ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে আয় কয়েক কোটি টাকা

লালমনিরহাট রেলওয়ে ॥ আধুনিকতার ছোঁয়া

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪

লালমনিরহাট রেলওয়ে ॥ আধুনিকতার ছোঁয়া

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট, ১২ ডিসেম্বর ॥ লালমনিরহাট বুড়িমারী সেকশনে ৮৫ কিমি রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। নতুনভাবে রেলের অবোকাঠামো উন্নয়ন, রেললাইন স্থাপন ও আধুনিক শৈল্পিক রেল স্টেশন নির্মাণ করেছে। রেলের এই উন্নয়নে ব্যয় হয়েছে ১৭০ কোটি টাকা। রেলের এই উন্নয়নে লালমনিরহাট বুড়িমারী সেকশনে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন করে রেলওয়ে আয় করছে কয়েক কোটি টাকা । চব্বিশ ঘটনায় ট্রেন চলছে আন্তঃনগর, মেইল ও লোকাল মিলে তিন জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন। লালমনিরহাট টু বুড়িমারী রেলপথটি র্দীঘ সংস্কারের অভাবে অচল হয়ে যায়। ফলে প্রতিমাসে ১৫-২০ বার দুর্ঘটনা ও লাইনচ্যুত হয়েছিল। তাই বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসন আমলে স্থায়ীভাবে পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়। রেলওয়ে এই সেকশনে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়ে ছিল। এর আগে বিএনপি ১৯৯১ সালে সরকার আসার পর লালমনিরহাট টু মোগলহাট রেল স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার রেললাইন স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিয়ে ছিল। বন্ধ করে দেয়া লালমনিরহাট টু মোগলহাট রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত বর্তমান সরকার পুনরায় নতুনভাবে চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বলে রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে। ৭-৮ বছর পূর্বে লালমনিরহাট হতে পাটগ্রামের বুড়িমারী রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত এই ৮৫ কিলোমিটার রেলপথ যেতে সময় লেগে ছিল কমপক্ষে ১০-১১ ঘণ্টা। সেই সময় এই রেল সেকশনের যাত্রীবাহী ট্রেন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেছে। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ১৪-১৫ কিলোমিটার। রেলওয়ে বুড়িমারী স্থলবন্দর হতে রেলযোগে পণ্য পরিবহন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিয়ে হয়ে ছিল। লাভজনক এই রেল রুটটি বন্ধ করে দিয়ার উদ্দেশ ছিল শুধু ট্রাকে পণ্য পরিবহন করতে মালিকদের ও ব্যক্তিগত খাতকে লাভজনক করা। লালমনিরহাট রেল রুটে ৮৫ কিলোমিটার পুরোন রেল লাইন, ব্রিজ, কালভার্ট ও রেল স্টেশন সম্পূর্ণরূপে ফেলে দিয়ে, নতুন করে রেললাইন স্থাপন করেছে। নতুনরূপে ৩৬টি ব্রিজ কালভার্ট স্থাপন করতে হয়েছে। ৭টি বি ক্লাস স্টেশন সংস্কার ও নতুন রুপে নির্মান করতে হয়েছে। ১০ কিলোমিটার লুব রেললাইন নতুনভাবে নির্মাণ করতে হয়েছে। ৭টি পুরাতন প্লাটফরম সম্পূর্ণরুপে ফেলে দিয়ে নতুনরূপে নির্মাণ করতে হয়েছে। নতুনরূপে স্টেশন এ্যাপরোচ রোড় নির্মাণ করেছে। নতুনরূপে ব্যাংক প্রটেকশন ওয়াল নির্মাণ করতে হয়েছে। নতুন করে ব্যালাস্ট ওয়াল নির্মাণ করতে হয়েছে। প্রায় দু’বছর সময়ে লেগেছে এই নির্মাণ ব্যয়ে। এর আগে কয়েক কোটি টাকা ব্যায়ে রেলওয়ের সিগন্যাল ব্যবস্থা ডিজিটাল করা হয়েছে। বতর্মানে লালমনিহাট বুড়িমারী রেল সেকশনে একটি কমিউনিটর ট্রেন, আন্তঃনগর (করোতোয়া) ট্রেন, মেইল ও লোকাল মিলে তিন জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করছে। নিধারিত সময়সূচী মেনে ট্রেন চলছে। ট্রেনে মাত্র ২ ঘণ্টা ২০ মিনিট ৮৫ কিলোমিটার রেলপথ যেতে সময় লাগে। এতে যাত্রী সেবার মানোন্নয়ন ঘটেছে। ট্রেনের ভ্রমণ নিরাপদ ও সাশ্রয়ী। মাত্র ২৮ টাকায় লালমনিরহাট হতে বুড়িমারী যেতে খরচ হয়। বাসে লালমনিরহাট হতে বুড়িমারী যেতে ভাড়া গুনতে হয় এক শ’ কুড়ি টাকা। লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বর্তমানে বুড়িমারী লালমনিরহাট রেল রুটে মালবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। বুড়িমারীতে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ও বালাসি বাহাদুরাবাদঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মালবাহী ট্রেন এখন এই সেকশনে বন্ধ রয়েছে। ফলে রেলওয়ের পণ্য পরিবহনে আয় কমেছে। শুধু যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে ওয়াগান কোচ লাগিয়ে কিছু কিছু পণ্য পরিবহন হচ্ছে।
×