ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সেশনজটমুক্ত করার উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সেশনজটমুক্ত করার উদ্যোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সেশনজটমুক্ত এবং পরীক্ষার ফল সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে প্রকাশের উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশীদ। এ লক্ষ্যে ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’ ঘোষণা, উত্তরপত্র প্রেরণে ডাক যোগাযোগের ওপর নির্ভরশীলতা পরিহার ও টিউটোরিয়াল, ব্যবহারিক, মৌখিক পরীক্ষার নম্বর অনলাইনে গ্রহণসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ এরই মধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। বুধবার রাজধানীর ধানম-িতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপাচার্য এসব উদ্যোগের কথা জানান। লিখিত বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, সেশনজট নিরসন এবং অধিকতর গুণ ও মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা; এ দুটি বিষয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এটিকে বিকেন্দ্রীভূত ও তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢেলে সাজানোর বিকল্প নেই। উপাচার্য বলেন, ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (পাস) ও স্নাতক (সম্মান) কোর্সের শিক্ষার্থীরা যাতে ৪ বছরে অনার্স ও ৩ বছরে ডিগ্রী পাস করতে পারে, সেজন্য প্রতিবছরের পরীক্ষার নির্দিষ্ট সময়সূচী অগ্রিম ঘোষণা করা হয়েছে। এদের এখন থেকে যারা ভর্তি হবে তাদের ক্ষেত্রে কোন সেশনজট থাকবে না। যারা বিভিন্ন বর্ষের পুরাতন শিক্ষার্থী তাদের সেশনজট নিরসনে ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নেয়া হয়েছে। এর ফলে এসব শিক্ষার্থীর সেশনজট ১ বছর থেকে ৪ মাস পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। লিখিত বক্তব্যে উপাচার্য আরও বলেন, যে কোন পরীক্ষার ফল সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে প্রকাশের লক্ষ্যে দ্বিতীয় পরীক্ষক পদ্ধতি বাতিল করে প্রধান পরীক্ষকের তত্ত্বাবধানে একক পরীক্ষা পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে ২০১২ সালের ৪র্থ বর্ষ সম্মান শ্রেণীর পরীক্ষার ফল (পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার) তিন মাসেরও কম সময়ে প্রকাশের লক্ষ্যে কাজ চলছে। পরীক্ষার ফল যাতে ন্যূনতম সময়ের মধ্যে প্রকাশিত হয় সেজন্য প্রো-উপাচার্যের (্এ্যাকাডেমিক) নেতৃত্বে বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে। ডাক যোগাযোগের ওপর নির্ভরশীলতা পরিহার করে দেশের বিভিন্ন স্থানে উত্তরপত্র ও পরীক্ষাসামগ্রী আঞ্চলিক কেন্দ্রসমূহের মাধ্যমে বিতরণ ও গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া কলেজ থেকে টিউটোরিয়াল, ব্যবহারিক, মৌখিক পরীক্ষার নম্বর অনলাইনে গ্রহণ, ওএমআর পদ্ধতির পরিবর্তে বিশেষ সফটওয়্যার তৈরি ও শিক্ষকদের ডাটাবেজ তৈরি করা হচ্ছে বলেও উপাচার্য লিখিত বক্তব্যে জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মেনে শিক্ষার মান উন্নয়নে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সর্বাত্মক চেষ্টা করবে জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে উপাচার্য আরও বলেন, স্থায়ী আঞ্চলিক কেন্দ্র নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ৬টি বিভাগীয় শহরে ভূমি অধিগ্রহণের প্রাথমিক প্রক্রিয়া এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট অধিবেশন হওয়ার কথা। অথচ ২০০৭ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত মাত্র একবার সিনেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার তথ্য দিয়ে উপাচার্য বলেন, এখন থেকে নিয়মিত সিনেট অধিবেশন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মান উন্নয়নে বিভিন্ন বিষয়ে এজেন্ডা দিয়ে আগামী ২৭ ডিসেম্বর একটি বিশেষ সিনেট অধিবেশনও আহ্বান করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২১ লাখেরও বেশি। ২ হাজার ১৫৪টি কলেজ ও বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান এর অধীন; যাতে ৬০ হাজার শিক্ষক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৪ ধরনের ডিগ্রী প্রদান করা হয়।
×