ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশ্বে এখন শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশ্বে এখন শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও জনগণের সেবায় নিঃস্বার্থভাবে কাজ করতে সেনাবাহিনীর সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত তরুণ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সুমহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত সেনাবাহিনী আমাদের সকলের গর্ব ও অহঙ্কার। জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও দেশের সম্মান রক্ষা করাই হবে সেনা সদস্যদের জীবনের প্রধান ব্রত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির (বিএমএ) প্যারেড গ্রাউন্ডে ৭১তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্স ও ৪২তম বিশেষ কোর্সে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রদত্ত ভাষণে এ আহ্বান জানান। সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আপনাদের সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। নিঃস্বার্থভাবে দেশ ও জনগণের সেবা করতে হবে। এই কাজে কখনই পিছপা হবেন না। আজ থেকে মাতৃভূমিকে রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের ওপর অর্পিত হলো। এ দায়িত্ব পালনে সদা সতর্ক ও প্রস্তুত থাকতে হবে। দেশে-বিদেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাহিনী দক্ষ ও পেশাদারিত্বের জন্য সকল মহলের প্রশংসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। বিশ্বের যে কোন এলাকার জনগণ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে জানে। দেশের জনগণের প্রতি দায়িত্বশীলতা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা দেশের জনগণেরই একটি অংশ। আপনারা গণমানুষের সুখ-দুঃখ এবং হাসিকান্নার অংশীদার। সেনাবাহিনী সব সময় দেশের যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-ে সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক্ষেত্রে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি প্রতিষ্ঠা, সড়ক, ফ্লাইওভার, অবকাঠামো নির্মাণ, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও ট্রাফিক জ্যাম নিরসন, হাতিরঝিল প্রকল্প বাস্তবায়ন, ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট তৈরিতে সেনাবাহিনীর দক্ষতা ও সাফল্যের বিষয়টি তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের মিশনে বাংলাদেশ সর্বোচ্চসংখ্যক সৈন্য পাঠিয়ে বিশ্বশান্তি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যে কোন মূল্যে এ সেনাবাহিনীর সুনাম রক্ষায় যথাযথ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বিএমএ প্যারেড গ্রাউন্ডে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। এর আগে তিনি বিএমএ প্যারেড গ্রাউন্ডে এসে পৌঁছালে সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া, জেনারেল অফিসার কমান্ডিং লে. জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী বীর বিক্রম, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল সাব্বির আহমেদ এবং বিএমএ কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন বিদেশী মিশনের কূটনীতিক এবং সামরিক অসামরিক কর্মকর্তা ও সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের অভিভাবকরা কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন। বিএমএ সূত্রে জানানো হয়, এ কুচকাওয়াজের মাধ্যমে মোট ১৭৬ ক্যাডেট সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। এর মধ্যে ৭১তম বিএমএ লং কোর্সে ১৪৫ পুরুষ ও ১৪ মহিলা এবং ৪২তম বিএমএ স্পেশাল কোর্সে ১৩ পুরুষ ও ৪ মহিলা ক্যাডেট রয়েছেন। ব্যাটালিয়ন সিনিয়র আন্ডার অফিসার খালেদ হোসাইন ৩১তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্সে সেরা চৌকস বিবেচিত হন এবং ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন। অপরদিকে, সামরিক বিষয়ে অন্যান্য কৃতিত্বের জন্য ‘সেনাবাহিনীপ্রধানের স্বর্ণপদক’ লাভ করেন ব্যাটালিয়ন জুনিয়র আন্ডার অফিসার এসএম জিয়াউল ইসলাম। এছাড়া বিভিন্ন আন্তঃবাহিনী প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় রউফ কোম্পানিকে শীতকালীন টার্মের জন্য ‘বিএমএ পতাকা’ প্রদান করা হয়। ক্যাডেটগণ পরে আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ করেন এবং পিতামাতা ও অভিভাবকরা নবীন অফিসারদের র‌্যাঙ্ক ব্যাজ পরিয়ে দেন।
×