ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

র‌্যাব কর্মকর্তার স্ত্রীকে ডাকাতির সময় হত্যা ॥ ৭ জন আটক

প্রকাশিত: ০৭:৩৯, ৪ ডিসেম্বর ২০১৪

র‌্যাব কর্মকর্তার স্ত্রীকে ডাকাতির সময় হত্যা ॥ ৭ জন আটক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ডাকাতরা বুঝতে পারেনি ওই বাসায় র‌্যাব ভাড়া থাকত। তাহলে তারা ওই বাসার ধারেকাছেও যেত না। ধরা পড়ার পর যখন জানতে পারল ওরা যাকে খুন করেছে ,তার স্বামী র‌্যাবের কর্মকর্তা তখন তারা বুঝতে পারে, আর বাঁচার উপায় নেই। হয় মৃত্যুদ- না হয় যাবজ্জীবন,একটা কিছু হবেই। রাজধানীর নিকটবর্তী টঙ্গীতে এক র‌্যাব কর্মকর্তার স্ত্রীকে ডাকাতির সময় হত্যার অভিযোগে গ্রেফতারকৃতরা এমনই অনুভূতি প্রকাশ করে। তারা এখন র‌্যাব হেফাজতে। বুধবার ভোরে টঙ্গী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে আটক করা হয়। তারা হলো-আবুল বাশার হাওলাদার (৩২), হারুন ঘরামী (৪৫), সোনা মিয়া মৃধা (৪২), আব্দুল হাই (৪০)। তাদের সবার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলায়। এ ছাড়াও রয়েছে গোপালগঞ্জের রাজীব মোল্লা (২৪), নোয়াখালীর রাশেদ চৌধুরী (৪৪) এবং ঝিনাইদহের জাকির হোসেন (২৭)। গত ৮ নবেম্বর টঙ্গীতে সালমা সুলতানা (সাথী) নামের গৃহবধূকে ছুরি দিয়ে হত্যা করা হয়। তার স্বামী শেখ ওমর আলী র‌্যাব-৪ কার্যালয় সাভারে কর্মরত। চাকরির সুবাদে তাকে সাভারেই থাকতে হতো। বাসায় স্ত্রী একাকি থাকতেন। ওই সুযোগেই সেদিন ডাকাতির উদ্দেশ্যে বাসায় হানা দেয় ৭ ডাকাত। ডাকাতিতে বাধা দেয়ায় সাথীকে খুন করে চলে যায় ডাকাতরা। আটকের পর বুধবার র‌্যাব এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, কিভাবে সাথীকে সেদিন হত্যা করা হয়। ডাকাত চক্রটি কিভাবে এই হত্যাকা- ঘটিয়েছে জিজ্ঞাসাবাদে তারা সেটিও স্বীকার করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন মুফতি মাহমুদ খান। তিনি বলেন, গৃহবধূ সাথীকে হত্যার একমাস আগে ডাকাতরা বাড়ি ভাড়ার নাম করে টঙ্গীর বড় দেওড়া আদর্শ পাড়ার খাঁপাড়া এলাকায় ওই বাড়িতে যায়। পরে তারা জানতে পারে বাড়িতে গৃহবধূ একা থাকেন। এতে তারা ডাকাতি করার সাহস পায়। ওই সময় ডাকাত সদস্য হারুন ঘরামী আসল নাম গোপন রেখে বাবুল নামে পরিচয় দিয়ে বাসা ভাড়া নেয়ার কথা জানায়। গত ৭ নবেম্বর বাশার, হারুন ও সোনামিয়া নামের ডাকাত দলের তিন সদস্য গৃহবধূর বাসায় গিয়ে জানায়, তারা ৮ নবেম্বর বাসা ভাড়া বাবদ অগ্রীম টাকা দিতে আসবে। পরে তারা আগের কথামতো ৮ নবেম্বর বেলা ১১টায় ওই বাসায় প্রবেশ করে। এসময় তারা গৃহবধূকে একা পেয়ে অর্থকড়ি ও স্বর্ণালঙ্কার দিতে বলে। এতে তিনি অস্বীকৃতি জানিয়ে চিৎকার করার চেষ্টা করলে ছুরি দিয়ে পেটের ডানপাশে পরপর দুইবার জখম করে। এক পর্যায়ে আরেক বাসার ভাড়াটিয়া কুলসুম ওরফে নদী (২১) চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পেয়ে এগিয়ে গেলে তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় ডাকাতরা। এ ঘটনার পর পরই সাথী মারা যান। পরে সংবাদ পেয়ে সাথীর স্বামী র‌্যাব সদস্য শেখ ওমর আলী থানায় মামলা দায়ের করেন। একই সঙ্গে র‌্যাবকেও জানান। পরে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এ ছাড়াও টঙ্গী এলাকায় চক্রটি আরও কয়েকটি বাসায় একই কায়দায় ডাকাতি করেছে বলে জানতে পারে র‌্যাব।
×