ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন বেতন কাঠামো দুর্নীতি কমাবে ॥ ঢাকা চেম্বার

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪

নতুন বেতন কাঠামো দুর্নীতি কমাবে ॥ ঢাকা চেম্বার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামোকে স্বাগত জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। নতুন বেতন কাঠামো আমলাদের দুর্নীতি কমাবে বলেও তাদের অভিমত। বুধবার ডিসিসিআই মিলনায়তনে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষে নবনির্বাচিত সভাপতি হোসেন খালেদ এ মন্তব্য করেন। বাণিজ্যিক এ সংগঠনের পক্ষ বলা হয়, সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ২,২০০ কোটি টাকার নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করা হয়েছে। দুর্মূল্যের বাজারে এ ধরনের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত যুগোপযোগী, আমরা এই বেতন কাঠামোকে সাধুবাদ জানাই। নতুন বেতন কাঠামোর ফলে আমলাদের দুর্নীতি কমবে। তবে এই বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করতে ব্যবসায়ীদের ওপর নতুন করে কোন কর আরোপ করবেন না। অতীতে দেখা যায় বেতন কাঠামো বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এমনকি কার্যকরের পূর্বেই পণ্যমূল্য অযৌক্তিক হারে বৃদ্ধি করে দেয়া হয়। তাই মূল্যস্ফীতির বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে। উৎপাদনের অন্যতম উপাদান শ্রম সম্পর্কে বলতে গিয়ে সভাপতি লিখিত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিককে সস্তা শ্রমিক হিসেবে আর আখ্যা দিবেন না। আমাদের বলা উচিত বাংলাদেশ কোন সস্তা শ্রমিকের দেশ নয় বরং ‘দক্ষ, অর্ধ-দক্ষ এবং প্রতিযোগী শ্রমিক’-এর দেশ। দেশের উন্নয়নে শিল্প খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে। নতুন কারখানাগুলোতে প্রয়োজনীয় গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ দেয়ার পাশাপাশি সকলকে সার্বিক সহায়তার হাত প্রশস্ত করতে হবে। দেশের বিভিন্ন ব্যাংক মাত্রাতিরিক্ত সুদ আদায় করছে উল্লেখ করে সংগঠনের সভাপতি বলেন, শিল্প ও ব্যবসা ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো মাত্রাতিরিক্ত সুদ আদায় করছে। সুদের হার কর্পোরেট ক্ষেত্রে ১৭ থেকে ১৮ শতাংশে এবং এসএমই-এর ক্ষেত্রে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশে দাঁড়াচ্ছে। এমনকি সুদের উপর সুদ আরোপ করা হচ্ছে। ফলে শিল্পোদ্যোক্তারা ঋণ গ্রহণে পিছু হাঁটছেন। বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা বিবেচনা করে সুদহার যুক্তিসঙ্গত পর্যায়ে নির্ধারণ করতে হবে। ঋণ প্রদানের প্রক্রিয়া-পদ্ধতি সহজ করে সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার অনুরোধ করছি। সংগঠনের পক্ষে বলা হয়, আমরা করদাতার আওতা বৃদ্ধির উপর জোর দিচ্ছি। করের হার বৃদ্ধির মাধ্যমে বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করলে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সম্প্রসারিত হবে না এবং রাজস্বও বাড়বে না। ১৬ কোটি জনসংখ্যার এ দেশে মাত্র ১৪ লাখ লোকের আয়কর সনদ আছে যার থেকে ৭ লাখ লোক আয়কর প্রদান করছেন। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে কর হার বৃদ্ধি না করে সর্বাধিক গুরুত্ব সহকারে করদাতার আওতা বৃদ্ধি করার সুপারিশ করছি। বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধির উপর জোর দিয়ে বলা হয়, শীঘ্রই দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগের সার্বিক অবস্থার পরিবর্তন না ঘটলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে। যানজটের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের এক গবেষণার বরাত দিয়ে বলা হয় প্রতিদিন ৩২ লাখ ঘণ্টা বাণিজ্যিক সময় (বিজনেস আওয়ার) এবং বছরে প্রায় ১১ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকার জ্বালানি নষ্ট হচ্ছে। শুধু রাজধানীতে যানজটের কারণে বছরে ২৭ হাজার কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। তাই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যে কোন মূল্যে যানজট কমাতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে ডিসিসিআই’র আগামী বছরের কর্ম পরিকল্পনা সম্পর্কে বলা হয়, ৬ষ্ঠ পঞ্চ বার্ষিকী পরিকল্পনায় ২০১৫ সালের মধ্যে ৬১.৫ মিলিয়ন কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ডিসিসিআই ২০০০ নতুন উদ্যোক্তা তৈরির মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ঢাকা চেম্বারকে আধুনিক করতে গ্রীন চেম্বার এবং ই চেম্বার এ রূপান্তরিত করা হবে। চেম্বারের সকল কার্যক্রম অনলাইনের আওতায় আনা হবে বলে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ওসমান গনি, হুমায়ুন রশিদ, সবুর খান, হোসেন আক্তার, আলহাজ আবদুস সালাম, আসিফ এ চৌধুরী প্রমুখ।
×