ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আজিমপুরে সমাহিত হলেন জগ্লুল

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২ ডিসেম্বর ২০১৪

আজিমপুরে সমাহিত হলেন জগ্লুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মায়ের কবরেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাসসের সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাদ আছর জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরীর জানাজায় অংশ নেন সাংবাদিক ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা। এরপর বিকেলে আজিমপুর নতুন কবরস্থানে মা সদরুন্নেসা চৌধুরীর কবরে সমাহিত করা হয় এই প্রখ্যাত সাংবাদিককে। এ সময় ছেলে নাবিদ আহমেদ চৌধুরী, মেয়ে অন্তরা চৌধুরীসহ স্বজনরা ছিলেন সেখানে। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম চৌধুরীও দাফনের সময়ে কাছেই ছিলেন। আগামী শুক্রবার বাদ আসর গুলশানের আজাদ মসজিদে কুলখানি হবে বলে নাবিদ আহমেদ চৌধুরী জানিয়েছেন। এর আগে বাদ জোহর বনানী জামে মসজিদে জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এতে তাঁর আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, শুভান্যুধায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ অংশ নেন। শনিবার রাতে বেসরকারী টেলিভিশন এটিএন বাংলার একটি টকশো অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যাওয়ার পথে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাসের ধাক্কায় নিহত হন জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। মৃত্যুর পর হিমঘরে থাকা জগ্লুল চৌধূরীর কফিন সোমবার দুপুরে নেয়া হয় বনানী জামে মসজিদে। সেখানে জানাজার পর কফিন নেয়া হয় জাতীয় প্রেসক্লাবে। তিনি প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য ছিলেন। মরদেহ ক্লাব প্রাঙ্গণে আনার পর সাংবাদিক ও কর্মচারীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। অকালে সহকর্মীকে বিদায় দিতে গিয়ে অনেক সাংবাদিকের চোখে ছিল জল। প্রেসক্লাবে জানাজায় ইমামতি করেন জগ্লুল চৌধূরীর দীর্ঘদিনের বন্ধু অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম। জানাজায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার মোহাম্মদ জমির, তথ্য সচিব মুর্তজা আহমেদ, রাজনীতিক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, মোনায়েম সরকার, সাইফুল হক, সুলতান মোঃ মনসুর, ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপি নেতা শমশের মবিন চৌধুরী, মোসাদ্দেক আলী, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, গিয়াস কাদের চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক। সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে ছিলেন আমানুল্লাহ কবির, হাবিবুর রহমান মিলন, মুহাম্মদ আমানউল্লাহ, মাহফুজ আনাম, হাসান শাহরিয়ার, মাহফুজউল্লাহ, নাইমুল ইসলাম খান, নুরুল কবীর, শওকত মাহমুদ, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, শাহজাহান মিঞা, আলতাফ মাহমুদ, এমএ আজিজ, জলিল ভূঁইয়া, আবদুল হাই শিকদার, কুদ্দুস আফ্রাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বাসসের প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়া, আবদুল কাউয়ুম, সরকার ফিরোজ প্রমুখ। জানাজার পর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সমাজকল্যাণমন্ত্রী মহসিন আলী প্রয়াত সাংবাদিকের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। বিএফইউজে, ডিইউজে, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ওকাব, ফটো জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশন, বাসস, সংবাদ, একাত্তর টিভি, মহিলা পরিষদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ডেমোক্র্যাসি ওয়াচ, কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশন, ভোরের কাগজ, জাতীয় প্রেসক্লাব কর্মচারী ইউনিয়নও কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষে ডেপুটি হাইকমিশনার সন্দ্বীপ চক্রবর্তী শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশের এই সাংবাদিকের প্রতি। জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী ঢাকার বনানীতে বাস করতেন। তাঁর একমাত্র মেয়ে অন্তরা চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এবং একমাত্র ছেলে নাবিদ আহমেদ চৌধুরী ঢাকায় প্রামীণফোনে কর্মরত। জগ্লুল আহ্মেদের গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার পিয়াম গ্রামে। বাবা নাসিরউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন যুক্তফ্রন্ট সরকারের আইনমন্ত্রী। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী সর্বশেষ ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন। জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্থায়ী সদস্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জগ্লুল আহ্মেদ। ১৯৮৮-৮৯ সালে অবিভক্ত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহকারী মহাসচিব ছিলেন তিনি।
×