ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শুকনো মৌসুমে যমুনায় ভাঙ্গন

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ১৯ নভেম্বর ২০১৪

শুকনো মৌসুমে যমুনায় ভাঙ্গন

বাবু ইসলাম, সিরাজগঞ্জ ॥ এক রাতেই প্রমত্তা যমুনার করালগ্রাসে বিলীন হয়ে গেল বাপ-দাদা চৌদ্দপুরুষের চিরচেনা শত বছরের পুরান বালিঘুগরিহাট। শুধু হাট নয়Ñ মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে প্রমত্তা যমুনা কেড়ে নিয়েছে গ্রামের নিত্যানন্দ, কমল হালদার, আব্দুস সাত্তারসহ প্রায় ২ শ’ পরিবারের বসতভিটা জমি-জিরাত। ভাঙ্গনের শব্দে বুকে কাঁপুনি ধরে। প্রতি পাঁচ মিনিটে বিকট শব্দে একটি করে মাটির চাপ ভেঙ্গে পড়ে যমুনা গর্ভে। এভাবেই বর্ণনা করলেন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার যমুনাপারের ভাঙ্গন কবলিত বালিঘুগরি গ্রামের হাসান আলী মাস্টার। পানি উন্নয়ন বিভাগ তাঁদের বাঁধ রক্ষায় বালিভর্তি জিও বস্তা ফেলা শুরু করলেও ভাঙ্গন কবলিত মানুষের সহায় সম্বল জমি জিরাত রক্ষায় কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না এমন অভিযোগও দৃঢ়তার সঙ্গে জানালেন তিনি। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নের বালিঘুগরিসহ আশপাশের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শুকনো মৌসুমে যমুনা নদীতে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভাঙ্গনের তীব্রতা এতই বেশি যে মানুষ তাদের আসবাবপত্র ঘর দ্রুত সরিয়ে নেয়ারও সুযোগ পাচ্ছে না। চোখের সামনেই সবকিছু যমুনা গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। মাত্র এক বছর আগে নদীর আড়াই কিলোমিটার দূর দিয়ে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা খরচ করে বিকল্প বাঁধ তৈরী করেছিল সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বিভাগ। কিন্তু সেই বঁধাই এখন ভাঙ্গনের মুখে বিপন্ন। ভাঙনের কারণ হিসেবে এলাকার মানুষ মনে করে, বালিঘুগরি গ্রামের ঠিক সামনে যমুনায় জেগে ওঠা চরে স্রোত বাধা পেয়ে ধেয়ে আসছে। সৃষ্টি হয়েছে প্রচ- ঘূর্ণিপাক। এর ফলে ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এই চর অপসারণ করা না গেলে বালিঘুগরি গ্রাম হারিয়ে যাবে যমুনা গর্ভে। গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হাসান আলী, টুটুল ও ছোনগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল আলম গ্রামের ভাঙ্গনে বিপন্ন মানুষের নানা দুঃখ-দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে বললেন, এখনই এলাকা বাঁচাতে দ্রুত ডেজিং করে চর অপসারণ করতে হবে। নতুবা ভাঙ্গনরোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে। পানি উন্নয়ন বিভাগ বলেছে ড্রেজিং ব্যয় বহুল একটি প্রকল্প। তবে ভাঙ্গনরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইতোমধ্যেই প্রকল্প হাতে নেয়া হযেছে। জরুরীভিত্তিতে ভাঙ্গনরোধে বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে।
×