ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৪৩ বছরেও বীর প্রতীকের সম্মান পাননি

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪

৪৩ বছরেও বীর প্রতীকের সম্মান পাননি

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার আব্দুল শিকদার ডাঙ্গী গ্রামের মৃত ওয়াখিল উদ্দিন মোল্যার পুত্র সুবেদার (অব) মুক্তিযোদ্ধা মাজহারুল হক (৯৫) স্বাধীনতার পর আজও বীরপ্রতীকের সম্মান পাননি। ৪৩ বছর ধরে বীরপ্রতীকের নথির বোঝা নিয়ে তিনি শুধু সংশ্লিষ্ট দফতরে ছোটাছুটি করে চলেছেন। কিন্তু কর্মকর্তাদের অনীহার শিকার মাজহার বীরপ্রতীকের সমস্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর সরকারের এক বিশেষ গ্যাজেট নোটিফিকেশনে মহান মুক্তিযুদ্ধে উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বসূচক খেতাবে ভূষিত করেন। গ্যাজেটে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মধ্যে হতে ‘বীরপ্রতীক’ খেতাবে ভূষিতদের তালিকায় ১৭৮ নং ক্রমিকে মাজহারুল হক, ই- বেঙ্গল লিপিবদ্ধ আছে। বইটি রফিকুল ইসলাম লিখিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধের রজতজয়ন্তি উপলক্ষে ডিসেম্বর ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত। এছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা রজতজয়ন্তি স্মারক গ্রন্থের ১৩১ পৃষ্ঠায় মাজহারুল হক বীরপ্রতীক লিপিবদ্ধ থাকলেও ৪৩ বছরে সম্মান পাননি বলে হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে মরণপণ যুদ্ধে আমার হাতে- পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছে, পাক হায়েনাদের পরাস্ত করে স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশটি আবার দেশীয় হায়েনাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছিল। পাক বাহিনীর নির্মম অত্যাচার হতে বাঙালী মুক্ত হলেও দেশীয় আমলা নামক হায়েনা আমার ন্যায্য অধিকার গ্রাস করেছে। জানা যায়, সুবেদার (অব) মাজহারুল হক সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হিসেবে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে একজন জেসিও হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তিনি ভাওয়াল রাজবাড়ী হতে রেজিমেন্টসহ ৩ নং সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল কেএম শফিউল্লাহর অধীনে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালেরর ১৫ মে আশুগঞ্জ ও ভৈরব নদীরপারে পাক বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখে বাঁ হাতে ও ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। মারাত্মক আহত হয়ে তিনি আগরতলা সরকারী হাসপাতালে প্রায় একমাস চিকিৎসাধীন থাকেন। এ সময় মেজর জেনালে কেএম শফিউল্লাহ, মেজর জেনালে (অব) গোলাম হেলাল মোর্শেদ খান, এমএজি ওসমানী, লেঃ জেনারেল এএসএম নাসিমসহ অনেকেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে দেখতে যান এবং তার বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য প্রশংসা করেন। পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে তিনি আবার দেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে পাক বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন। মাজহারুল হক জানান, বীরপ্রতীকের সম্মানীর জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বহুবার ঘুরেছি এবং সচিব মহোদয়ের কাছে অনেকার ধরনা দিয়েছি। কিন্ত আমার প্রভাব প্রতিপত্তি নেই বলে তারা আমাকে আমলেই নেয়নি। -অভিজিৎ রায়, ফরিদপুর থেকে
×