ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বোকো হারামের পাপ

প্রকাশিত: ০৩:১২, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৪

বোকো হারামের পাপ

বোকো হাউসা ভাষার শব্দ, অর্থ পশ্চিমা শিক্ষা। আর হারাম আরবী শব্দ, অর্থ পাপ। বোকো হারাম মানে পশ্চিমা শিক্ষা পাপ। আর এই পাপমোচনে সশস্ত্র জঙ্গীপনায় নেমেছে তালেবান, আলকায়দার উত্তরসূরি বা শাখা সংগঠন নাইজিরিয়ার বোকো হারাম। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠা করা বলা হলেও মূলত নিজ দেশসহ অন্য দেশের বিদেশীদের হত্যা করা, অপহরণ করে মুুক্তিপণ আদায় করা, স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের হত্যাসহ অপহরণ, নারীদের অবমাননা, ধর্মের নামে অধর্মচারণই তারা করে যাচ্ছে। নাইজিরিয়াভিত্তিক জঙ্গী সংগঠনটির মুখপাত্র আবু কাকার ভাষ্যই হচ্ছে, ‘যখন আমরা দেখব, সবকিছু আল্লাহর নির্দেশমতো করা হচ্ছে এবং আমাদের সঙ্গীদের কারাগার থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে, একমাত্র তখনই আমরা আমাদের অস্ত্র একপাশে সরিয়ে রাখব। কিন্তু আমরা তা ত্যাগ করব না। কারণ ইসলামী বিধান অনুসারে অস্ত্র একপাশে সরিয়ে রাখা যায়, ত্যাগ করা যাবে না।’ এরা শান্তির ধর্ম ইসলামে বিশ্বাস করে, এমনটা বলা যাবে না বরং অশান্তির বিশ্ব গড়ে তোলাটাই এদের ধর্ম। এদের শিক্ষা-দীক্ষা বলতে তেমন কিছু নেই। আফ্রিকায় শান্তি বিনষ্টকারী দলটি আলকায়দার পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে বেড়ে উঠেছে। সৌদি আরব ও যুক্তরাজ্যের কতিপয় গোষ্ঠী বোকো হারামের তহবিল সংগ্রহ করে থাকে। এছাড়া অপহরণ, ব্যাংক ডাকাতির মাধ্যমেও অর্থ সংগ্রহ করা হয়। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত বোকো হারামের দখলে নাইজিরিয়ার অনেকখানি এলাকা। এরা দেশটির খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের ওপর একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত হাজার ১৫ মানুষকে তারা হত্যা করেছে। আল কায়দার মতো পশ্চিমা শিক্ষা-সংস্কৃতির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে পুলিশ নিধন করছে। তারা আল কায়দার মতো আদর্শ বাস্তবায়নে চরমপন্থী। আত্মঘাতী বোমা হামলা তাদের প্রধান যুদ্ধপদ্ধতি। এরা প্রশিক্ষণ পেয়েছে সোমালিয়া, আফগানিস্তানে। আল কায়দা ও তালেবান অনুপ্রাণিত বোকো হারামদের পথ ধরেছে পাকিস্তানের জঙ্গী সংগঠনগুলো। স্কুলে শিক্ষার্থীদের হত্যা করে তারা নিজেদের অবস্থান জানান দিয়েছে। বাংলাদেশেও জঙ্গীবাদের তৎপরতা বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে ব্যাপক হারে বেড়েছিল। এক সঙ্গে ৬৩ জেলায় বোমা হামলা ঘটিয়েছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাও তাদের দ্বারা ঘটিয়েছে তৎকালীন শাসকরা। বর্তমান সরকার জঙ্গীবাদ নির্মূলে ব্যাপক পদক্ষেপ নিলেও তাদের তৎপরতা থেমে থাকেনি। বাংলাদেশে বোকো হারামের পাপ থেকে মুক্ত করার জন্য জনগণকে সচেতন করা সর্বাগ্রে জরুরী।
×