ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পুরোপুরি মুক্ত সাকিব

প্রকাশিত: ০৫:০০, ৩ ডিসেম্বর ২০১৪

পুরোপুরি মুক্ত সাকিব

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টেস্টের পর একদিন আগেই জিম্বাবুইয়েকে ওয়ানডেতেও বাংলাওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। কী সুখের দিন। কী শান্তির দিনই না কাটিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট, ক্রিকেটাররা। পরের দিনই বাংলাদেশ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পেরেছেন। মুক্ত হবেন হবেন করে এবার পুরোপুরিই যে মুক্ত হয়ে গেলেন বিশ্বসেরা এ টেস্ট অলরাউন্ডার। আর কোন দিকেই সাকিবের নিষেধাজ্ঞা থাকল না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অনুমতি পাওয়ার পর দেশের ঘরোয়া লীগ খেলার অনুমতিও পেয়েছেন। মঙ্গলবার বিদেশে লীগ খেলার ব্যাপারেও ছাড় পেয়ে গেছেন সাকিব। এখন শুধু অপেক্ষা, সেই অনুমতির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার। বৃহস্পতিবারই সেই ঘোষণা এসে যাবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন, ‘সাকিবের বিদেশে লীগ খেলার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখন বৃহস্পতিবার শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে।’ শুধু কী আনুষ্ঠানিক ঘোষণাই মিলবে, সাকিবকে এখনই ১৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার টি২০ ক্রিকেট লীগ বিগব্যাশে খেলার মৌখিক অনুমতিও দেয়া হয়েছে। বিগব্যাশের গত আসরে সাকিব এ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সে খেলেছেন। এবার সাকিব কোন দলে সুযোগ পেলে অনায়াসেই খেলতে পারেন। তবে এ বিষয়ে সাকিব কোন কথাই বলতে রাজি নন। বঞ্চিত শিশুদের সঙ্গে খেলার পর সাকিব ক্রিকেট নিয়ে কোন কথাই বলতে চাননি। শুধু জানালেন, ‘ক্রিকেট নিয়ে কোন কথা বলব না।’ ক্রিকেট নিয়ে কোন কথা না বললেও সাকিব জেনে গেছেন তার নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। শুধু যে বিদেশে লীগ খেলার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা ছিল তা থেকেও অবশেষে মুক্ত হয়ে গেলেন সাকিব। শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য যে শাস্তি সাকিব এ বছর ৭ জুলাই থেকে ভোগ করছেন। সেই সময়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ৬ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় সাকিবকে। সঙ্গে দেশের ঘরোয়া ও বিদেশের লীগ খেলার ব্যাপারে আগামী বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিষিদ্ধ করে শাস্তিও দেয়া হয় সাকিবকে। সাকিবকে ছাড়াই দল ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট, ওয়ানডে সিরিজ খেলতে যায়। হারের ষোলোকলা পূর্ণ করে দল। ২০ জুলাই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেন সাকিব। পরে এ বছর ২৭ আগস্টেই বিসিবির পরিচালনা পর্ষদ সভা করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সাকিবকে মুক্ত করে দেন। ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে সাকিব আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সাড়ে তিনমাস আগেই সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। তখন দেশের ঘরোয়া লীগ খেলার বিষয়েও সাকিবকে ছাড় দেয়া হয়। পরে সাকিব দল বদলেও অংশ নেন। কিন্তু বিদেশের লীগ খেলার উপর নিষেধাজ্ঞা ঠিকই বহাল থাকে। শর্ত যুক্ত করে দেয়া হয়, যদি সাকিবের আচরণ-ব্যবহার ও পারফর্মেন্স ভাল থাকে তাহলে এ শাস্তিও তুলে নেয়া হবে। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে টেস্টে সাকিব যেন ‘সর্বেসর্বা’ ছিলেন। একই ম্যাচে শতক ও ১০ উইকেট নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে তাক লাগিয়ে দেন। সিরিজ সেরাও হন সাকিব। তখনই আলোচনা তুঙ্গে ওঠে সাকিবকে বিদেশে লীগ খেলার ব্যাপারেও অনুমতি দিতে যাচ্ছে বিসিবি। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত বিসিবি বোর্ড সভা না করে জানাতে পারে না। তাছাড়া সাকিব এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার জন্য কোন আবেদন পত্র না দিলেও তা সম্ভব ছিল না। তাই এতদিন অপেক্ষা করতে হয়। শেষে সাকিব আপীল করেন। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ও নিশ্চিত হওয়ার পর চতুর্থ ওয়ানডের আগে বিসিবি সভাপতি নিজেই জানান, ‘সাকিবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ার ব্যাপারে আশা করি কাররই আর কোন দ্বিধা থাকার কথা না। এরপরও এ সিদ্ধান্ত বোর্ড সভাতেই হবে।’ সেই সভা হবে বৃহস্পতিবার। কিন্তু এর আগেই বিসিবি সভাপতি মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সাকিবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ার বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়ে দিলেন। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আনন্দের পর পর দেশের সেরা অলরাউন্ডারও পুরোপুরি মুক্ত হওয়ার আনন্দ পেয়ে গেলেন। পায়ে যে এতদিন বিদেশে লীগ খেলার ব্যাপারে শিকল বাঁধা ছিল, সেখান থেকে এখন পুরোপুরি মুক্ত সাকিব।
×