ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ফের নিপীড়নের শঙ্কায় আফগান নারীরা

প্রকাশিত: ০২:৫৩, ৪ জানুয়ারি ২০১৫

ফের নিপীড়নের শঙ্কায় আফগান নারীরা

আফগানিস্তানের নারী এমপি শুকরিয়া বারাকজাইয়ের ওপর চালানো আত্মঘাতী হামলার দায়িত্ব এখনও কেউ স্বীকার করেনি। ১৬ নবেম্বরের ওই হামলায় তিনি বেঁচে গেলেও তিন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ২০ জন আহত হয়। তিনি বলেছেন, জঙ্গী গ্রুপের দেয়া হত্যার হুমকি সম্পর্কে আফগানিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা তাঁকে আগেই সতর্ক করেছিল। তবে এই স্পষ্টভাষী নারী অধিকার কর্মীর ওপর হামলা নিয়ে তদন্ত হলেও তার কোন ফল পাওয়া যায়নি। খবর ইয়াহু নিউজের। ৪২ বছর বয়সী বারাকজাই নারী অধিকার বিষয়ক একনিষ্ঠ কর্মী। তাই তাঁর শত্রুর অভাব নেই। বিশেষ করে আফগানিস্তানের আঞ্চলিক প্রধান বা শক্তিশালী মোড়লরা। বারাকজাই বলেছেন, আগের আফগান সরকার এবং তার পশ্চিমা পৃষ্ঠপোষক কষ্টার্জিত নারী অধিকার রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। আফগানিস্তানে তালেবান শাসনামলে তিনি যখন মেয়েদের জন্য গোপনে স্কুল চালাতেন, তখনই তিনি প্রভাবশালী হয়ে উঠেন। তিনি বলেন, আমার মতে তাদের নারী অধিকার সমর্থন কেবল মুখে মুখেই। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়। তালেবান জঙ্গীদের উৎখাত করতে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী আফগানিস্তানে আসে এবং সেখানেই অবস্থান করে। দেশটির কিছু অংশে তারা নারী অধিকার সুরক্ষাসহ পশ্চিমা ধাঁচে গণতন্ত্র গড়ে তোলে। পার্লামেন্ট ও প্রাদেশিক কাউন্সিলসহ সরকারী অফিসগুলোতে নারী কোটা থাকা বাধ্যতামূলক ছিল। ২০১৪ সালের প্রথমদিকে রক্ষণশীল সংসদ সদস্যরা প্রাদেশিক পরিষদগুলোতে সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ২০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ করা হয়। জাতিসংঘ সমর্থিত আফগানিস্তান রিসার্চ এ্যান্ড এভালুয়েশন ইউনিট তাদের এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলেছে, লাখ লাখ মেয়েশিশুদের স্কুলে যাওয়া এবং সরকারী প্রতিষ্ঠানে নারীদের অবস্থান সত্ত্বেও নারীর ক্ষমতায়নে হতাশাজনকভাবে এর প্রভাব খুবই সামান্য। আন্তর্জাতিক বাহিনী যখন পুরোপুরি চলে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে তখন আফগানরা ও বিশ্ব আজ নারীর অধিকার হারানোর শঙ্কা প্রকাশ করেছে। রবিবার আফগানিস্তানে আন্তর্জাতিক কমব্যাট মিশন আনুষ্ঠানিভাবে সমাপ্তি ঘোষণা করে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী। বিশ্বব্যাংকের উপাত্তে দেখা গেছে, আফগানিস্তান এখনও দক্ষিণ এশিয়ার দরিদ্র প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে। ১৫ বছরের উপরে উপার্জনশীল আফগান নারীর সংখ্যা মাত্র ১৬ শতাংশ। অপরদিকে বাংলাদেশে এই হার ৫৭ শতাংশ এবং ভারতে ২৭ শতাংশ। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী মেয়েদের শিক্ষার হার আফগানিস্তানে মাত্র ৩২ শতাংশ। অপরদিকে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে এই হার ৬৩ শতাংশ।
×