ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাঘের চামড়া চুরির দায়ে বিমানের দুই ড্রাইভার গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ২৫ নভেম্বর ২০১৪

বাঘের চামড়া চুরির দায়ে বিমানের দুই ড্রাইভার গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার। সোনা চোরাচালানের পর এবার বাঘের চামড়া চুরির দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে বিমানের দুই ড্রাইভারকে। তাঁরা হলেন- জিন্নাহ ও ইকবাল। উত্তরা মডেল থানার পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁদেরকে বিমানের মোটর অফিস থেকে আটক করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে বাঘের চামড়া জব্দ করা হয়। এছাড়া আদালতে দেয়া বিমান কর্মকর্তাদের জবানবন্দী নিয়ে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে বিমানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে। কে, কার নামে কি প্রকাশ করেছে, নতুন করে; কে গ্রেফতার হচ্ছে এসব কৌতূহলী জিজ্ঞাসাই ছিল সবার মুখে মুখে। বিশেষ করে পাইলট ও কেবিন-ক্রুদের নিয়েই চলছে সমালোচনা। ডিবির তালিকায় যে পাইলট কেবিন-ক্রু ও কর্মকর্তাদের নাম ফাঁস হয়েছে তাঁরাই গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছে। সোমবার বিমানের মোটর শাখায় গিয়ে জানা যায়, আটককৃত জিন্নাহ ও ইকবাল বিমানের সাধারণ ড্রাইভার হলেও তাঁদের যোগাযোগ ছিল একটি শক্তিশালী স্মাগলার সিন্ডিকেটের সঙ্গে। পুলিশ জানায়, হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গার গেট দিয়েই বিমান ও সিভিল এ্যাভিয়েশনের কর্মকর্তাদের গাড়ির ড্রাইভাররা যুগ যুগ ধরে চোরাইপণ্য নির্বিঘেœ বাইরে পাচার করে আসছে। গোয়েন্দাদের এমন তথ্যের ভিত্তিতে উত্তরা থানার পুলিশ হঠাৎ এ অভিযান চালায়। এ সময় মোটর অফিসের একটি কক্ষের লকারে লুকিয়ে রাখা বাঘের চামড়া দেখতে পায়। তাৎক্ষণিক হাতে-নাতে আটক করা হয় তাঁদের দুইজনকে। পরে তাঁদের ছাড়াতে আরও দুইজন বিমান কর্মচারী তদ্বীর করতে গেলে তাদেরও আটক করা হয়। এক পর্যায়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এই যখন অবস্থা তখন সোমবার হঠাৎ দেশে ফিরেন সোনা চোরাচালান সিন্ডিকেটের তালিকাভুুক্ত ফাস্ট অফিসার নজরুল শামীম। মূলত তাঁর মাধ্যমেই ভয়ংকর হয়ে ওঠেন পলাশ। বিমানের এমডি ক্যাপ্টেন মোসাদ্দিক আহমেদ রাতে জনকণ্ঠকে বলেন, ডিবির অভিযানে পরিস্থিতি কিছুটা আতঙ্কিত বটে। কারণ কে যে কাকে ফাঁসাচ্ছে, কার নাম বলছে, লেখালেখি হচ্ছে তার কোন কূলকিনারা নেই। সঙ্গতকারণেই এতে অফিসের কাজকর্মের পরিবেশ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, ফার্স্ট অফিসার নজরুল শামীম কানাডা থেকে সোমবার দেশে ফিরেছেন। এদিকে সোমবার ও বিমানের প্রশাসনিক ভবন, বলাকা ভবন, ও শাহজালাল বিমানবন্দরে ডিবির উপস্থিতি দেখা যায়। আদালতে ক্যাাপ্টেন আবু আসলাম শহীদ ও ডিজিএম এমদাদ তোজাম্মেল ও পলাশের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি নতুন করে হানা দেয়। বেলা ১২টার দিকে নিরাপত্তা মহাব্যবস্থাপক মমিনুল ইসলাম বলাকায় এমডির সঙ্গে দেখা করে বের হয়ে আসার সময় গোয়েন্দারা তার গাড়ি অনুসরণ করে। তাঁকে যে কোন সময় সোনা চোরাচালান মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ডিবির এক কর্মকর্তা। এছাড়া নজরুল শামীমের অপকর্মের অন্যতম সহযোগী ক্যাপ্টেন ইশরাত শামীমের গতিবিধি ডিবির নজরদারিতে রয়েছে। উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে সোনা চোরাচালান মামলায় বিমানের ক্যাপ্টেন আবু আসলাম শহীদ, ডিজিএম এমদাদ ম্যানেজার তোজাম্মেল, বিমান বালা নুরজাহানের স্বামী পলাশ ও মানি একচেঞ্জ ব্যবসায়ী হারুণকে গ্রেফতার করে। তাদের চারদিনের রিমান্ড শেষে তারা বিমানের সোনা চোরাচালান সিন্ডিকেট সম্পর্কে আদালতে দেয়া জবানবন্দীতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস করে। এ সম্পর্কে বিমান চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল জামাল উদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, আমার নাম ভাঙ্গিয়ে কে কি করেছে, সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখনও যদি নতুন কোন কর্মকর্তা সম্পর্কে কোন অভিযোগ পাওয়া যায় তার বিরুদ্বেও এ্যাকশান নেয়া হবে। ছাড়া হবে না কাউকে। শুধু ডিবি আর পুিলশের ওপর সব ছেড়ে দেয়া হবে না। বিমানের নিজ উদ্যোগেও খোঁজ নেয়া হচ্ছে।
×