ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

১১ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সম্মাননা

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪

১১ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সম্মাননা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মহান মুক্তিযুদ্ধে শতকরা ১ ভাগেরও কম শহীদের ভাগ্যে কবরের মাটি জুটেছিল। বেশিরভাগ শহীদের লাশ পানিতে ভেসেছে। তাঁদের জায়গা হয়েছে বধ্যভূমিতে, লাশের স্তূপে। জানাজা লাভের সৌভাগ্য তাঁদের হয়নি। অথচ সেই মুক্তিসংগ্রামের বিরোধিতাকারী, পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর দোসর, রাজাকারকুল শিরোমণি গোলাম আযম স্বাধীন বাংলাদেশে মৃত্যুর পর জানাজা পেয়েছে। কবরের মাটিও পেয়েছে। জাতি হিসেবে এ ঘটনা আমাদের জন্য লজ্জার। এজন্য জাতির কাছে আমাদের ক্ষমা চাইতে হবে। বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের পুনর্মিলনী ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফাউন্ডেশন ও শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মন্ত্রী বলেন, মৃত্যুদ- ছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের আর কোন শাস্তি হতে পারে না। দেশের মুক্তিকামী মানুষ মনে করে, মৃত্যুদ-ই তাদের ঘৃণ্যতম অপরাধের সর্বনিম্ন শাস্তি। এ দেশের মাটিতে গোলাম আযমের জানাজা হয়েছে। লাখো শহীদের রক্তেভেজা পবিত্র মাটিতে ঠাঁই হয়েছে এই ঘৃণ্য রাজাকারের। সরকারে থেকেও আমি মনে করি এজন্য জাতির কাছে আমাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। মুক্তিযোদ্ধা ও শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইমামুল কবীর শান্তর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আব্দুুল নাসের চৌধুরী, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক ও সাংবাদিক কামাল লোহানী। বক্তৃতাপর্ব শেষে অনুষ্ঠানে ১১ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে সম্মাননা হিসেবে ক্রেস্ট, উত্তরীয় ও উপহারসামগ্রী দেয়া হয়। এছাড়া শিল্পী শাহীন সামাদ ও ডালিয়া নওশীনকে দেয়া হয় শব্দ সৈনিকের সম্মাননা। এর আগে সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় পবিত্র কোরান থেকে তেলাওয়াত ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা ও নাট্য ব্যক্তিত্ব মজিবুর রহমান দিলু। এরপর ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর রণাঙ্গন থেকে ফেরার পথে বুড়িগঙ্গায় নৌকাডুবিতে শহীদ ১১ মুক্তিযোদ্ধার ওপর ৩৫ মিনিটের একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। বক্তৃতা ও সম্মাননা পর্ব শেষে শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিত শিল্পীদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পুরো অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ফিরোজ আহমেদ ইকবাল।
×