ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীতে তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৭ ডিসেম্বর ২০১৪

রাজধানীতে তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুরান ঢাকার ওয়ারীতে এক তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। আরও তিনটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দুই হাজতির মৃত্যু হয়েছে। এদিকে কামরাঙ্গীরচরে একটি নির্মাণাধীন ভবনের দেয়াল ধসে পাশে টিনশেড বাড়ির ওপর পড়ে। এ সময় ওই টিনশেড বাড়ির নারী ও শিশুরা দৌড়ে নিরাপদ স্থানে ছুটে এসে প্রাণ রক্ষা পান। তবে কেউ হতাহত হয়নি। শনিবার পুলিশ ও মেডিক্যাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার দুপুর ৩টার দিকে পুলিশ পুরান ঢাকার ওয়ারী এলাকার ৫/৩ নম্বর বাড়ি থেকে শারমিন (২২) নামে তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও মিটফোর্ড মর্গে পাঠায়। ওয়ারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুব হোসেন জানান, ওই তরুণীর লাশটি ওয়ারী জাকির হোসেনের বাসা থেকে উদ্ধার হয়। তিনি জানান, জাকিরের সঙ্গে ওই তরুণীর কি সম্পর্ক ছিল তা নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় মৃতদেহটি পাওয়া যায় বলে এসআই মাহবুব জানান। এদিকে শুক্রবার গভীররাতে পুলিশ সবুজবাগ থানাধীন দক্ষিণ মাদারটেকের ৮২/৫/১ নম্বর বাড়ির নিচতলার একটি ফ্ল্যাটের শয়নকক্ষ থেকে সুজন নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে। পরে পুলিশ তার সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য শনিবার সকালে ঢামেক মর্গে পাঠায়। নিহতের স্বজনরা জানান, নিহত সুজনের বাবার নাম হুমায়ুন কবির। মা ফিরোজা বেগম। গ্রামের বাড়ি ভোলা থানাধীন তজুমুদ্দিন থানার ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামে। সুজন মাদকাসক্ত ছিলেন। সে তার মা-বাবার সঙ্গে দক্ষিণ মাদারটেকের ওই বাসায় বসবাস করত। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে সে তার মা-বাবার কাছে নেশার টাকা চায়। টাকা না দিয়ে তার বাবা হুমায়ুন কবির উল্টো তাকে বকাঝকা দেয়। পরে তার মায়ের কাছেও টাকা চেয়ে সে পায়নি। এতে অভিমান করে নিজঘরে ফ্যানের সঙ্গে মায়ের পরিধেয় কামিজের অংশ গলায় বেঁধে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। অন্যদিকে একই সময় প্রতিমা রানী রাজবংশী নামে এক মহিলাকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যালের জরুরী বিভাগে তার পরিবারের লোকজন ভর্তি করায়। এ সময় কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের স্বজনরা পুলিশকে জানায়, প্রতিমা রানী রাজবংশী ছিলেন শ্রী কার্তিক বাবু রাজবংশীর মেয়ে। তার স্বামীর নাম প্রেমচাঁন রাজবংশী। স্বামীসহ সপরিবারে ভাড়া থাকেন দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর ১২০ নম্বর রায়হানের বাড়িতে। পারিবারিক কলহের জের ধরে প্রতিমা রানী নিজঘরে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না বেঁধে আত্মহত্যা করেন। অন্যদিকে একই দিন রেলওয়ে পুলিশ ঢাকা রেলওয়ে (জিআরপি) থানাধীন বিমানবন্দর ও ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশনের মাঝামাঝি ডাউন ট্রেনের রেললাইন থেকে অজ্ঞাত যুবকের ছিন্নভিন্ন লাশ উদ্ধার করে ঢামেক মর্গে পাঠায়। নিহতের পরনে ছিল খয়েরি রংয়ের ডোরাকাটা ফুলপ্যান্ট ও গায়ে সাদাকালো চেক ফুলশার্ট। দুই হাজতির মৃত্যু ॥ শনিবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই আসামির মৃত্যু হয়েছে। পরে তাদের লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠায়। নিহতরা হচ্ছেন, মোঃ আনোয়ার হোসেন (৪৫) ও মোহন মিয়া (৭০)। পুলিশ ও হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, রবিবার হাজতি মোহন মিয়াকে ও বৃহস্পতিবার হাজতি মোঃ আনোয়ার হোসেনকে শারীরিক অসুস্থতার কারণে কারারক্ষীরা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে তাদের মৃত্যু হয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার নেছার আলম বিষয় দুটি নিশ্চিত করে বলেন, মোহন মিয়া ছিলেন কুষ্টিয়ার সদর থানার কোর্ট স্টেশন বস্তির বাসিন্দা মৃত আবুল কাশেমের ছেলে। মাদকদ্রব্য আইনে বিচারাধীন এক মামলার আসামি (হাজতি নম্বর-৩৫৭৮৫/১৪) ছিলেন মোহন মিয়া। এছাড়া নিহত আনোয়ার হোসেন ছিলেন সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার চালা নিবাসী মৃত জুরান আলীর ছেলে। তিনিও বিচারাধীন দুটি মামলার আসামি (হাজতি নং-৩০৪৬০/১৪) ছিলেন। জেলা কারাগারে অসুস্থ হওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষ তাদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করেন। এরপর ঢাকা কারাগারে বন্দী রেখে কয়েক দফা তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়। শারীরিক অবনতি ঘটলে কারা হাসপাতাল সার্জনের পরামর্শে কারা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কারারক্ষীরা তাদের ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করেন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার দুপুর পৌনে ২টায় কামরাঙ্গীরচর থানাধীন পূর্ব রসুলপুর ৯নং গলির এ ব্লকের ‘সরকার বাড়ি’র দোতলার ছাদে তৃতীয় তলার নির্মাণ কাজ করছিলেন কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক। এ সময় হঠাৎ করেই ভবনের সিঁড়িকোঠার একটি দেয়ালের একাংশ ধসে দক্ষিণ পাশের টিনশেড বাড়ির ওপর আছড়ে পড়ে। এতে ওই ঘরসহ আশপাশের ঘরে থাকা নারী-শিশুসহ আতঙ্কিত ভাড়াটিয়ারা দৌড়ে রাস্তায় বেরিয়ে নিজেদের রক্ষা করেন। তবে ধসে পড়া দেয়ালের আঘাতে টিনশেড ঘরের চালা ও ভাড়াটিয়াদের ঘরের আসবাবপত্র ক্ষতি সাধন হয়। তবে কোন হতাহত হয়নি।
×