ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পলাশের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ২৩ নভেম্বর ২০১৪

পলাশের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সোনা চোরাচালান মামলায় বিমানের নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আরও দুই পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। বর্তমানে রিমান্ডে থাকা অন্যতম আসামি মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ী হারুনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ এসব কর্মকর্তার নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ করেছে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর শনিবার দুপুরেই ডিবির একটি দল উত্তরায় বসবাসকারী এক নিরাপত্তা কর্মকর্তার গতিবিধি নজরদারি করে। এদিকে আলোচিত এ ঘটনায় বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মিডিয়ায় পলাশের কর্মকা-ের ব্যাপারে জানতে পেরে বিস্মিত হয়েছেন খোদ বিমান চেয়ারম্যান এয়ারমার্শাল জামাল উদ্দিন। শনিবার নিজেই তিনি পলাশের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখার কড়া নিদের্শ দিয়েছেন ম্যানেজমেন্টকে। বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে কোন মহল যাতে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে, সে জন্যও শনিবার সন্ধ্যায় জরুরী বোর্ড সভা ডাকা হয়। সেখানে সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। বোর্ড সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বিমানের যে সব কর্মকর্তা পলাশের বিভিন্ন অপকর্মের সহযোগী হয়েছেন, কিংবা চেয়ারম্যানের নাম ভাঙ্গিয়ে বিতর্কিত কাজে জড়িয়েছেন, তাদেরও চিহ্নিত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে-এয়ারমার্শাল জামাল উদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, দোষী যেই হোক তদন্তে প্রমাণ হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমার নাম ভাঙ্গিয়ে পলাশ বিমানে যদি কিছু করে থাকে, সেটার তো তদন্ত হবে। পাশাপাশি যে সব কর্মকর্তা তাকে প্রশ্রয় দিত, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ডিবি জানায়, রিমান্ডের তৃতীয় দিন শনিবার পর্যন্ত পলাশসহ বিমানের তিন কর্মকর্তার কাছ থেকে তেমন কোন তথ্য আদায় করা যায়নি। রিমান্ড শেষ হওয়ায় আগামীকাল এদের আদালতে পাঠানো হবে। অত্যন্ত ধূর্ত পলাশ, ডিজিএম এমদাদ ও ম্যানেজার তোজাম্মেলকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করে রাসেলের দেয়া তথ্যের সত্যতা যাচাই করে ডিবি। এ সময় মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ী হারুন স্বীকার করেন এক সময় চোরাচালানের জন্য বিদেশে মুদ্রা পাচার করতেন। বিমানের চিহ্নিত কয়েকজন কেবিন ক্রুর মাধ্যমে কয়েক বছর ধরেই সোনা কেনার জন্য টাকা পাঠানো হতো দুবাইয়ে। এ কাজে তাকে সহায়তা করতেন পলাশ, নিরাপত্তা বিভাগের জিএম মমিনুল ইসলাম, ডিজিএম এমদাদ ও ম্যানেজার তোজাম্মেল। সূত্র জানায়, এসব অভিযোগ পেয়ে রাতেই ডিবির একটি টিম উত্তরা খিলক্ষেত, গুলশান ও বারিধারায় হানা দেয়। আলোচিত পলাশের স্ত্রীর গতিবিধিও নজরদারিতে রাখা হয়। নূরজাহানের সহকর্মী আরও ৩১ জন বিমানবালাকে পর্যায়ক্রমে জিজ্ঞাসাবাদের লক্ষ্যে আটক করা হতে পারে। জানা যায়, বিরাজমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় শনিবার জরুরী বোর্ড সভা ডাকা হয়। বলাকায় সংক্ষিপ্ত এই সভায় বিমান চেয়ারম্যান এয়ারমার্শাল জামাল উদ্দিন পলাশকে জড়িয়ে তাকে মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদের পূর্ণ ব্যাখ্যা দেন। এ সময় তিনি বেশ দৃঢ়তার সঙ্গেই বলেন, যে মুহূর্তে বিমান লাভের মুখ দেখছে, হজের মতো এত বিপুলসংখ্যক যাত্রী নিজস্ব উড়োজাহাজ দিয়ে বহন করে প্রায় দুই শ’ কোটি টাকার মতো লাভ করে নবদ্যোমে বিমান ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা উজ্জ্বলতর, ঠিক সে সময়ে কোথাকার পলাশ কি করেছে সেটার জন্য বিমানের সর্বনাশে কারা জড়িত সেগুলোও তদন্ত করা হবে। তিনি এ অশুভ শক্তির সঙ্গে বিমানের ভেতরের যদি কেউ জড়িত থাকে তাদের সতর্ক করেন।
×