ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আজ বড়দিন

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪

আজ বড়দিন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ ২৫ ডিসেম্বর শুভ বড়দিন, ক্রিসমাস ডে। খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বী-দের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্ট এ দিন কুমারী মাতা মেরীর কোলে ঘর আলো করে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর স্মরণে সারাবিশ্বের খ্রীস্টান অনুসারীরা আজকের এই দিনকে বিশেষ দিন হিসেবে উদযাপন করে থাকে। এ দিনের অপেক্ষায় তাদের সারাটি বছর কাটে। ডিসেম্বর মাস শুরু হলেই এ ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে উৎসবের সাড়া পড়ে যায়। ঘরবাড়ি নতুন করে সাজাতে শুরু করেন। নতুন পোশাক কেনাকাটার ধুম পড়ে যায়। শুভেচ্ছা কার্ড বিনিময় করেন। সারাবিশ্বের ন্যায় আজ বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদায় পালিত হবে শুভ বড়দিন। দিনটি উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচী নেয়া হয়েছে। বড়দিন উপলক্ষে শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। আজ সরকারী ছুটি। বেতার টেলিভিশনেও এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। খ্রীস্টান ধর্মগুরুদের বিশ্বাস অনুযায়ী আজ থেকে ২ হাজার ১৪ বছর আগে এই শুভদিনে পৃথিবীকে আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন যিশুখ্রিস্ট। বেথেলহেমের এক গোয়ালঘরে কুমারী মাতা মেরীর কোলে জন্ম হয়েছিল যিশুর। খ্রিস্ট ধর্মানুসারীরা বিশ্বাস করেন কোন পুরুষের সহবাস ছাড়াই যিশুখ্রিস্টের জন্ম। সেই অর্থে তিনি ঈশ্বরের পুত্র। সৃষ্টিকর্তার অপার মহিমায় সেখান হতেই বিকশিত হয় মুক্তির এই আলোর দিশারী। যাঁর স্পর্শে পাপের আবর্তে নিমজ্জিত থাকা মানুষের অন্তরে এনে দেয় শান্তির পরশ। উৎসবমুখর পরিবেশে দিনটি উদযাপন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশের খ্রীস্টান সম্প্রদায়। ইতোমধ্যে বড়দিন পালনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে দেশের সব গির্জা ও বড় হোটেল রঙিন বিজলীবাতি আর ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। খ্রীস্টান ধর্মে বিশ্বাসীদের অনেকের ঘরেই বসানো হয়েছে প্রতীকী গোশালা। বেথেলহেমের গরিব কাঠুরিয়ার গোয়ালঘরেই যিশুখ্রিস্টের জন্ম। সেই ঘটনা স্মরণ করে প্রত্যেক গির্জা এবং খ্রীস্টান অনুসারীদের বাড়িতে ধর্মীয় আবহ সৃষ্টি করতেই গোশালা স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া এ দিন উদযাপনের অন্যতম বিশেষ আয়োজন কেক কাটা। রাতে কেক কাটা এবং প্রার্থনা সভার মধ্য দিয়েই শুরু হয়েছে বড়দিনের আনুষ্ঠানিকতা। কঠোর নিরাপত্তা ॥ আজ খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ উপলক্ষ্যে সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে রাখা হয়েছে খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়গুলো। চার্চগুলোর প্রবেশপথে ও আশপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য। চার্চের প্রবেশপথে আর্চওয়ে মেটাল ডিটেক্টর ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হয়েছে গোপন মুভি ক্যামেরা ও সিসিটিভি। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর ভেতরে ও প্রবেশ পথগুলোতে বসছে শতাধিক চেকপোস্ট। চার্চের আশপাশের ছাদে বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। একাধিক গোয়েন্দা দল ঢাকার চার্চগুলোসহ আশপাশের এলাকায় তৎপর থাকছে। এছাড়া মহিলা গোয়েন্দা পুলিশেরও একাধিক দল থাকছে চার্চগুলোতে। আপদকালীন মুহূর্ত মোকাবেলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, সোয়াট ও ক্রাইসিস রেসপন্স টিম ছাড়াও একাধিক সিভিল টিম থাকছে। এদিকে র‌্যাব গত মঙ্গলবার থেকেই সারাদেশে থাকা খ্রীস্টান ধর্মালম্বীদের চার্চগুলোতে নিরাপত্তা দিচ্ছে। অতিরিক্ত র‌্যাব সদস্য মোতায়েনের পাশাপাশি সাদা পোশাকে র‌্যাবের গোয়েন্দারা চার্চসহ আশপাশের এলাকার ওপর নজরদারি করেছে। খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের উপাসনালয়, কবরস্থান ও বড়দিন উদ্যাপন অনুষ্ঠানের স্থানসমূহে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ধর্মযাজক, বড়দিন উদ্যাপন কমিটির সদস্যদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বম্ব ডিসপোজাল টিম ও ডগ সুইপিং স্কোয়াড সর্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রয়োজনীয় নিদের্শনা দিয়েছে। যে কোন ধরনের অরাজক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পুলিশ ও র‌্যাব প্রস্তুত রয়েছে বলে পুলিশ মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার জানিয়েছেন।
×