ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রিয়ালকে উড়িয়ে চ্যালেঞ্জ কাপ মিলানের

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ১ জানুয়ারি ২০১৫

রিয়ালকে উড়িয়ে চ্যালেঞ্জ কাপ মিলানের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গোটা বছর একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। জিতে নিয়েছে চার চারটি শিরোপা। কিন্তু স্প্যানিশ পরাশক্তিদের ২০১৪ সালের শেষটা হয়েছে বড় পরাজয়ে। মঙ্গলবার রাতে দুবাইয়ের সেভেন্স স্টেডিয়ামে ক্লাব প্রীতি ম্যাচে ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলানের কাছে ৪-২ গোলে হার মানে রিয়াল মাদ্রিদ। সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও করিম বেনজেমা গোল করলেও দলের পরাজয় রোধ করতে পারেননি। মিলানের হয়ে জোড়া গোল করেন দুর্দান্ত খেলা ইতালিয়ান ফরোয়ার্ড স্টেফান এল শারাউই। একটি করে গোল করেন জেরেমি মেনেজ ও জিয়ামপাওলো পাজ্জিনি। ‘দুবাই চ্যালেঞ্জ কাপ’ নামে এই ক্লাব প্রীতি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। তাতে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের উড়িয়ে দিয়ে ট্রফি জিতে নিয়েছে ইতালির এসি মিলান। ম্যাচ শেষে ট্রফি হাতে বুনো উল্লাসে মেতে ওঠেন লোপেজ, জি জং, মুন্টারি, মেনেজরা। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে টানা ২৩ ম্যাচের জয়ের দুর্দান্ত এক রেকর্ড নিয়েই রিয়াল খেলতে এসেছিল। গত রবিবার ভ্যালেন্সিয়ার বিরুদ্ধে বড়দিনের ছুটি কাটিয়ে মাঠে ফেরা খেলোয়াড়দের কাছ থেকে আরও ভাল খেলা আশা করেছিলেন কোচ কার্লো আনচেলত্তি। ম্যাচের শুরুটা কিছুটা ধীরগতির হওয়ায় মিলান রিয়ালের উপর চেপে বসে। এই সুযোগে দুই গোল করে এগিয়ে যায় ইতালিয়ান ক্লাবটি। এই ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি রিয়াল। অথচ মৌসুমের শুরু থেকেই সময়টা ভাল যাচ্ছিল না মিলানের। ঘরোয়া ইতালিয়ান সিরি এ লীগের পয়েন্ট তালিকার সাত নম্বরে গেছে তারা। অন্যদিকে, সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ২৩ ম্যাচ জেতা রিয়াল আছে দুর্দান্ত ফর্মে। গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের নকআউট পর্বে উঠেছে তারা। স্প্যানিশ লা লিগায় আছে শীর্ষে। কিছুদিন আগেই তারা জিতেছে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। কিন্তু দুবাইয়ের সেভেন্স স্টেডিয়ামে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। ম্যাচের ২৪ মিনিটে ডিফেন্ডার নাচোর চরম ভুলে গোল খেয়ে বসে রিয়াল। ডানদিক থেকে গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে ব্যাকপাস দিতে চেয়েছিলেন স্পেনের এই ডিফেন্ডার। কিন্তু বল পেয়ে যান জেরেমি মেনেজ। কোনাকুনি শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ফরাসী এই মিডফিল্ডার। এগিয়ে যেয়ে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠা মিলান ৩১ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে। স্বদেশী মিডফিল্ডার জাকোমো বোনাভেটুরার পাস পেয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে দারুণ শটে বল জালে জড়ান ইতালিয়ান ফরোয়ার্ড শারাউই। দুই গোল পিছিয়ে পড়লেও লড়াইয়ে ফিরতে দেরি করেনি রিয়াল। ৩৫ মিনিটে ফিফা সেরা তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর দুর্দান্ত গোলে ব্যবধান ২-১ করে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড জেশের বাড়ানো বল ধরে ডি বক্সের বাইরে থেকে জোরালো কোনাকুনি শটে গোল করেন পর্তুগীজ তারকা। বিরতির পর রোনাল্ডো ও জ্যাভিয়ের হার্নান্দেজের বদলে গ্যারেথ বেল ও করিম বেনজেমাকে মাঠে নামান কোচ আনচেলত্তি। আর গোলরক্ষক নাভাসের জায়গায় আসেন ইকার ক্যাসিয়াস। কিন্তু রিয়াল ও ক্যাসিয়াসকে হতাশ করে দুর্দান্ত খেলতে থাকা মিলান আরও দুই গোল আদায় করে নেয়। ৪৯ মিনিটে ব্যবধান ৩-১ করেন এল শারাউই। স্বদেশী মিডফিল্ডার আন্দ্রে পলির পাস থেকে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন তিনি। ৫৪ মিনিটে ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেননি রিয়ালের জেশে। তার শটটি গোলপোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ৬১ মিনিটে ওয়েলস তারকা গ্যারেথ বেলের প্রচেষ্টা অসাধারণ দক্ষতায় প্রতিহত করেন মিলান গোলরক্ষক। ৭৩ মিনিটে জামপাওলো পাজ্জিনি গোল করলে মিলান এগিয়ে যায় ৪-১ গোলে। এই গোলের পর রিয়ালের হার নিশ্চিত হয়ে যায়। ফরাসী ফরোয়ার্ড এম’বায়ে নিয়াংয়ের মাপা ক্রসে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে হেডে গোলটি করেন ইতালিয়ান স্ট্রাইকার। ম্যাচের শেষ দিকে অর্থাৎ ৮৪ মিনিটে আরেকটি সান্ত¡নার গোল পায় রিয়াল। ডি বক্সের মধ্যে নাচোকে মিলানের নিয়াং ফাউল করলে পেনাল্টি দেন রেফারি। স্পট কিক থেকে গোল করেন বেনজেমা। শেষ পর্যন্ত ৪-২ গোলের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল। বিরতির পর প্রায় পুরো একাদশই পাল্টে ফেলেন রিয়াল কোচ আনচেলত্তি। তাতেও কোন লাভ হয়নি। এর ফলে টানা ২৩ ম্যাচ পর হারের স্বাদ পেল রিয়াল। তবে এটি প্রীতি ম্যাচ হওয়ায় রেকর্ডে ছেদ পড়ছে না। শনিবার লা লিগার ম্যাচ দিয়ে টানা জয়ের মিশন ফের শুরু করবে রিয়াল।
×