয়াকে দান করে দিয়েছেন। এরপর সরল বিশ্বাসী সোমাকে একই কথা বলে নিকলী সাবরেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে গিয়ে সিংপুর এলাকার ১৭২ শতক ভূমি ২১৭৯ নম্বার দলিলে রফিকুল ইসলামের মা কুলসুম আক্তারের নামে হেবা দলিল করে নিয়েছেন। যার মূল্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ ১১ হাজার টাকা। সোমা আক্তার জানায়, শিশু বয়সে তিনি পিতাকে হারান। বিয়ের পর তার মা মারা যায়। স্বামীর সংসারে দুই সন্তান নিয়ে অভাব-অনটনে তার দিন কাটছে। স্বামী আব্দুস সাত্তারের সামান্য জমি দিয়ে তাদের সংসার চলে। কিছুদিন আগে চাচা রফিকুল ইসলাম স্বামীর বাড়িতে এসে তিন ফুফুকে ওয়ারিশ দিতে সাবরেজিস্ট্রি অফিসে যেতে বললে সোমা করিমগঞ্জ ও নিকলী সাবরেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে স্বাক্ষর করেন। লেখাপড়া কম জানার কারণে সে শুধু চাচা রফিকুল ইসলামের কথামতো কাগজে স্বাক্ষর দেয়। পরে সোমা জানতে পারে, পিতার ওয়ারিশসূত্রে পাওয়া তার সকল সম্পত্তি চাচা রফিক, চাঁন মিয়া ও দাদী কুলসুম আক্তারের নামে দানপত্র ও হেবা কাওলা করে নিয়েছেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামকে জিজ্ঞেসা করলে তিনি জানান, ভাতিজি সোমা খুশি মনে সম্পত্তি তাদের দান করে দিয়েছেন। অভাবী সোমা কেন আপনার মতো ধনী লোককে তার সম্পত্তি দান করে দিবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এ ব্যাপারে করিমগঞ্জ উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার নূর মোহাম্মদ শাহ’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই বলতে রাজি হননি।
×