ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিরিজ ২-০ করল অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২১ ডিসেম্বর ২০১৪

সিরিজ ২-০ করল অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এ্যাডিলেডের পর ব্রিসবেনেও হারল সফরকারী ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং ব্যর্থতায় মহেন্দ্র সিং ধোনির দল এবার চারদিনেই পরাজয় বরণ করল ৪ উইকেটের ব্যবধানে। বিপরীতে অধিনায়ক হিসেবে নিজের অভিষেক ম্যাচে জয় তুলে নেয়ার পাশাপাশি ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠল স্বাগতিক তারকা স্টিভেন স্মিতের হাতে। সৌজন্যে চার টেস্টের সিরিজে ২-০তে এগিয়ে গেল স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। দারুণ জয়ে উচ্ছসিত স্মিথ সতীর্থদের প্রশংসায় ভাসিয়েছেন, একই সঙ্গে তৃতীয় ম্যাচেও এ্যাগ্রেসিভ নেপুণ্য অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি। অপরদিকে টানা দুই হারে কোণঠাসা ভারত অধিনায়ক ধোনি রয়েছেন অস্বস্তিতে। তবে ২-০ মানে সিরিজ শেষ নয়, বলে সতীর্থদের ঘুরে দাঁড়ানোর ডাক দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার ‘বক্সিং ডে’তে শুরু হবে পরের ম্যাচ, সিরিজ বাঁচিয়ে রাখতে যেখানে জিততেই হবে ক্রিকেট-মোড়ল ভারতকে! ব্রিসবেনে মূলত নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং ব্যর্থতাই ডুবিয়েছে ধোনিদের। অসি পেসারদের তোপের মুখে ১ উইকেটে ৭১ রান নিয়ে শুরু করা ভারত শনিবার অলআউট হয় মাত্র ২২৪ রানে! ১২৮ রানের জয়ের লক্ষ্যে নেমে অবশ্য স্বাগতিকরাও পড়ে অস্বস্তির মুখে। ওপেনার ক্রিস রজার্সের হাফ সেঞ্চুরির ওপর ভর করে ২৩.১ ওভারে জয়ের বন্দরে নোঙর করলেও ৬ উইকেট হারিয়ে বসে তারা! অল্প পুঁজি সত্ত্বেও সফরকারী দুই পেসার ইশান্ত শর্মা ও উমেশ যাদব কাল লজ্জার আগে ক্ষণিকের উত্তেজনা তৈরি করেন। প্রথম ইনিংসে ভারতের ৪০৮ রানের জবাবে ৫০৫ রান করে অস্ট্রেলিয়া। ভারত তো বটেই, ১৯৮৮ সালের পর কোন বিদেশী দল ব্রিসবেনের গাব্বায় স্বাগতিকদের হারাতে পারেনি, সেই ধারা অব্যাহত রাখলেন তরুণ সেনাপতি স্টিভেন স্মিথ। এ্যাগ্রেসিভ ক্রিকেটের অঙ্গীকার পূরণ করেছে ধোনির ভারতও, তবে ম্যাচটি তারা হেরেছে লজ্জাজনকভাবে। লজ্জার মাত্রাটা বোঝা যায় একটি রেকর্ড দেখে, টেস্টের ইতিহাসে প্রথম ইনিংসে ৪শ’র ওপরে রান তুলে চার দিনেই হেরে যাওয়ার মাত্র চতুর্থ ঘটনা এটি! টপঅর্ডারের মূল চার ভরসা বিরাট কোহলি, অজিঙ্কা রাহানে, রোহিত শর্মা ও অধিনায়ক ধোনি মিলে করতে পেরেছেন মোটে ১১Ñ সফরে এই প্রথম ভারত যেন তাদের ব্যাটিং-লজ্জার ইতিহাসটা পুরোপুর ফিরিয়ে আনে। ফল দ্বিতীয় ইনিংসে ২২৪ রানে অলআউট হয়ে অস্ট্রেলিয়াকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সুযোগটা হেলায় নষ্ট করে ক্রিকেট-মোড়লরা। অস্ট্রেলিয়ার সামনে ১২৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছেলেখেলারই নামান্তর। রানে ফেরা ওপেনার শিখর ধাওয়ানের ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৮১ রান। কিন্তু সতীর্থদের কাছ থেকে সাহায্য না পেয়ে তিনি ছিলেন অনেকটা অসহায়। চেতেশ্বর পুজারার ৪৩ ছাড়া আর কেউ রান পাননি। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩০ নয় নম্বরে নামা উমেষ যাদবের! ৮৭ রানের মধ্যেই প্রথম ৫ উইকেট হারিয়ে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে সফরকারীরা। এ নিয়ে টানা নয় ইনিংসে টপঅর্ডারের পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারানোর লজ্জায় নাম লেখালো ধোনির দল। সিরিজ শুরুর আগে ভারত যাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভয়ে ছিল সেই মিচেল জনসন নেন ৪ উইকেট। সঙ্গে প্রথম ইনিংসে ৮৮ রানে দুর্দান্ত ইনিংসে দারুণ অলরাউন্ড পারফর্মেন্স তার। আর গিনিপিগ টার্গেটে অস্ট্রেলিয়াকে নাড়িয়ে দেয়ার রূপকার ইশান্ত ৩ ও যাদব নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় কনিষ্ঠ অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ তার নেতৃত্বের অভিষেকেই জয়ে সন্তুষ্ট। সর্বোপরি ৩৬ ও ব্রিসবেনে ৩৯ বছর পর এমন কীর্তি গড়েও সতীর্থদের প্রশংসা করেছেন তিনি। ‘জনসন, রজার্স চমৎকার খেলেছে। বাকিদের প্রচেষ্টা ছিল দারুণ। অধিনায়ক জীবনের শুরুতেই এই সাফল্য আমাকে অনুপ্রেরণা যোগাবে। ‘বক্সিং ডে’ টেস্টেও এমন আক্রমণাত্মক খেলা অব্যাহত রাখতে চাই।’ বলেন প্রথম ইনিংসে ১৩৩ রানর দুরন্ত ইনিংস খেলে নায়ক বনে যাওয়া অধিনায়ক স্মিথ। অন্যদিকে চারদিনেই হারে অস্বস্তি প্রকাশ করে ভারত অধিনায়ক ধোনি বলেন, ‘ছেলেরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। কিন্তু সত্যি বলতে আমাদের ভেতরের পরিস্থিতি ভাল ছিল না। এমন কি আজ বিরাট কোহলি, না ধাওয়ানকে নামানো হবে, সকালেও আমরা সেটি স্থির হতে পারিনি! ধাওয়ানকে ব্যথা নিয়ে নামতে হওয়াটা আমাদের জন্য নেতিবাচক।’ ড্রেসিং রুমের পরিবেশ ভাল নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
×