ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মুন্সীগঞ্জে সালিশ বিচারে ধর্ষিতার ৫০ হাজার টাকা জরিমানা!

প্রকাশিত: ০৩:৪৭, ২১ ডিসেম্বর ২০১৪

মুন্সীগঞ্জে সালিশ বিচারে ধর্ষিতার ৫০ হাজার টাকা জরিমানা!

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ মীমাংসায় এক ধর্ষিতাকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার রাঢ়িখাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সালিশ মীমাংসায় ধর্ষককে এক লাখ টাকা ও ধর্ষিতাকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। স্থানীয়রা জানান, রাঢ়িখাল ইউনিয়নের নতুনবাজার এলাকার গ্রাম্য ডাক্তার দুই সন্তানের জনক মফিজুল ইসলাম গত ৪ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে ওই এলাকার এক গৃহবধূকে ফাঁদে ফেলে বালাসুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় ধর্ষিতার চিৎকারে স্থানীয় দুই যুবক এসে ধর্ষিতা ওই নারীকে উদ্ধার করে। এ সময় মফিজুল দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে ধর্ষিতাকে তার বাবার জিম্মায় দেয়া হয়। ধর্ষিতার বাবা নতুনবাজার এলাকার গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা দরিদ্র ভ্যানচালক ওই দিনই স্থানীয় সালিশদারদের পরামর্শে বিষয়টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদকে জানান। চেয়ারম্যান ঘটনাটি বিচার-সালিশ করে মীমাংসা করে দেয়ার আশ্বাস দেন। পরে গত ৯ ডিসেম্বর চেয়ারম্যান স্থানীয় সালিশদারদের নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ মীমাংসায় বসেন। সালিশদাররা ঘটনার সত্যতা পেয়েও টাকা-পয়সা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় ওই দিন কোন সিদ্ধান্ত না দিয়ে উঠে যায়। এরপর ভাগ্যকুল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ সরদারের আত্মীয় হওয়ায় তার প্রভাবে মফিজুল সালিশ মীমাংসায় বসতে টালবাহানা শুরু করে বলে স্থানীয়রা জানান। পরে শনিবার চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ, রাঢ়িখাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসু মোল্লা, ইউপি সদস্য আঃ রব মেম্বার, আঃ আউয়াল, কালাম, নাজমা বেগম, সালিশদার হানিফ শেখ, জালাল শিকদারসহ আরও কয়েকজন মিলে ধর্ষক মফিজুলকে নতুনবাজার এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়ে এক লাখ টাকা জরিমানা করে। অন্যদিকে ধর্ষিতারও দোষ রয়েছে উল্লেখ করে তাকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ধর্ষিতার বাবা জানান, একদিকে তার মেয়ের সংসার ভেঙ্গে যাচ্ছে, অপরদিকে জরিমানার টাকা দিতে হবে জেনে তিনি অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছেন। তাছাড়া মেয়ের কী দোষ তা তিনি বুঝতে পারছেন না।
×