ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সড়ক শৃঙ্খলায় রাজধানীতে চালু হচ্ছে মোবাইল কোর্ট ;###;ডিএমপির সচেতনতা সৃষ্টির কার্যক্রম

আইন লঙ্ঘন করে রাস্তা পেরোলেই ॥ জেল জরিমানা

প্রকাশিত: ০৫:০১, ২৩ নভেম্বর ২০১৪

আইন লঙ্ঘন করে রাস্তা পেরোলেই ॥ জেল জরিমানা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার না করে পথচারীদের ইচ্ছেমত পারপার ঠেকাতে আগামী মঙ্গলবার থেকে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান শুরু করছে। আইন অমান্যকারীদের বিধি মোতাবেক ৬ মাসের কারাদ- অথবা ২শ’ টাকা জরিমানা করা হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলে সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজট খানিকটা সহনীয় পর্যায়ে আসবে। পাশাপাশি মানুষের মধ্যে আইন মানার পাশাপাশি সচেতনতাও বাড়ার আশা প্রকাশ করেছেন ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদ। গত শনিবার থেকে আগামী সোমবার পর্যন্ত ঢাকা মহানগর পুলিশ প্রতিটি রাস্তার পাশে সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে মাইকিং করা। প্রতিটি রাস্তার মোড়ে, বাস স্টপেজে মাইক বসিয়ে যানবাহন চলাচল, পথচারীদের চলাফেরা, পারাপার সম্পর্কিত ঘোষণা দেয়ার কাজ করছে পুলিশ। মানুষকে দুর্ঘটনা এড়িয়ে ওভারব্রিজ ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এজন্য রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে বাড়তি পুলিশ কাজ করছে। ট্রাফিক আইন সম্পর্কে মাইকিং চলছে। যততত্র যানবাহন না থামানো এবং যাত্রী নামানো-উঠানো নিষেধ করা হচ্ছে। পুরো ঢাকাতেই চলছে এমন জনসচেতনতা। আগামী সোমবার রাত পর্যন্ত চলবে এমন মাইকিং। মাইকিং করার সময় আগামী মঙ্গলবার থেকে যত্রতত্র পারাপার, যাত্রী উঠানো নামানোসহ ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীদের শাস্তি দিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে নামছে বলেও সতর্কবাণী প্রচার করা হচ্ছে। শনিবার ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারে পুলিশের চলমান জনসচেতন-তামূলক কর্মকা- সম্পর্কে ডিএমপি কার্যালয়ে এক আনুষ্ঠানিক সাংবাদিক সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদ এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার রূপসী বাংলা হোটেলের সামনে থেকে ফার্মগেট পুলিশ বক্সের সামনের রাস্তা পর্যন্ত একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ শুরু করবে। ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার না করে রাস্তা পারাপার করলে ওই পথচারীকে ছয় মাস কারাদ- অথবা ২শ’ টাকা জরিমানা করার বিধান আছে। কমিশনারের অভিযোগ, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজারের ব্যস্ত সড়কে দেখা গেছে অসংখ্য মানুষ ফুটওভারব্রিজ ও আন্ডারপাস ব্যবহার না করে কেবল হাত উঁচু করে বাস থামিয়ে রাস্তা পার হন। এতে পারাপারকারীদের যেমন জীবনের ঝুঁকি রয়েছে, তেমনি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাতেও সমস্যার সৃষ্টি হয়। মূলত নগরবাসীকে সচেতন করতেই পুলিশ এই উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্যোগের ফলে ঢাকাবাসী সচেতন হবেন। আশা করছি, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার না হয়ে ফুটওভারব্রিজ ও আন্ডারপাস ব্যবহার করবেন পথচারীরা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মারুফ হাসান সরদার, মিলি বিশ্বাস, আবদুল জলিল, মিডিয়া বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমানসহ উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তারা। রাজধানীর যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা সংক্রান্ত বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সূত্র বলছে, যানজট নিরসনে সরকারের কাছে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বেশ কিছু পরিকল্পনা পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সুপারিশের কথা বলা হয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হলে যানজট আস্তে আস্তে কমে আসবে। বর্তমানে রাজধানীতে প্রায় আড়াই কোটি মানুষের বসবাস। মানুষের তুলনায় চলাচলের পর্যাপ্ত সড়ক নেই। আর সড়কের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা বেশি। তাই যানজট নিত্যদিনের সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব না হলে রাজধানী থেকে যানজট কমবে না। তবে ট্রাফিক আইন মেনে চললে সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজট কিছুটা কমে আসবে। নগরীতে ৪শ’ ইন্টারসেকশনে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন থাকার কথা। অথচ এর বিপরীতে মাত্র ৭০টি অটোমেটিক সিগন্যালিং সিস্টেম রয়েছে। এসব সিগন্যালিং পয়েন্ট প্রায়ই নষ্ট থাকে। ট্রাফিক আইন মেনে চলার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হলে সড়ক দুর্ঘটনা কমে আসবে।
×