ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পদাতিকের ম্যাকবেথ ও জন্মাঙ্ক মঞ্চায়ন

কলকাতার গঙ্গা যমুনা নাট্যোৎসবে

প্রকাশিত: ০৫:০০, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪

কলকাতার গঙ্গা যমুনা নাট্যোৎসবে

সংষ্কৃতি ডেস্ক ॥ অনীক নাট্যদলের আয়োজনে কলকাতায় গঙ্গা যমুনা নাট্যোৎসবে আগামী ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর পদাতিক নাট্য সংসদের ‘ম্যাকবেথ’ নাটকের দুটি মঞ্চায়ন এবং ৩০ ডিসেম্বর ‘জন্মাঙ্ক’ নাটকের একটি মঞ্চায়ন হবে। এর মধ্যে ২৮ ডিসেম্বর কলকাতার নিরঞ্জন সদন মঞ্চে এবং ২৯ ডিসেম্বর একাডেমি মঞ্চে ‘ম্যাকবেথ’ নাটকের দুটি মঞ্চায়ন হবে। শেক্সপীয়ারের ‘ম্যাকবেথ’ নাটকটি অনুবাদ করেছেন সৈয়দ শামসুল হক। নির্দেশনা দিয়েছেন সুদীপ চক্রবর্তী। নাটকে ম্যাকবেথ চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাখাওয়াত হোসেন শিমুল ও লেডি ম্যাকবেথ চরিত্রে শামছি আরা সায়েকা। এছাড়া আরও অভিনয় করেছেন হামিদুর রহমান পাপ্পু, ইকরাম, শুভ, জনি, রাসেল, ওয়ালিদ, জুয়েল, জয়, তন্ময়, নাজিম ও মশিউর রহমান। নাটকের পোশাক পরিকল্পনা করেছেন ওয়াহিদা মল্লিক জলি, সঙ্গীত শিশির রহমান, আলো আতিকুল ইসলাম জয় ও মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন সুদীপ চক্রবর্তী। ম্যাকবেথ নাটকের কাহিনীতে দেখা যায় স্কটিশ সেনাপতি ম্যাকবেথ যুদ্ধ জয় করে ফিরে আসার পথে একদল রহস্যময় শক্তি তাদের পথরোধ করে ভবিষ্যৎবাণী উচ্চারণ করে বলেন, ম্যাকবেথ হবে কডোর প্রধান ও পরে রাজা এবং ব্যাংকো হবে রাজার আদি পিতা। ম্যাকবেথের চিঠি পেয়ে লেডি ম্যাকবেথ জানতে পারে বিস্তারিত, তার ভেতর উচ্চাকাক্সক্ষা জন্ম নেয়। ম্যাকবেথকে প্ররোচিত করে রাজা ডানকানকে হত্যার। নিজ বাড়িতে রাজাকে হত্যা করে সিংহাসনে বসেন ম্যাকবেথ। রাজ হত্যার দায় কৌশলে এড়াতে একে একে হত্যা করেন ডানকানের দেহরক্ষীরা, ব্যাংকো, ম্যাকডাফের স্ত্রী-সন্তানরা। রহস্যময় শক্তিদের ভ্রান্তিতে ম্যাকবেথ ভুলে যায় যে ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। লেডি ম্যাকবেথ অনুতাপে দগ্ধ ও অসুস্থ হয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেন। ইংল্যান্ডের রাজার সহায়তায় নিজ রাজ্য পুনরুদ্ধারে ডানকান পুত্রদ্বয় ম্যালকম ও ডোনালবেইন ম্যাকবেথ বাহিনীকে পরাজিত করে এবং ম্যাকডাফের অস্ত্রের আঘাতে সমাপ্তি ঘটে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে থাকা এক স্বেচ্ছাচারী ম্যাকবেথের। এছাড়া আগামী ৩০ ডিসেম্বর গঙ্গা যমুনা নাট্যোৎসবের একাডেমি মঞ্চে ‘জন্মাঙ্ক’ নাটকের মঞ্চায়ন হবে। জন্মাঙ্ক নাটকটি রচনা করেছেন নাসরিন মুস্তাফা। নির্দেশনায় মীর মেহেবুব আলম নাহিদ। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মসিউর রহমান, শাখাওয়াত হেসেন শিমুল, ওয়ালিদ, জয়, অনিক, জিনিয়া, কামরুল, জনি, ইকরাম, শুভ, সুমন, তন্ময়, সিমি ও চমক। নাটকের আলোক পরিকল্পনায় ফয়েজ জহির, মঞ্চ ও পোশাক আলী মুহাম্মদ মুকুল, সঙ্গীত তপন কুমার। ‘জন্মাঙ্ক’ নাটকের কাহিনীতে দেখা যায় সমুদ্র বেষ্ঠিত এক জনপদের বেঁচে থাকার যে স্বার্থপরতা পরিলক্ষিত হয় তা আমাদের আহত করে এবং একই সঙ্গে মানবতাকে ভূলুণ্ঠিত করে। প্রকৃতির রুদ্র রূপে ভীত সে জনপদ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে এবং বাহুশক্তি খাটিয়ে দুর্বলকে নিশ্চিত মৃত্যুকূপে ঠেলে দেয়া হয়। আপাতদৃষ্টিতে সবল প্রাণীটি প্রাণে বেঁচে গেলেও তাদের জীবনের ছন্দপতন ঘটে, তার নিজেদের সঙ্গীহারা ভাবতে শুরু করে। সময়ের আবর্তনে তাদের মধ্যে মানবতাবোধ জাগ্রত হয়। ঘটনাক্রমে একটি ভ্রƒণকে বাঁচিয়ে রাখার প্রত্যয়ে তাদের মধ্যে পারস্পরিক ঐক্যবোধ তৈরি হয়। নিজেকে বিসর্জন দিতে প্রস্তুত থাকে। এভাবে একটি জনগোষ্ঠীর মানবিক হয়ে ওঠার প্রয়াস এ নাট্যাখানে লক্ষ্য করা যায়।
×