ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নিজেকে পেছনেই রাখলেন নিউয়ের

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪

নিজেকে পেছনেই রাখলেন নিউয়ের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ লিওনেল মেসি আর ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো-ফুটবলের বিস্ময়। চকমপ্রদ দুটি নাম। যেভাবে হাঁটছেন, কোথায় থামবেন তারা? ভক্ত-অনুরাগীদের সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা। একজন বার্সিলোনায় আরেকজন রিয়ালের জার্সিতে। বিশ্ব-ফুটবল মঞ্চে ছুটছেন তারা দুর্দান্ত গতিতে। অতীতের ধারাবাহিকতায় ফিফা ব্যালন ডি’অরের সংক্ষিপ্ত তালিকায় এবারও তাদের নামটা যথারীতি লেখা। তাদের সঙ্গে আছেন ম্যানুয়েল নিউয়ের। মাঠের সম্মুখভাগে থেকে মেসি-রোনাল্ডোরা গোল করে দলকে ভাসায় উচ্ছ্বাস আর উল্লাসের জোয়ারে। বিশ্বফুটবলের কোটি কোটি ভক্তÑসমর্থকও আর্জেন্টাইন আর পর্তুগীজ দুই তারকার অন্ধভক্ত। কিন্তু ম্যানুয়েল নিউয়ের? গোলপোস্টের অতন্ত্রপ্রহরী। মেসি-রোনাল্ডোর মতো স্ট্রাইকারের পায়ের বল অসাধারণ কৌশল আর দক্ষতায় রুখে দিয়ে দলকে রক্ষা করেন পরাজয়ের হাত থেকে। কিন্তু ম্যাচ শেষের হিসাব- তুলনামূলক ভাবে কিছুটা ম্লান হয়ে যায় তার অবদান। যে কারণেই জার্মানিকে ব্রাজিল বিশ্বকাপের শিরোপা উপহার দেয়ার অন্যতম নায়ক নিউয়ের মনে করেন মেসি-রোনাল্ডো যেভাবে বিশ্বফুটবলের ‘ব্র্যান্ড’ তেমনি নিজে ততটা নয়। আর আসন্ন ফিফা ব্যালন ডি’অর জয়ের প্রতিযোগিতায় এখানেই নিজেকে কিছুটা পেছনে বলে মনে করছেন বেয়ার্ন মিউনিখের এই জার্মান গোলরক্ষক। তাহলে কী ফিফা ব্যালন ডি’অরের সংক্ষিপ্ত তিনে থাকাটা খুব সহজ? মোটেও না। তাই তো সেরা তিনে থাকতে পেরেও গর্বিত বেয়ার্নের ২৮ বছর বয়সী এই জার্মান। এ বিষয়ে ম্যানুয়েল নিউয়ের বলেন, ‘ব্যালন ডি’অরের একজন প্রার্থী হতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত। নিজেদের অবস্থান থেকে এই তালিকার বাকি দু’জন খেলোয়াড় বৈশ্বিক ফ্রেন্ড। আর এই সুযোগেই সম্ভবত তারা এগিয়ে থাকবে।’ ২০১১ সালে শালকে জিরো ফোর থেকে বেয়ার্ন মিউনিখে যোগ দেন নিউয়ের। অসাধারণ পারফর্মেন্স উপহার দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন দলের সেরা তারকা হিসেবে। প্রথম মৌসুমে যোগ দেয়ার পরের বারই উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা জয়ের সুযোগ এসেছিল তার সামনে। কিন্তু নিজেদের মাঠ এ্যালিয়েঞ্জ এ্যারিনায় হতাশ হতে হয় তাদের। বেয়ার্ন ভক্ত-সমর্থকদের হৃদয়কে চুরমার করে ইউরোপ সেরার মুকুট পরে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের দল চেলসি। আর ফাইনালে সেই পরাজয়ের ক্ষত এখনও পীড়া দেয় ম্যানুয়েল নিউয়েরকে। তবে সেই সুযোগ আবার কাজে লাগাতেও আশাবাদী জার্মান তারকা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজেদের শহরে শিরোপা (উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ) জয়ের সুযোগ আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। তবে সেই শূন্যস্থান আমরা এবার পূরণ করতে চাই।’ ক্লাবের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জিততে পারেননি নিউয়ের। কিন্তু স্বপ্নের বিশ্বকাপ জয়ের গর্বিত সদস্য তিনি। এমনটা যখন মনে হয় নিউয়ের নিজেও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনালে শক্তিশালী আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে দীর্ঘ দুই যুগ পর জার্মানিকে শিরোপা উপহার দেন তারা। ব্রাজিল বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের সেই মধুর স্মৃতিগুলো ক্রমেই অতীত হওয়ার পথে। সামনে উঁকি দিচ্ছে নতুন এক চ্যালেঞ্জ। ইউরো ২০১৬। যার স্বাগতিক দেশ ফ্রান্স। জার্মানদের লক্ষ্য এখন ইউরোপ সেরার মুকুটটাও নিজেদের শোকেসে তুলতে। বিশ্বকাপ জয়ের পর বর্তমান সময়টা কঠিন যাচ্ছে জোয়াকিম লোর দলটির। পোল্যান্ড-আয়ারল্যান্ডের মতো দলও লজ্জা দেয় তাদের। তবে জার্মানদের বিশ্বাস নতুন বছরে নতুন করে গর্জে উঠবে তারা। বাতাসে গুঞ্জন ভেসে বেড়াচ্ছে ফ্রান্সের ইউরোর পরই গ্লোভস জোড়া তুলে রাখবেন নিউয়ের। কিন্তু সে রকম কোন সিদ্ধান্ত এখনও নেননি বেয়ার্ন মিউনিখের এই গোলরক্ষক। বরং যতদিন সম্ভব শীর্ষে থাকা ততদিনই জার্মানির জালকে পাহারা দেবেন তিনি। এ বিষয়ে তার অভিমত হলো, ‘সে ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত এখনও নেইনি আমি। যেহেতু আমি জার্মানির এক নাম্বার গোলরক্ষক। তাই জার্মানির অতন্ত্রপ্রহরী হিসেবে যতদিন সম্ভব খেলে যাব।’
×