শংকুর কুমার দে ॥ বাংলাদেশ সীমান্তে ৩১ জঙ্গী ঘাঁটি তৈরি হয়েছে, যেসব প্রশিক্ষিত জঙ্গী সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন রাজ্যে প্রবেশের জন্য অপেক্ষমাণ। এর মধ্যে বেশিরভাগই নারী জঙ্গী, জঙ্গী দম্পতি ও ভারতীয় জঙ্গী রয়েছে। বাংলাদেশের ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল কলকাতায় সফরকালে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএকে তথ্য দিয়েছে তা চোখ কপালে ওঠার মতো ভয়াবহ। ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত গত ৪ বছরে পশ্চিমবঙ্গের সারদা কেলেঙ্কারির ৬শ’ কোটি টাকা জঙ্গী জিহাদীদের কাছে পৌঁছানো হয়েছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশে আসার পর এই টাকার অংশই আবার হাত বদল হয়ে ২০১১ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের জঙ্গী ডেরায় পৌঁছানো হয়েছে ১৮ কিস্তিতে, যার প্রতিটি কিস্তিতে পাঠানো হয় ১ কোটি টাকা। ভারতের সারদা কেলেঙ্কারির টাকাই পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের জঙ্গী সংগঠন জেএমবির কাছে পৌঁছানো হয়েছে এবং এক প্রভাবশালী রাজনীতিকের উদ্যোগে তহবিলের অর্থ পৌঁছানো হয় বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংকে। সেই বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের গোয়েন্দাদের কলকাতায় বৈঠককালে এই ধরনের তথ্য আদান প্রদান হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
মার্কিট সিনেটের সতর্কবার্তা ॥ ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ জানিয়েছে, ইসলামী ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেডের বিভিন্ন এ্যাকাউন্টস থেকে মূলত কুয়েতের একটি এবং সৌদি আরবের দুটি এনজিওর কাছে ২০১১ সাল থেকে ২০১৩ সালের শেষ দিক পর্যন্ত বার বার যে অর্থ পৌঁছেছে তা সারদারই টাকা। কুয়েতের ওই এনজিওর নাম সোসাইটি ফর রিভাইভ্যাল অব ইসলামিক হেরিটেজ। সৌদি আরবের দুটি এনজিও হচ্ছে, রাবাতা-আল-আলম-আল-ইসলামী ও আল নাহিয়ান। মার্কিন সিনেট কমিটি ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা জারি করে বলেছেন, এরা বিশ্বজুড়ে জঙ্গী জিহাদী কার্যক্রমের জন্য অর্থ সাহায্য করে। এই তিনটি এনজিওর মাধ্যমে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, বান্দরবন, কক্সবাজার এলাকায় কোটি কোটি টাকা ঢোকার প্রমাণ মিলেছে। ওই অর্থ আবার হাওলা হয়ে ফের ঢুকেছে পশ্চিমবঙ্গে ও অসমে।
সীমান্তে ৩১ জঙ্গী ঘাঁটি ॥ বাংলাদেশ সীমান্তে ৩১ জঙ্গী ঘাঁটি গেড়েছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গীরা। তারা ভারতের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে সেদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সীমান্তে যেসব জঙ্গী ঘাঁটি গেড়ে বসেছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী জঙ্গী। আবার জঙ্গী দম্পতিও রয়েছে। রয়েছে ভারতীয় ২৫ জঙ্গী, যারা বিভিন্ন সময়ে ভারত থেকে তাড়া খেয়ে বাংলাদেশে এসেছিল, আবার তারা ভারতে প্রবেশের চেষ্টার অপেক্ষায় আছে। মুর্শিদাবাদ, মালদহ, ও বর্ধমান জেলার বাসিন্দা জঙ্গীরাও আছে। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী বিএসএফকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। কিছুদিন আগে এই বিষয়ে ভারতের কর্তৃপক্ষকে তথ্য দিয়েছিল বাংলাদেশের গোয়েন্দারাও। বাংলাদেশের গোয়েন্দারা কলকাতায় সফরকালে যে তথ্য দিয়েছে তাতে বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন জঙ্গী এখনও রাজ্যের বসিরহাট, স্বরূপনগর, বাগদা এলাকায় আত্মগোপন করে আছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: