ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কারাতেকা ইশার আশা

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২ জানুয়ারি ২০১৫

কারাতেকা ইশার আশা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইকবাল হোসেন ব্যবসা করেন। পাশাপাশি তিনি জাতীয় কারাতে রেফারিও বটে। অনেক বছর ধরেই কারাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। একমাত্র মেয়ে ইশরাত জাহান ইশা তখন পড়ে ক্লাস টুতে। তখন থেকেই বাবার সঙ্গে কারাতের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা দেখতে যেত। অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করত বাবার কারাতে রেফারিং। এ থেকেই খেলাটির প্রতি জন্ম নেয় দুর্নিবার আকষর্ণ। একসময় জেদ ধরে খেলাটি খেলার। কিন্তু বাবার কোমল মন। যদি খেলতে গিয়ে ব্যথা পায় এইটুকু শিশুকন্যা! এ জন্য প্রথমে রাজি হননি। কিন্তু একসময় মেয়ের জেদ আর আগ্রহের কাছে হার মানতে বাধ্য হন। দিলেন অনুমতি। ইশার তো তখন সীমাহীন আনন্দ। বাবাই তখন বললেন, গুলশানে অবস্থিত সোতোকান আরিয়ানা কারাতে ক্লাবে ভর্তি হতে। বাবা-মেয়ের মনোভাব দেখে মা সেলিনা ইকবাল সুমীও কোন আপত্তি করলেন না। ২০১৪ সালের মার্চে কারাতে খেলে প্রথম সাফল্য কুড়িয়ে নেয় ইশা। যাকে বলে শুরুতেই বাজিমাত। ‘স্বাধীনতা দিবস কারাতে প্রতিযোগিতা’য় একক কাতা ইভেন্টে অংশ নিয়ে স্বর্ণপদক অর্জন করে তাক লাগিয়ে দেয় সে। এরপরের সাফল্য আসে ৩১ ডিসেম্বর। ভিকারুন্নিসা নূন স্কুলের বসুন্ধরা শাখায় ইশা চতুর্থ শ্রেণী থেকে মাত্রই উঠেছে পঞ্চম শ্রেণীতে। বয়স মাত্র ১০ পেরিয়ে ১১। তবে সে সাফল্যটা সে পেয়েছে, সেটা নতুন বছরের শেষ দিনে, তার মানে ক্লাস ফোরে পড়া অবস্থায়Ñ ৩১ ডিসেম্বরে। কী সেটা? ওইদিন মিরপুরের শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে শুরু হয় দুই দিনব্যাপী ‘মার্সেল বিজয় দিবস কারাতে প্রতিযোগিতা।’ শুরুর দিনই একক কাতায় (মেয়ে ১৪-১৬) বাংলাদেশ ইয়াং কিং কারাতে ক্লাবের রুমালী সরেনের কাছে হেরে রৌপ্য পদক পায় ইশা। তারপরও সন্তুষ্টই সে, ‘এই অর্জন নিয়ে আমি খুশি। আমার লক্ষ্য হচ্ছে আগামীতে আন্তর্জাতিক কারাতে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া এবং স্বর্ণ জেতা। দেশের জন্য কিছু জিততে চাই, চাই মা-বাবার মুখ উজ্জ্বল করতে।’ জসীম সেনসি ও জুয়েল সেনসিকে আদর্শ কারাতেকা হিসেবে মানে ইশা। হতে চায় তাঁদের মতো। এই জানুয়ারির শেষের দিকে অথবা ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে ইশার ক্লাব তাকে ব্ল্যাকবেল্ট দেবে। এ প্রসঙ্গে ইশার অনুভূতি, ‘একজন কারাতেকা হিসেবে এত অল্প বয়সেই ব্ল্যাকবেল্ট পাব ভেবে দারুণ রোমাঞ্চিত। একজন কারাতেকার অনেক কষ্ট-পরিশ্রমের ফসল হচ্ছে এই ব্ল্যাকবেল্ট।’ কারাতেকা হিসেবে যতদিন পারেন, ততদিনই এ ভুবনে বিচরণ করার ইচ্ছে আছে ইশার। কারাতে শিখে শরীর তো বটেই, মনের জোরও বাড়ে, এই খেলা সব মেয়েদেরই শেখা উচিত বলে জানায় ইশা।
×