ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়া এখন বিএনপির নয়, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ঘাঁটি

প্রকাশিত: ০৩:৩৭, ১১ ডিসেম্বর ২০১৪

বগুড়া এখন বিএনপির নয়, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ঘাঁটি

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ কুয়াশার সকালকে ম্লান করে দিয়ে হাজারো মানুষের জয় বাংলা ধ্বনিতে বুধবার বগুড়া শহর কেঁপে উঠে জানান দিল বগুড়া এখন বঙ্গবন্ধুর ঘাঁটি শেখ হাসিনার ঘাঁটি। চারদিক থেকে আসা জনস্রোত দেখে বগুড়া জিলা স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল উদ্বোধন করার সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বললেন বগুড়া এখন বিএনপির ঘাঁটি নয়। লাখো জনতার ঢল প্রমাণ করে দিয়েছে এই ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুর, এই ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার। বেলা দেড়টার দিকে কাউন্সিলের উদ্বোধনের সময়ও শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথা অতিক্রম করছিল বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মিছিলের পর মিছিল। পুলিশ র‌্যাব আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা নিরাপত্তা রক্ষায় তৎপর ছিল। আওয়ামী লীগের মিছিল সুশৃঙ্খলভাবে জিলা স্কুল মাঠে প্রবেশ করে। এতবড় মাঠেও জায়গা সঙ্কুলান না হওয়ায় নবাববাড়ি রোডের দু’ধারে শেরপুর রোড টেম্পোল রোডসহ পুরো সাতমাথা এলাকা জনারণ্যে পরিণত হয়। শহরের মানুষের মুখেও বলাবলি হয় কে বলবে এই শহর বিএনপির, যা নিয়ে বিএনপি গর্ব করত! শহরের রিক্সা, সিএনজিচালিত অটোরিক্সা ব্যাটারিচালিত যানবাহনের চালক পথের ধারের ভ্রাম্যমাণ চা বিক্রেতা ও হোটের রেস্তরাঁর মালিক এত মানুষের শোরগোল শুনে ও দেখে বিস্মিত হয়ে যায়। বেলা কিছুটা গড়িয়ে যেতেই কাউন্সিল মঞ্চে আওয়ামী লীগের জেলা সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান মজনু যেসব নেতাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে তাঁদের অবদানের কথা স্বীকার করে রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। জেলা সভাপতি মমতাজউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে কাউন্সিলের উদ্বোধক মোহাম্মদ নাসিম স্পষ্ট করেই বলেন বেগম জিয়া যত ষড়যন্ত্রই করুক যত হুমকিই দিক ২০১৯ সালের আগে নির্বাচন হবে না। নির্বাচনের ট্রেন চলে গেছে ২০১৪ সালে। বিএনপি ট্রেন ফেল করেছে। এই ট্রেন ফের আসবে ৫ বছর পর। তিনি ওই নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেন। গত নির্বাচনের আগে নির্বাচন বন্ধ করতে বেগম জিয়ার নির্দেশে বিএনপি ও জামায়াত মিলে যেভাবে মানুষ হত্যা দেশে ধ্বংসলীলা, আগুন লাগিয়ে সরকারী বেসরকারী সম্পত্তি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগে বাধা দেযা হয়েছে এসব অভিযোগে তাঁর (খালেদা জিয়া) বিচার হবে। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, শেখ হাসিনা গণতন্ত্র রক্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ৫ জানুয়ারি নির্বাচন করেছেন। নির্বাচন না হলে দেশে আজ মার্শাল ল হতো। যেভাবে থাইল্যান্ডে মার্শাল ল হয়েছে। মানুষ কথা বলতে পারত না। তিনি মনে করিয়ে দেন কিভাবে গুজব ছড়িয়ে দুষ্কৃতকারীরা সরকারী বেসরকারী স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। মসজিদ- মন্দিরে হামলা চালিয়েছে। খালেদা জিয়া ও জামায়াতের নেতৃত্বে কি ভয়ঙ্কর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল দেশের মানুষ তা ভুলে যায়নি। শেখ হাসিনা বার বার চেষ্টা করেছেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনা করে শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখে নির্বাচন করতে। বেগম জিয়া তা শোনেননি। নির্বাচনকালীন সরকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও দিতে চেয়েছিলেন বিএনপিকে। শেখ হাসিনা গণতন্ত্র মেনে চলেন গণতন্ত্র রক্ষা করেন। বগুড়ার এই কাউন্সিলেও সেই প্রমাণ রাখা হবে। মোহাম্মদ নাসিম বিএনপি নেতৃবৃন্দের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘দেখে যান বগুড়ার মানুষ কত স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দিয়ে কাউন্সিলে এসেছে।’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, মির্জা আজম এমপি, বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আব্দুল মান্নান, হাবিবুর রহমান এমপি প্রমুখ। মমতাজ সভাপতি ও মজনু সাধারণ সম্পাদক পুনর্নির্বাচিত ॥ বগুড়ায় আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলে পরবর্তী তিন বছরের জন্য সভাপতি পদে মমতাজ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক পদে মজিবর রহমান মজনু সর্বসম্মতিতে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের উপস্থিতিতে এবং কাউন্সিলের পরিচালনায় তাঁরা নির্বাচিত হন। বুধবার রাত ৮টায় এই ঘোষণা দেয়া হয়। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-১ পদে রাগেবুল আহসান রিপু বহাল রয়েছেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-২ ও ৩ পদে নতুন মুখ এসেছেন। তাঁরা হলেন টি জামান নিকেতা ও মঞ্জুরুল আলম মোহন। কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হয় নবনির্বাচিতরা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে কেন্দ্রকে জানাবেন।
×