ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

একটি বাঁধই বদলে দিল ৩০ গ্রামের কৃষকের ভাগ্য

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৪

একটি বাঁধই বদলে দিল ৩০ গ্রামের কৃষকের ভাগ্য

সংবাদদাতা, আমতলী, ২৮ ডিসেম্বর ॥ একটি বাঁধের কারণে বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার তিন উপজেলার ৩০ গ্রামের ১০ হাজার কৃষকের ভাগ্যের চাকা বদলে গেছে। এ বছর সর্বহারা কৃষকরা আনন্দ ও উৎসবে আমন ক্ষেতের ধান কাটছে। জানা গেছে, পটুয়াখালীর কলাপাড়া ও বরগুনার আমতলী, তালতলী উপজেলার কোলঘেঁষা আন্দারমানিক এবং দোন নদীর সংযোগস্থল শারিকখালীর গ্রাম। ৭০ দশকে সাগরের লোনা পানির হাত থেকে কৃষি জমি রক্ষায় দুই নদীর সংযোগস্থলে বেড়িবাঁধ ও পাশে ক্লোজার নির্মাণ করে। ৯০ দশকে আমতলী উপজেলা পরিষদ থেকে নামমাত্র টাকা দিয়ে মাছ চাষের জন্য চাকামইয়া ইউনিয়নের বিএনপি নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মজিবুর রহমান ইজারা নেয়। পরে ইজারাদার দোন নদীসহ ক্লোজার দখল করে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে। দোন নদীতে সাগরের লোনা পানি উঠানামায় তিনি স্বেচ্ছাচারী ভূমিকা পালন করে। ফলে সাগরের লোনা পানি প্রবেশ করায় কৃষি জমি ধ্বংস হতে শুরু করে। ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আমতলী, তালতলী ও কলাপাড়ার সাধারণ কৃষক। এতে ইজারাদারের সঙ্গে স্থানীয় কৃষকের বহুবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। ২০০৬ সালে স্থানীয় মানুষ একজোট হয়ে ক্লোজারের মুখে দেয়া বাঁধ কেটে দেয়। এতে সাগর ও নদীর লোনা পানিতে কৃষি জমি বেশি লবণাক্ত হয়ে পড়ে। ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডর ও ২০০৯ সালে আইলায় কেটে দেয়া বেড়িবাঁধসহ ক্লোজার ল-ভ- হয়ে যায়। এরপরে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেলে পশ্চিম চাকামইয়া, কড়াইবাড়িয়া, তারিকাটা, কচুপাত্রা, শারিকখালী, বাদুড়গাছা, বলইবুনিয়া, চাউলাপাড়া, বেহেলা, উত্তর চাকামইয়া, আলীর বন্দর, উত্তর ঝাড়াখালী, দক্ষিণ ঝাড়াখালী, কলারং, আঙ্গারপাড়া, হেলেঞ্চাবাড়িয়া, হাড়িপাড়া, নলবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া ও দক্ষিণ চাউলাপাড়াসহ ৩০ গ্রাম লোনা পানিতে প্লাবিত হয়ে যায়। ওই সকল এলাকার ১৫ হাজার একর জমি লোনা পানিতে তলিয়ে থাকায় কৃষি কাজ পাঁচ বছর বন্ধ থাকে। ২০১১ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ৩ কোটি ৪১ হাজার টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণ করে।
×