ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

মুন্সীগঞ্জে সালিশে অপবাদ দেয়ায় গৃহবধূর আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২২ নভেম্বর ২০১৪

মুন্সীগঞ্জে সালিশে অপবাদ দেয়ায় গৃহবধূর আত্মহত্যা

স্টাফ রিপোর্টার,মুন্সীগঞ্জ ॥ লৌহজং উপজেলার কনকসার ইউনিয়নের পশ্চিম নাগেরহাট গ্রামে শালিস বৈঠকে গৃহবধূকে চাপ প্রয়োগ, কটূক্তি ও অপবাদের প্রতিবাদে সিমু আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে। দ্বিতীয় স্ত্রী হওয়ায় স্বামীর সংসারে দাসি হিসেবে থাকতে হবে এবং কোন সন্তানের জন্ম দেয়া যাবে না বন্ধ্যা হয়ে থাকতে হবে সত্ত্বেও জোর করে সাদা কাগজে টিপসই রাখায় শালিস বৈঠকে উপস্থিত শালিসকারীদের সামনে ঘরে ঢুকে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না জড়িয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন গৃহবধূ সিমু আক্তার। সিমুর চাচা ইদ্রিস সরদার জানান, তার ভাতিজি সিমুর এর আগে একটি বিয়ে হয়েছিল। তবে বিয়ের কয়েক দিনের মাথায় স্বামী হানিফের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এর কিছুদিন পরই একই এলাকার মৃত মজিদ খানের ছেলে মান্নানের সঙ্গে সুমির মন দেয়া নেয়া হলে সুমিকে নিয়ে সকলের অজান্তে পালিয়ে যায়। ঢাকায় গিয়ে বিয়ে করে সংসার পাতে। এরপর থেকেই প্রথম পক্ষের স্ত্রী আর আত্মীয় স্বজনরা সুমিকে ছাড়তে প্রতিনিয়ত চাপ প্রয়োগ করে আসছিল মান্নানকে। বার বার জায়গা পরিবর্তন করে দুই বছর সংসার করার পর গত দুই তিন মাস ধরে এলাকায় চলে আসে দুজন। প্রথম স্ত্রী ও তার ভাইদের পরামর্শে মান্নান এনজিও থেকে টাকা তোলার কথা বলে কাবিননামা ও আইডি কার্ড সই লাগবে বলে ভুলভাল বুঝিয়ে সুমির কাছ থেকে তালাকনামায় সই করিয়ে নেয় মান্নন। এর পর থেকে মান্নান বলে বেড়ায় তার সঙ্গে সুমির ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। এই নিয়ে বৃহস্পতিবার শালিস বসে মান্ননের বাড়িতে। শালিসে স্থানীয় মেম্বার নাদের, মহিলা মেম্বার রবেদা বেগম, মেম্বার তপন শরীফ, ও মুকবুল সহ আরো স্থানীয় বেশ কজন উপস্থিত ছিলেন। শালিসে রায় হয় সুমি মান্নানের ঘর করতে হলে তাকে মান্নানের বাড়ির দাসি-বাঁদি হয়ে থাকতে হবে এ ছাড়া সুমি কখনই মা হতে পারবে না। এছাড়া সুমি মান্নানের ঘর করতে পারবে না। এ সময় সুমি বলে বিচার যেহেতু পেলাম না আমার আর বেঁচে থেকে কি হবে। এই কথা বলে সুমি ঘরে ঢুকে আড়ার সঙ্গে ওড়না জড়িয়ে আত্মহত্যা করে । শালিস শেষ হওয়ার দশ মিনিটের মাথায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান সুমির চাচা ইদ্রিস সরদার।
×