ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাড়ে চার বছরে খুলনায় গড়ে উঠেছে ১৩৬টি শিল্প-কারখানা

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪

সাড়ে চার বছরে খুলনায় গড়ে উঠেছে ১৩৬টি শিল্প-কারখানা

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও খুলনা অঞ্চলে নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ বেড়েছে। গত সাড়ে চার বছরে খুলনা বিভাগের দশ জেলায় বেসরকারী উদ্যোগে ১৩৬টি শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। এতে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। কর্মসংস্থান হয়েছে ৩০ সহস্রাধিক মানুষের। পাইপলাইনে গ্যাসের সরবরাহ, যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত করাসহ শিল্প বিকাশের অন্তরায়সমূহ দূর করা গেলে খুলনা অঞ্চলে নতুন নতুন শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে। এ খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পাবে এবং অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। বিনিয়োগ বোর্ডের খুলনা অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত সাড়ে চার বছরে খুলনা বিভাগে বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় জুট এ্যান্ড টেক্সটাইল, ক্যাটেল, পোল্ট্রি ও ফিস ফিড, প্রকৌশল শিক্ষা, অটোমেটিক ব্রিক ফিল্ড, প্লাস্টিক প্রোডাক্ট, ক্যামিক্যাল, ডেয়ারি প্রোডাক্ট, প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং, উড এ্যান্ড পার্টিকেল বোর্ড প্রসেসিং, চিংড়ি ও মৎস্য হ্যাচারী ও মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাসহ বিভিন্ন ধরনের ১৩৬টি নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে মোট বিনিয়োগ করা হয়েছে ১ হাজার ৯৮৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে নতুন বিনিয়োগ ১ হাজার ২৫৭ কোটি ৪৪ লাখ এবং পরবর্তীতে অতিরিক্ত বিনিয়োগ করা হয়েছে ৭৩১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। সূত্র জানায়, এর আগে ২০০৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত খুলনা বিভাগে ১০৫টি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও এর অনেকগুলো চালু নেই। সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাব, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পারা, চলতি পুঁজি সঙ্কট প্রভৃতি কারণে অর্ধেকের বেশি শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। তবে আশার কথা হচ্ছে, পরবর্তীতে গড়ে ওঠা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো চালু রয়েছে। এসব শিল্প কারখানায় ৩০ হাজারের অধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। সূত্র জানায়, এর বাইরেও বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার (বিসিক) আওতায় এবং মংলা ইপিজেডেও বিনিয়োগ বেড়েছে। স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে রাজনৈতিক সহিংসতা কম থাকায় এবং শ্রমিক ও কাঁচামালের সহজলভ্যতাসহ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেকটা অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে শিল্পোদ্যোক্তারা উৎসাহিত হচ্ছেন। কিন্তু এ অঞ্চলের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। বিদ্যুত নির্ভর কল কারখানায় পণ্যের উৎপাদন খরচ অনেক বেশি হওয়ায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে। পাইপ-লাইনের সাহায্যে গ্যাসের সরবরাহ, যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ করাসহ শিল্প বিকাশের অন্তরায়সমূহ দূর করা গেলে এ অঞ্চলে বিনিয়োগ বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। নতুন নতুন শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে। এতে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বিনিয়োগ বোর্ড খুলনা বিভাগীয় অফিসের পরিচালক (উপ-সচিব) নিরঞ্জন কুমার ম-ল বলেন, খুলনা অঞ্চলে বিনিয়োগে বেসরকারী উদ্যোক্তাদের ভূমিকা প্রশংসনীয়। এ অঞ্চলে জমির দাম, শ্রমের মূল্য তুলনামূলক কম। বিভিন্ন কাঁচামালেরও সহজলভ্যতা রয়েছে। অবকাঠামো ও যোগাযোগসহ অন্যান্য সমস্যা নিরসন করা হলে দেশী-বিদেশী বড় শিল্পোদ্যোক্তরাও এ অঞ্চলে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবেন বলে তিনি মনে করেন।
×