ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পার্থক্য গড়ে দিচ্ছেন সাকিবই

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ২৩ নভেম্বর ২০১৪

পার্থক্য গড়ে দিচ্ছেন সাকিবই

মিথুন আশরাফ, চট্টগ্রাম থেকে ॥ জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে একের পর এক ম্যাচ খেলছে বাংলাদেশ। আর জিতেই চলেছে। টানা তিন টেস্টে জিতে জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার পর পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতেও জিতেছে বাংলাদেশ। বছরে প্রথম ওয়ানডে জয় হয়েছে। প্রতিটি ম্যাচেই পার্থক্য গড়ে দিচ্ছেন এক সাকিব আল হাসানই। জিম্বাবুইয়ে এক সাকিবের কাছেই হেরে যাচ্ছে। সাকিব ব্যাটিংয়ে নামলে জিম্বাবুইয়ে বোলাররা যেন ছন্নছাড়া হয়ে পড়ছেন। আবার সাকিব বোলিংয়ে আসলে যেন জিম্বাবুইয়ে ব্যাটসম্যানদের থরথর কাঁপন শুরু হয়ে যাচ্ছে। আর তাই তো আজ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নামার আগে পার্থক্য যে শুধুই সাকিব হয়ে উঠেছেন সেই ইঙ্গিতও দিয়ে দিলেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাই, ‘আসলে পুরো ম্যাচটা সাকিব একাই খেলছে।’ সাংবাদিকদের সঙ্গে মাশরাফির কথোপকথনের সারসংক্ষেপ এখানে তুলে ধরা হলো। * এখন সিরিজের উদ্দেশ্য- মাশরাফি বিন মর্তুজা ॥ উদ্দেশ্য তো একটাই ছিল, আমরা সিরিজ খেলতে আসছি জিততে আসছি। অধিনায়কত্বের বিষয়টা বললে আমারও যতটুকু ভাল লাগছে, প্রত্যেকটা খেলোয়াড়েরই ভাল লাগছে। একটা পর্যায়ে আমাদের ম্যাচটা (প্রথম ওয়ানডে) একটু কঠিন হয়ে গিয়েছিল। ৩০-৩১ রানে ৩ উইকেট পড়ে গিয়েছিল। ওই সময়ে প্রথমে মুমিনুল তারপর মুশফিক এবং সাকিবের অনেক বড় একটা জুটিতে আমরা এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিলাম। ম্যাচটা মোটামুটি আমাদের হাতে চলে এসেছিল। বোলিং শুরুতে আমরা ভাল করতে পারিনি। আবার সাকিব এসে ম্যাচটা আমাদের হাতে নিয়ে এসেছে। আসলে পুরো ম্যাচটা ও একাই খেলেছে। বিশেষ করে মুশফিকের কথা বলতে হয়। সাব্বির রহমান রুম্মনের কথাও বলতে হয়। তো সব মিলিয়ে আসলে ভাল লাগছে। * দেশের সেরা অধিনায়ক- মাশরাফি ॥ অর্ধেক কাজ তো সাকিবই করে দিয়ে গেছে। সুতরাং সফল অধিনায়কের কোন বিষয় এখানে নেই। * শিশির ফ্যাক্টর- মাশরাফি ॥ চিন্তার কারণ এখনও বলব। ম্যাচটা মনে হয় একঘণ্টা এগিয়ে নিয়ে আসা হবে। আমরা খুব ভাগ্যবান, প্রথম ওয়ানডেতে শিশির ওই রকম পড়েনি। স্পিনাররা বল করতে পারছিল। শিশির পড়লেও বলটা শুকিয়ে যাচ্ছিল। শিশিরটা ওই রকমভাবে স্পিনারদের বিরক্ত করেনি। কিন্তু এটা নিয়ে ভয় আছেই। * খেলোয়াড়দের মোটিভেট- মাশরাফি ॥ এটা তো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সাকিব ৪ উইকেট নিয়েছে, আরেকদিক থেকে তো একজনকে ভাল বোলিং করতে হবে। সাকিব সেঞ্চুরি করেছে, ওইপাশ থেকে মুশফিক ভাল ব্যাটিং করেছে। সাব্বির ফিনিস করেছে। বোলিংয়েও সাকিব ব্রেকথ্রু দিয়েছে; তখন রিয়াদ এসে ভাল বোলিং করেছে। কেউ না কেউ এসে তো ভাল বোলিং করতে হবে। রিয়াদের বিচিত্র্যটা খুব ভাল লেগেছে ও বোলিংটাকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে এবং এজন্য সে দশ ওভার বোলিং করেছে। ওর স্পেলটা ভাল ছিল, খুব ভাল লেগেছে। এটাই করতে হবে আসলে ম্যাচ জিততে গেলে একজন অসাধারণ পারফর্মেন্স করে তার সঙ্গে সহযোগিতার জন্য কাউকে পারফর্মেন্স করতেই হয়। * রিল্যাক্স- মাশরাফি ॥ এটার কোন সুযোগও নেই। একটা ম্যাচ জিতে তো সিরিজ জিতে যাইনি। সিরিজ যদি জিততে পারি ইনশাল্লাহ ৫ ম্যাচের আগেই, সেক্ষেত্রেও রিলাক্স হব মনে হয় না। এটলিস্ট এই লেভেলে এসে উচিতও না। আর আমার মনেও হয় না কারও মাথায় এটা আছে। হয়ত বা কখনও কখনও হয় একজন খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দেয়া হতে পারে। এটা ভিন্ন ব্যাপার। কিন্তু যারা খেলবে একাদশে, থাকবে; তাদের রিলাক্স হওয়ার সুযোগ নেই। * আরাফাত সানি এবং রুম্মন- মাশরাফি ॥ সানি ধরেন এই লেভেলে কিছু ক্রিকেট খেলেছে। আমার ওর প্রতি একটা আত্মবিশ্বাস ছিল ওই্ সময়। ওর (সানি) যে বোলিং, আমি সব সময় জানি ও (সানি) যেখানে খেলে, জাতীয় লীগেও স্ট্যাম্প টু স্ট্যাম্প বোলিং করে, জায়গায় বোলিং করে। জিম্বাবুইয়ে যেহেতু স্পিনে দুর্বল, আমার আত্মবিশ্বাস ছিল সানি ভাল করবে, সেটা শিশির থাকলেও। বেসিক্যালি সাকিব তো একটু অন্য টাইপের বোলার, শিশির থাকলে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছিল ও (সানি) শিশির থাকলেও ভাল করবে। রুম্মনের কথা বললে বলব ওর অভিষেক ম্যাচ। ম্যাচটা ও ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। ওই সময়ে মাত্র ৭ ওভার ছিল। ওই সময়ে ব্যাটিং নেমে এই রকম ইনিংস (২৫ বলে অপরাজিত ৪৪) খেলা কঠিন। খেলে ফেললে খুব ভাল। কিন্তু একটা নতুন খেলোয়াড় এসে খেলাটা খুব কঠিন। নিজেকে মানিয়ে নিয়ে সুন্দর একটা ইনিংস খেলেছে। এটা আমার খুব ভাল লেগেছে। আশা করি এটা ও ক্যারি করবে। এবং ওর আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে। * ২০১৪ সালে প্রথম জয়- মাশরাফি ॥ আমরা প্রতিদিন মাঠে আসি জেতার জন্য। অনুশীলন করি জেতার জন্য। আমাদের কাজই এটা। এই বছর একটা জিতেছি। ইনশাল্লাহ যে কয়টা ম্যাচ আছে সব কয়টা জিততে পারলে আমাদের ভাল হবে। আমাদের কাজই এটা। এখানে রিল্যাক্স হওয়া কিংবা খুব বেশি ভারমুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। কাজ যেটা সেটাই শেষ করা উচিত।
×